তিউনিস: ঘুমিয়ে থাকা আরব জনগণকে জাগিয়ে তোলার নায়ক তিউনিসিয়ার বুআজিজি গোটা বিশ্বের সন্তান। তার মা মানুবিয়া এ মন্তব্য করেছেন।
স্নাতক পাস করে মোহামেদ বুআজিজি (২৬) কোনো চাকরি না পেয়ে স্থানীয় বাজারে সবজি বিক্রি করতেন। কিন্তু এতে সরকার বাধা দেয়। তার সবজি বিক্রির বন্ধ করে দেয়। এর প্রতিবাদে বুআজিজি গায়ে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যা করেন। তিউনিসিয়ার ৩০ শতাংশ বেকার তরুণের মধ্যে বুআজিজি একজন। বুআজিজির এই গায়ে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যা তিউনিসিয়ার জনগণের মধ্যে বিক্ষোভের স্ফূলিঙ্গ হিসেবে কাজ করে।
তিউনিসিয়ার জনগণ দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতা আঁকড়ে প্রেসিডেন্ট জাইন আল-আবেদি বেন আলির পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। আন্দোলনের মুখে গত ১৭ ডিসেম্বর ২৩ বছরের ক্ষমতা ছেড়ে সৌদি আরবে আশ্রয় নেন বেন আলি।
এদিকে, বুআজিজির মা মানুবিয়া সন্তান হারানোর জন্য মোটেও ভারাক্রান্ত বা কাতর নন। তার ছেলে যে বিপ্লবের অগ্নিশিখা ছড়িয়ে দিয়েছেন আরব বিশ্বে তাতে তিনি খুবই সন্তুষ্ট। কারণ বেন আলির এই ক্ষমতা ছাড়ার পরপরই বিক্ষোভের মুখে ক্ষমতা ছাড়েন দীর্ঘ তিন দশকরও বেশি সময় ক্ষমতায় থাকা মিশরের প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারক।
মানুবিয়া তিউনিসিয়ায় তার নিজের বাড়ি পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর সিদি বৌজিদ থেকে ব্রিটেনের সান পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমি খুবই গর্ববোধ করি। নিজেকে এখন পুরো আরব বিশ্বের মা মনে হয়। বুআজিজি একটা মোমবাতি যে আমাদের পুরো জাতিকে এবং সারাবিশ্বকে আলোকিত করেছে। সে শুধু আমার নয়, গোটা বিশ্বের সন্তান। ’
বুআজিজির দেওয়া বিপ্লবের আগুন এখন লিবিয়া, ইরাক, ইরান, আলজেরিয়া, ওমান, বাহরাইন, মরক্কো, ইয়েমেনসহ পুরো আরব বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। এমনকি রক্ষণশীল সৌদি আরবেও ছড়িয়ে পড়েছে এর লেলিহান শিখা।
বাংলদেশ সময়: ১৪৩৯ ঘণ্টা, মার্চ ৫, ২০১১