ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

লিবিয়ায় মাকিন ব্রিটিশ ও ফরাসি বিমান হামলা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০৮ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০১১
লিবিয়ায় মাকিন ব্রিটিশ ও ফরাসি বিমান হামলা

ত্রিপোলি: লিবিয়ায় গাদ্দাফি সরকারের পতনের উদ্দেশ্যে গাদ্দাফিবিরোধী মিত্ররা একাট্টা হয়ে লিবিয়ায় শনিবার রাতে বিমান ও মিসাইল হামলা শুরু করেছে। ফরাসি বিমান হামলার পর লিবিয়ায় মার্কিন ও বৃটিশ রণতরী ও সাবমেরিন থেকে ক্রুজ মিসাইল হামলা চালানো হয়েছে।

মার্কিন টমাহক মিসাইল ত্রিপোলির পশ্চিমে এবং মিসরটায় আক্রমণ চালিয়েছে বলে একজন সিনিয়র প্রতিরক্ষা বিভাগের কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

১১০টির বেশি টমাহক মিসাইল মার্কিন ও ব্রিটিশ রণতরী ও সাব মেরিন থেকে লিবিয়ার অন্তত ২০টি সামরিক স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস অ্যাডমিরাল উইলিয়াম গর্টনে পেন্টাগনে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান।

এর আগে ফরাসি বিমান বাহিনীর বিমান লিবিয়ায় জাতিসংঘ ঘোষিত উড্ডয়ন নিষিদ্ধ এলাকায় হামলা চালিয়েছে বলে ফরাসি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। লিবিয়ার সামরিক যানকে ফরাসিরা হামলার লক্ষ্যবস্তু করে।  

বাংলাদেশ সময় রাত পৌনে এগারটা নাগাদ প্রথমবারের মতো ফরাসি বিমান বাহিনী লিবিয়ায় হামলা চালায় বলে বিবিসি জানায়। ওই হামলায় ফ্রান্সের প্রায় ২০টি বিমানের একটি বহর অংশ নেয়।

ফরাসি বিমান আক্রমণের পর লিবিয়া সরকারের একজন মুখপাত্র সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘এ হামলায় ত্রিপোলি ও মিসরটার সাধারণ মানুষেরই ক্ষতি হচ্ছে। ’  

ফরাসী প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, বেনগাজি ও এর আশেপাশে অঞ্চলে বিমান বাহিনী লিবিয়ার ট্যাঙ্ক এবং আর্টিলারি লক্ষ্য রেখে আক্রমণ চালাচ্ছে। ফ্রান্স তাদের নাগরিকদের রক্ষার জন্য বিমান বাহিনীর পর্যবেক্ষণে রেখেছে । ’

বিমান বহনকারী শ্যালে দ্য গল শিগগির ত্যুলোর উদ্দেশ্যে পাঠানো হচ্ছে বলেও জানায় ফরাসি কর্তৃপক্ষ।

আরব ও পশ্চিমা বিশ্বের বেশ কিছু দেশ লিবিয়ায় সামরিক অভিযানের ব্যাপারে প্যারিসে এক বৈঠকে মুয়াম্মার গাদ্দাফির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্তের কয়েক ঘণ্টা পরই এ হামলা শুরু হয়।

বিরোধী মিত্রদের যৌথ হামলার কিছুক্ষণ পর লিবিয়ার প্রেসিডেন্ট মুয়াম্মার গাদ্দাফি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘লিবিয়ার ঐক্য, সার্বভৌমত্ব ও শক্তিমত্তাকে রক্ষা করতে তিনি অস্ত্রাগার খুলে দেবেন। ’

তিনি বলেন, ‘এই হামলা লিবিয়ার জনগণকে আরও শক্তিশালী ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ করেছে। ’

যৌথবাহিনীর এই হামলাকে গাদ্দাফি ‘ঔপোনেবেশিক ক্রুসেডার’ হিসেবেও অভিহিত করে একে প্রতিহত করার ঘোষণা দেন।

গাদ্দাফি আরও বলেন, ‘ভূমধ্যসাগরীয় এলাকা যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। ’  

মার্কিন মিসাইল হামলার কিছুক্ষণ পর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তার দেশের জনগণকে ‘বৃহৎ কোয়ালিশন’ এর কথা জানান।

এই মুহূর্তে ওবামা ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়া সফরে রয়েছেন। সেখান থেকে তিনি বলেন, ‘শক্তি প্রয়োগ আমাদের প্রথম পছন্দ নয়। এটি এমন কোনও পছন্দের নয় যে, আমি সহজে করেছি। ’

‘কিন্তু আমরা অলস বসে থাকতে পারিনি যখন একজন একনায়ক নিজেই বলেছেন, তার নিজের মানুষদেরও কোনও ক্ষমা করা হবে না’, ওবামা বলেন।

বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরুন শনিবার রাতে সংবাদ মাধ্যমকে জানান, ব্রিটিশ বিমান বাহিনী লিবিয়া উপর দিয়ে চক্কর দিচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘উদ্ভুত পরিস্থিতির প্রয়োজনের জন্য আমরা যা কিছুই করছি, তা বৈধ এবং সঠিক। ’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি আমাদের আর তাকিয়ে থাকা উচিত নয়, যেখানে এই স্বৈরশাসক তার নিজ দেশের নাগরিকদের হত্যা করছে। ’

এদিকে ফরাসি প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজি শনিবার এক ভাষণে বলেন, ‘আমাদের বিমান বাহিনী যেকোনো ধরনের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে। ’

কানাডার প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন হার্পার বলেছেন, ‘উড্ডয়ন নিষিদ্ধ এলাকায় নৌ বাহিনীর মাধ্যমে অবরোধ গড়ে তোলা হয়েছে। ’  

গাদ্দাফি বিরোধী মিত্ররা বলছে, গাদ্দাফি জাতিসংঘের সমাধানের পথকে রুদ্ধ করেছে এবং সাধারণ নাগরিকদের হত্যার বন্ধের আহ্বানকে প্রত্যাখান করেছে।

‘সে সম্পূর্ণভাবে অপরাধী’, আমেরিকার ওই সিনিয়র প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা গাদ্দাফীকে উদ্দেশ্য করে বলেন।
তিনি আরো বলেন, ‘সে (গাদ্দাফী) বলেছেন তিনি যুদ্ধ বন্ধ করতে যাচ্ছেন, কিন্তু অন্যদিকে তার সৈন্য বাহিনীকে বেনগাজির দিকে পাঠিয়ে দিচ্ছে। ’

বাংলাদেশ সময়: ০৩১৫ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।