হামবুর্গ: মাঝে বিভিন্ন কাজে এমনই ব্যস্ত হয়ে গেলাম যে, লেখালেখিটা আর নিয়মিত চালু রাখতে পারলাম না। আজ লিইপজিগ তো কাল মাইনজ, ছোটাছুটি লেগেই আছে।
আজ ভাগ্যক্রমেই ঠিক ৫টায় সব কাজ শেষ হয়ে গেল। রুমে ফিরেই ভাবলাম একটা ঘুম দিই, আবার সেই দায়িত্ববোধ মাথাচাড়া দিয়ে উঠল। কী আর করা, ঘুম ঘুম চোখেই লিখতে বসে গেলাম।
বুধবার বিকেল পর্যন্ত ছিলাম ফ্রাঙ্কফুর্টে। দুপুরের খাবার শেষ করে বসেছি কেবল, কম্বোডিয়ান সাংবাদিক কইনিলা কেও এসে প্রায় জোর করে টানতে টানতে একটা ভবনের দিকে নিয়ে গেল। প্রথমে কিছুই বুঝলাম না, পরে ভেতরে গিয়ে দেখি এটাই সেই বিখ্যাত সেন্ট পল চার্চ, জার্মানির গণতন্ত্র, স্বাধীনতা আর জাতীয় ঐক্যের প্রতীক।
এখানেই ২৮ মার্চ, ১৮৪৯ সালে, প্রথম জাতীয় সংসদ অধিবেশনে জার্মান সাম্রাজ্যের সংবিধান অনুমোদন পেয়েছিল। যদিও পরে তা সর্বসাধারণের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি মোটেও। তারপরও এই সংবিধান পরবর্তী সময়ে ফেডারেল রিপাবলিক অব জার্মানির সংবিধানকে অনেকটাই প্রভাবিত করতে সক্ষম হয়।
এটিই ফ্রাঙ্কফুর্টের প্রধান লুথেরান চার্চ। ১৭৮৯ সালে এর নির্মাণকাজ শুরু হলেও বিভিন্ন জটিলতা এবং বিঘেœর পর ১৮৩৩ এর জুনের ৯ তারিখে অবশেষে এটি একটি উপাসনাগৃহ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়। নির্মাণশৈলির দিক দিয়ে এটি একটি শাস্ত্রীয় ধাঁচের ভবন। ভবনটির স্থপতি জন ফ্রেডরিক ক্রিশ্চিয়ান হেস।
কিন্তু আর কোনো গ্রহণযোগ্য স্থান না থাকায় ১৯৪৮ সালে এই উপাসনালয়টিকেই বেছে নেওয়া হয় জার্মানির প্রথম নির্বাচিত সংসদের অধিবেশন স্থান হিসেবে। পরে ১৮৫২ সালের ২৪ অক্টোবর আবার ভবনটি উপাসনালয় হিসেবে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
১৯৪৪ সালের ১২ মার্চ এখানে শেষবারের মত অনুষ্ঠিত হয় রোববারের প্রার্থনা। বিশ্বযুদ্ধ চলার সময় ১৮ এবং ২২ মার্চ, ১৯৪৪ এ যখন ফ্রাঙ্কফুর্টে যখন বিমান হামলা হয়, এই গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাটি প্রায় পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়। যুদ্ধের পরে ১৯৪৮ এর ১৮ মে পুনঃস্থাপনের পরে এটি আবার নতুন করে সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হল। কিন্তু উপাসনালয় হিসেবে নয়, রাজনৈতিক স্মৃতিস্তম্ভ হিসেবে।
এখন এটি ব্যবহৃত হচ্ছে বিশেষ কিছু রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান এবং গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার বিতরণের স্থান হিসেবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫০ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০১১