ঢাকা: ‘সম্মান রক্ষার’ নামে হত্যা (অনার কিলিং) শুধুমাত্র পাকিস্তানে নয়, ভারতেও হচ্ছে। সম্প্রতি ভিন্ন সম্প্রদায়ের ছেলেকে বিয়ে করার অপরাধে বাবা-মার হাতে প্রাণ দিতে হয়েছে দিল্লিতে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক ছাত্রীকে।
এ ঘটনায় মেয়েটির বাবা-মাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ভিন্ন সম্প্রদায়ের ছেলেকে বিয়ের জন্য এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন মেয়েটির বাবা। নৃশংস এ ঘটনায় পুরো দিল্লি শোকে স্তব্ধ।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়, নিহত তরুণীর নাম ভাবনা (২১)। সে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিখ্যাত শ্রীভেঙ্কটেশ্বর কলেজে সংস্কৃতের ছাত্রী ছিল। গত ১২ নভেম্বর প্রোগামার অভিষেক সেথকে (২৪) সে বিয়ে করে। ভাবনা রাজস্থানের যাদব সম্প্রদায়ের এবং অভিষেক পাঞ্জাবি সম্প্রদায় থেকে আগত। পরিবারের কেউ মেনে নেবে না জেনে আরিয়া সমাজ মন্দিরে বিয়ে করেন দুজন। বিয়ের পরে দুজনে সংসার শুরু করেন।
স্থানীয় পুলিশ বলছে, মেয়েটির বাবা-মা তাকে মিথ্যা কথা বলে বাড়িতে ডেকে আনে। বিয়ে করে সে যে ভুল করেছে তা ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে এমন মিথ্যা আশ্বাসে তাকে ফিরিয়ে আনা হয়। ভালোভাবে ধুমধাম করে বিয়ের অনুষ্ঠান করে তাদের গ্রহণ করা হবে এমন কথাও বলা হয়। কিন্তু বাড়িতে গেলে তার ওপর নেমে আসে নির্যাতনের খড়গ। এক পর্যায়ে চাচার সহায়তায় ভাবনাকে গলাটিকে হত্যা করেন তার বাবা-মা।
অভিষেক সাংবাদিকদের জানান, এমনটি হবে জানতে পারলেও কখনোই ভাবনাকে তার বাবার বাড়িতে পাঠাতাম না। বাবা-মার হাতে সন্তান নিহত হবে এমনটি আমি কল্পনাও করতে পারিনি।
এ ঘটনায় অভিষেক নিজের নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কিত বলে সাংবাদিকদের জানান।
তবে সম্মান রক্ষার নামে হত্যাকাণ্ড ভারতে এবারই প্রথম নয়। এর আগে ২০০২ সালে নিতিশ কাতারাকে, ২০১০ সালে আশা, নিরুপমাকে ও কুলদ্বীপ-মনিকাকে ও ২০১২ সালে দিপ্তি চিকারাকে হত্যা করা হয়।
সম্মান রক্ষার নামে হত্যা ভারতে তেমন না ঘটলেও পাকিস্তানে এটি প্রকট। সম্প্রতি পাকিস্তানের দ্য আওরাত ফাউন্ডেশন জানায়, ২০০৮ সাল থেকে পরিবারের সম্মান রক্ষার অজুহাতে দেশটিতে তিন হাজারেরও বেশি নারীকে হত্যা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৪