ওসাকা: জাপানের ভূমিকম্প বিধ্বস্ত পরমাণু কেন্দ্রের নিকটবর্তী সাগরের তেজস্ক্রিয়ার মাত্রা এর সর্বোচ্চ সীমা ছাড়িয়ে গেছে। কর্মকর্তারা বুধবার এ তথ্য জানিয়েছেন।
ফুকুশিমার দাইচি পরমাণু কেন্দ্রের পাশ্ববর্তী সাগরে তেজস্ক্রিয় আয়োডিন-১৩১ এর মাত্রা তিন হাজার ৩৫৫ গুণ বেশি বলে পরমাণু কেন্দ্রের পরিচালক টোকিও ইলেকট্রিক পাওয়ার কোম্পানির (টিইটিসিও) মুখপাত্র জানান।
মঙ্গলবারের এক পরীক্ষার পর তেজস্ক্রিয়তার মাত্রার এ নতুন স্তর সম্পর্কে জানা যায়। তবে হঠাৎ এ মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত নন বলে কর্মকর্তারা জানান।
পরমাণু নিরাপত্তা সংস্থার মুখপাত্র হাইদেহিকো নিশিইয়ামা বলেন, ‘এ মাত্রা ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। যত দ্রুত সম্ভব আমাদের এর কারণ অনুসন্ধান করে এর বেড়ে যাওয়া ঠেকাতে হবে। ’
তবে সমুদ্রের ঢেউয়ের পরিবর্তনের কারণে এখনই তা স্বাস্থ্যের জন্য হুমকী নয়। এছাড়া আয়োডিনের মাত্রাও তুলনামূলক দ্রুততার সঙ্গে কমছে বলেও কর্মকর্তারা জানান।
এর আগে শনিবার আয়োডিন- ১৩১ এর মাত্রা এক হাজার ২৫০ গুণ ও রোববার এক হাজার ৮৫০ গুণ বেশি বলে প্রকাশ করা হয়।
জাপান সরকার এরইমধ্যে কেন্দ্রের ২০ কিলোমিটারের মধ্য থেকে হাজার হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে নিয়েছে। একইসঙ্গে সম্প্রতি এমনকি ৩০ কিলোমিটারের মধ্যে থাকা বাসিন্দাদেরও সরে যাওয়ার জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে।
এদিকে ফুকুশিমা দাইচি কেন্দ্রের পরিচালক টোকিও ইলেকট্রিক পাওয়ার কোম্পানির প্রেসিডেন্টকে মঙ্গলবার বিকালে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা যায়।
টিইপিসিওর প্রেসিডেন্ট মাসাতাকা শিমিজু অসুস্থ বোধ করায় গত রাতে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে কোম্পানির এক মুখপাত্র জানান। তবে তিনি বিস্তারিত আর কিছু জানাননি।
উচ্চ রক্ত চাপ ও অসুস্থতায় আক্রান্ত প্রেসিডেন্ট শিমিজুর (৬৬) বুধবার একটি সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হওয়ার কথা ছিলো বলে জাপানের সরকারি সম্প্রচার মাধ্যম এনএইচকে জানায়।
গত ১১ মার্চ জাপানে সংঘটিত ৯ মাত্রার ভূসিকম্প এবং সুনামির আঘাতে দেশটির ফুকুশিমা পরমাণু কেন্দ্রের ছয়টি চুল্লীর শীতলীকরণ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ে। এ সময় চুল্লীগুলোতে সংঘটিত বিস্ফোরণ ও আগুনে তেজস্ক্রিয়া ছড়িয়ে পড়ে।
একইসঙ্গে এটি এরইমধ্যে বিধ্বস্ত দেশটিতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের মাত্রা আরও বৃদ্ধি করবে বলে সারা বিশ্বে উদ্বেগ দেখা দেয়।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১১