টোকিও: উচ্চমাত্রার তেজষ্ক্রিয় পদার্থমিশ্রিত পানি সমুদ্রে ছড়িয়ে পড়া রোধে ফুকুশিমা বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকৌশলীরা এবার রাসায়নিক পদার্থ, কাঠের গুড়া ও দৈনিক পত্রিকার ছেঁড়া কাগজের ওপর আস্থা রেখেছেন।
বিদ্যুৎকেন্দ্রের যে নালী দিয়ে চুল্লির পানি সমুদ্রের পানিতে মিশছে সেই নালীটি বন্ধের উদ্যোগ হিসেবে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
গত রোববার জাপান সরকার জানায়, গত ১১ মার্চ ভয়াবহ ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্ট সুনামির ঘটনার পর ফুকুশিমা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে তেজষ্ক্রিয় পদার্থ ছড়াচ্ছে। উত্তর-পূর্ব উককূলে ওই সুনামিতে এ পর্যন্ত ২৫ হাজার মানুষ মারা গেছে। নিখোঁজ রয়েছে আরও বহু।
জাপানের পরমাণু নিরাপত্তা সংস্থার মুখপাত্র গিদেহিকো নিশিয়ামা বলেন, ‘রাত (রোববার) কর্মীরা পলিমান গুড়া, কাঠের গুড়া ও কাগজের টুকরো ভরতে শুরু করেছে। চুল্লির ফুটো বন্ধ করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ’ এর আগে সুনামিতে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির কয়েকটি চুল্লির শীতলীকরণ ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যায়। শীতলীকরণ ব্যবস্থার স্থায়ী সমাধান ও এবং তেজষ্ক্রিয় পদার্থের ছড়িয়ে পড়া বন্ধ করতে আরও কয়েক মাস লাগবে বলে সরকার জানায়। কিয়োদো নিউজে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।
ছিদ্র দিয়ে তেজষ্ক্রিয় পানি ছড়িয়ে পড়ার হার কমে গেছে এমন কোনো আভাসও পাওয়া যায়নি বলেও তিনি জানান।
দুই নম্বর চুল্লির কাছে ছিদ্র পেয়েছে কর্মকর্তারা, এর ভেতর দিয়ে তেজষ্ক্রিয় পানি সমুদ্রে মিশে যাচ্ছিল। এর আগে ছিদ্রটি কংক্রিট দিয়ে বন্ধ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে। দূষিত সমুদ্রের পানিতে তেজষ্ক্রিয়তার পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে চার হাজার গুণ বেশি। বিজ্ঞানীরা এর প্রমাণ পেয়েছেন।
পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রটির চারপাশের ২০ বর্গকিলোমিটারের মধ্যে বসবাসরত লোকজনতে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, টোকিও ইলেকট্রিক পাওয়ার কোম্পানির (টেপকো) একজন মুখপাত্র সোমবার বলেন, ‘সাড়ে ১১ হাজার টন তেজষ্ক্রিয় পানি সমুদ্রে ছেড়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে জাপান।
তিনি বলেন, ফুকুশিমার দুই নম্বর চুল্লিতে উচ্চমাত্রার তেজষ্ক্রিয় পানি জমেছে। এ পানিকে স্থান দিতে অতিরিক্ত পানি আমাদের সমুদ্রে ছেড়ে দিতে হবে।
সরকারের মুখপাত্র ইউকিয়ো এদানো বলেন, ‘এটা করা ছাড়া আমাদের আর কোনো বিকল্প নেই। নিরাপত্তার জন্যই এ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০১১