কুয়ালালামপুর: মালয়েশিয়ার বন্দিশিবিরের জঘন্য জীবনে অতিষ্ঠ হয়ে পালিয়ে যাওয়া ৫৮ জন অবৈধ অভিবাসীকে আটক করেছে সে দেশের পুলিশ। এদের মধ্যে বাংলাদেশী নাগরিক রয়েছে।
বুধবার মালয়েশিয়ার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ খবর জানিয়েছেন। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে ঠিক কতজন বাংলাদেশী রয়েছেন তা তিনি জানাননি।
সোমবার রাজধানী কুয়ালালামপুরের দক্ষিণে নেহারি সেমবিলান রাজ্যে ল্যাংগেং অভিবাসী কেন্দ্র (বন্দিশিবির) থেকে ১০৯ জন অবৈধ অনুপ্রবেশকারী পালিয়ে গেলে মঙ্গলবার ব্যাপক তল্লাশি অভিযান চালায় পুলিশ।
এর আগে সোমবার রাতে পালিয়ে যাওয়া অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে বেশিরভাগই বাংলাদেশ, মিয়ানমার, নেপাল, ইরান, থাইল্যান্ড এবং নাইজেরিয়ার নাগরিক। এরা পালিয়ে যাওয়ার আগে একটি ব্লকে আগুন ধরিয়ে দেয়।
দুই শতাধিক অধিক পুলিশ, অভিবাসী কর্মকর্তা এবং আধাসামরিক বাহিনী এর পর থেকেই রাজ্যজুড়ে চিরুনি অভিযান শুরু করেছে।
জেলা পুলিশ প্রধান সাইফুল আজলি এএফটিকে জানান, পার্শ্ববর্তী জঙ্গল থেকে ৫৪ জনকে আটক করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। আমি বাকিদের আত্মসমর্পণ করার আহ্বান জানাচ্ছি। ’
রাজ্য পুলিশ উপপ্রধান আব্দুল মান্নান হাসানের উদ্ধৃতি দিয়ে সরকারি বার্তা সংস্থা বারনামা জানিয়েছে, তদন্তে জানা গেছে, আশ্রয় কেন্দ্রের জঘন্য জীবনমান, বাজে খাবার এবং দীর্ঘ বন্দিত্ব জীবনে তারা অতিষ্ঠ।
তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার অধীনে তৃতীয় কোনো দেশে এদের পুনর্বাসনের প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রিতার কারণে অনেকেই ধৈর্য হারিয়ে ফেলেছেন। ’
গত বছরের আগস্টে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী ও পাচার হওয়া লোকদের আশ্রয় শিবিরের করুণ অবস্থা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা তা স্বীকার করে।
কিন্তু তার পরে এর উন্নয়নে তেমন কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয় নি।
উল্লেখ্য, এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে মালয়েশিয়াতে ১৮ লাখ বিদেশি শ্রমিক বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত রয়েছে।
এছাড়া এ দেশটি মানবপাচারকারী চক্রের একটি অন্যতম রুট বলে মনে করা হয়। এদিক হয়ে আফগানিস্তান ও মিয়ানমার থেকে পাচার হওয়া লোকদের ইন্দোনেশিয়া ও অস্ট্রেলিয়াতে পাঠানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০১১