ঢাকা: সাধারণত দেখা যায় নানা অজুহাতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে ব্যতিক্রমধর্মী পদক্ষেপে এবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে বসলো ভেনিজুয়েলা।
শনিবার রাজধানী কারাকাসে সমর্থককদের উদ্দেশ্যে বক্তৃতা দেয়ার সময় যুক্তরাষ্ট্রের ওপর এসব বিধিনিষেধ আরোপের কথা ঘোষণা করেন ভেনিজুয়েলার বামপন্থি প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরো।
তিনি বলেন, যে সমস্ত মার্কিন রাজনীতিক সিরিয়া, ইরাক ও আফগানিস্তানে বোমা বর্ষণের মাধ্যমে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছেন তারা ভেনিজুয়েলায় প্রবেশ করতে পারবেন না কারণ তারা সন্ত্রাসী।
মাদুরো এ সময় সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ, ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনি, স্পেনীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন রাজনীতিক বব মেনেন্দেজ, ইলেনা রস লেটিনেন এবং মার্কো রুবিওর নাম এ সময় উল্লেখ করেন তিনি।
শনিবার মাদুরো অনেকটা খোলাখুলিই জানিয়ে দেন তার মূল উদ্দেশ্য, ভেনিজুয়েলার অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে মার্কিন খবরদারি হ্রাস।
ভেনিজুয়েলায় মার্কিন কূটনীতিকদের সংখ্যা হ্রাস এবং ভেনিজুয়েলায় প্রবেশের ক্ষেত্রে মার্কিন পর্যটকদের ভিসা প্রদানের ওপর কড়াকড়ি আরোপের কথা এ সময় ঘোষণা করেন মাদুরো।
কারাকাসের মিরাফ্লোরস প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের সামনে জড়ো হওয়া সমর্থকদের উদ্দেশ্যে মাদুরো বলেন, কারাকাসে বর্তমানে একশ’ জন মার্কিন কূটনীতিক অবস্থান করছেন অপরদিকে ওয়াশিংটনে ভেনিজুয়েলার তরফে রয়েছে মাত্র ১৭ জন।
পশ্চিমাঞ্চলীয় তাচিরা রাজ্যে সম্প্রতি লাতিন বংশোদ্ভূত এক মার্কিন পাইলটকে আটক করে ভেনিজুয়েলার আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। তার বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ এনেছে ভেনিজুয়েলার কর্তৃপক্ষ। এই গ্রেফতারের ঘটনার প্রেক্ষিতে এ বিধিনিষেধ আরোপের ঘোষণা দিলো ভেনিজুয়েলার কর্তৃপক্ষ।
রাজনৈতিক সঙ্কটের পাশাপাশি তেলের দাম কমে যাওয়ায় বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ তেল রপ্তানিকারক দেশ ভেনিজুয়েলায় সৃষ্টি হয়েছে অর্থনৈতিক সঙ্কটও।
এ পরিস্থিতিতে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রে মদদ দেয়ার পাশাপাশি ভেনিজুয়েলায় অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে অভিযুক্ত করে আসছেন হুগো শ্যাভেজের ঘনিষ্ঠ সহযোগী নিকোলা মাদুরো।
সমর্থককদের সামনে মাদুরো বলেন, আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি ভেনিজুয়েলায় প্রবেশ করতে প্রত্যেক মার্কিনীকে বাধ্যতামূলকভাবে ভিসা নিতে হবে। এছাড়া ভেনিজুয়েলায় প্রবেশের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সময় ভেনিজুয়েলার নাগরিকদের ওপর ধার্যকৃত ভিসা ফি প্রদান করতে হবে মার্কিন নাগরিকদের।
১৯৯৯ সালে পূর্বসুরী হুগো শ্যাভেজের ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপড়েন শুরু হয়। যুক্তরাষ্ট্রকে সাম্রাজ্যবাদী ঘোষণা করে লাতিন আমেরিকায় মার্কিন খবরদারি রুখতে সংগ্রামের ঘোষণা দেন তিনি। সেই ধারাবাহিকতা বজায় আছে শ্যাভেজর উত্তরসূরী মাদুরোর আমলেও।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০১৫