ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

বিরল ৫ ছবি

রাজিউল হাসান, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০১৫
বিরল ৫ ছবি ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা: ধাবমান সময়ের মুহূর্তগুলোকে ধরে রাখতে চিত্রধারণে বেশ আগে থেকেই মানুষের ঝোঁক থাকলেও ১৮১৪ সালে জোসেফ নাইসফোর নিপস নামের একজন জার্মান বিজ্ঞানী তার উদ্ভাবনী যন্ত্রের সাহায্যে প্রথমবারের মতো চিত্রধারণে সক্ষম হন। যদিও ক্যামেরার ধারণা প্রথম আসে ইরাকি বিজ্ঞানী ইবন-আল-হাইতামের ১০২১ সালে লেখা সাতখণ্ডের আলোকবিজ্ঞানের ওপর একটি বই থেকে।

এরপর বিভিন্ন সময় চেষ্টা চললেও সফলভাবে জার্মানবিজ্ঞানী নিপসই প্রথম ছবি তোলেন।

পরবর্তী সময়ে ফ্রান্সের চার্লস এবং ভিনসেন্ট ক্যাভেলিয়ার এর উন্নতি সাধন করেন। তবে ক্যামেরা আবিষ্কারের প্যাটেন্ট যায় যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানী আলেক্সান্ডার ওয়ালকটের ঝুলিতে। কারণ তিনিই আগের ধারণাগুলোকে আরও পরিমার্জন ও পরিবর্ধন করে প্রথম আধুনিক ক্যামেরা তৈরি করেন। ১৮৪০ সালে তার ডিজাইন সম্বলিত ক্যামরার প্যাটেন্ট হওয়ার পরই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে মুহূর্ত ধরে রাখার ক্ষমতাসম্পন্ন এই যন্ত্রটি।

ক্যামেরা জনপ্রিয় হয়ে ওঠার পর থেকেই মানুষ জীবনের সুখ-দুঃখের মুহূর্তগুলোকে ফ্রেমে বন্দি করতে শুরু করে। একটা পর্যায়ে ছবি তোলার বিষয়টি এমন জায়গায় গিয়ে দাঁড়ায় যে, মানুষ একে জীবিকা ধারণের মাধ্যম হিসেবে বেছে নিতেও শুরু করে। সাংবাদিকতার প্রধান একটি অঙ্গে পরিণত হয় ফটোসাংবাদিকতা। ফলে মানুষের সামনে চলে আসতে থাকে সেই সব দৃশ্য, যা তার পক্ষে দেখা সম্ভব ছিল না আগে। প্রতিমুহূর্তে বিশ্বজুড়ে হাজার-লক্ষ ক্লিকের মধ্যে কিছু ছবি হয়ে ওঠে কালের সাক্ষী। এমনই পাঁচটি বিরল ছবি নিয়ে এবারের আয়োজন।


গোল্ডেন গেট ব্রিজ নির্মাণ

সানফ্রান্সিসকো উপসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরের সংযোগকারী গোল্ডেন গেট প্রণালীর উপর অবস্থিত প্রায় তিন কিলোমিটার লম্বা এই ঝুলন্ত ব্রিজটি বিশ্বব্যাপী পরিচিত। ব্রিজটি হলিউড চলচ্চিত্রপ্রেমী সবারই চেনা। দশ কোটি ডলার (২০০৯ সালের হিসাবে দুইশ’ ১২ কোটি ডলার) ব্যয় ধরে ১৯৩৩ সালের ৫ জানুয়ারি ব্রিজটি নির্মাণের কাজ শুরু হয়। সম্পূর্ণ ইস্পাতে নির্মিত গোল্ডেন গেট ব্রিজের নির্মাণ কাজ শেষ হয় ১৯৩৭ সালের ১৯ এপ্রিল। একই বছর ২৭ মে জনসাধারণের জন্য তা উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। সংযুক্ত ছবিটি এই ব্রিজ নির্মাণকালেরই কোনো এক সময় তোলা।


এমজিএম মাসকট

পঞ্চশের দশকে নির্মিত টম অ্যান্ড জেরি কার্টুন এখনও সমান জনপ্রিয়। এই কার্টুনের শেষে গর্জনরত সিংহের আরও দেখা মেলে মেট্রো-গোল্ডউইন-মায়ের স্টুডিওর সকল চলচ্চিত্রে। হলিউড চলচ্চিত্র নির্মাতা এই প্রতিষ্ঠানটির মাসকট হল ‘লিও দ্য লায়ন’। ১৯১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় গোল্ডউইন পিকচার্স। এর পরবর্তী বছর থেকেই ‘লিও দ্য লায়ন’ মাসকট ব্যবহার করে আসছে স্টুডিওটি। পরবর্তী সময়ে ১৯২৪ সালে যখন মেট্রো পিকচার্স, গোল্ডউইন পিকচার্স ও লুইস বি. মায়ের পিকচার্স একীভূত হয়, তখন থেকে প্রতিষ্ঠানটি মেট্রো-গোল্ডউইন-মায়ের পিকচার্স নামধারণ করে। আর সেসময় থেকে ‘লিও দ্য লায়ন’কে নতুন এই প্রতিষ্ঠানের মাসকট বলে নির্বাচন করা হয়। মাসকটের জন্য প্রথম যখন ছবি ধারণ করা হচ্ছিল, ফিচারে সংযুক্ত ছবিটি সেসময়কারই সাক্ষী।


হিটলারের বাঙ্কার

ফাহরের বাঙ্কার ছিল ভূতলে অবস্থিত যুদ্ধবাজ জার্মান চ্যান্সেলর হিটলারের একটি গোপন বাঙ্কার। সম্ভাব্য বিমান হামলা ঠেকাতে ও আত্মগোপনে থাকার জন্যই এ বাঙ্কার নির্মাণ করেছিলেন তিনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরাজয় নিশ্চিত হওয়ার পর এখানেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বার্লিনে অবস্থিত দুই ধাপে নির্মিত এই বাঙ্কারের প্রথম ধাপের কাজ হয় ১৯৩৬ সালে। পরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে ১৯৪৩ সালে এর দ্বিতীয় ধাপের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ১৯৪৪ সালের ২৩ অক্টোবর বাঙ্কারটি হিটলারের আত্মগোপনের জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়। হিটলারের মৃত্যুর পর নির্জন বাঙ্কারের প্রথম সাক্ষী হয়ে আছে এই ছবিটি।


আইফেল টাওয়ার নির্মাণ

ফ্রান্সের প্যারিসে অবস্থিত আইফেল টাওয়ার বিশ্বের বিস্ময়কর অট্টালিকার মধ্যে অন্যতম। ১৮৮৭ সালের ২৮ জানুয়ারি এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। টানা দুই বছর কাজ চলার পর ১৮৮৯ সালের ১৫ মার্চ প্রস্তুত হয়ে যায় আইফেল টাওয়ার। এর ঠিক ১৫ দিন পর ৩১ মার্চ সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় টাওয়ারটি। ফিচারে সংযুক্ত ছবিটি আইফেল টাওয়ার নির্মাণের সময়কারই একটি ছবি।


স্ট্যাচু অব লিবার্টি নির্মাণ

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির কাছে লিবার্টি আইল্যান্ডে অবস্থিত ‘স্ট্যাচু অব লিবার্টি’ বিশ্বপরিচিত স্থাপনা। যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতার প্রতীক তামার এই মূর্তিটি দেশটির শতবর্ষপূর্তিতে এবং তার প্রতি ফ্রান্সের বন্ধুত্বের নিদর্শন হিসেবে উৎসর্গ করা হয়, ২৮ অক্টোবর ১৮৮৬ সালে। ভাস্কর্যটির ভিতরের কাঠামোর নকশা ও নির্মাণকাজে ছিলেন ফেড্রিক বারথোল্ডি ও গুস্তাভ আইফেল। আইফেল টাওয়ারেরও নির্মাতা ছিলেন গুস্তাভ আইফেল। সংযুক্ত ছবিটি স্ট্যাচু অব লিবার্টির নির্মাণকালেরই কোনো এক সময় ক্যামেরায় বন্দি করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ০০২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০১৫
এইচএ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।