ঢাকা: অভিবাসীদের ওপর হামলা-লুটপাট বন্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার কয়েকটি এলাকায় সেনাবাহিনী নামিয়েছে দেশটির সরকার।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিরক্ষামন্ত্রী নসিভিউই মাপিসা-কাকুলার বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে এ তথ্য জানানো হয়।
জরুরি অবস্থার কারণেই সেনাবাহিনী মাঠে নেমেছে জানিয়ে নসিভিউই সাংবাদিকদের বলেন, আমরা পুলিশের দায়িত্ব পালনে নয়, তাদের সাহায্য করতেই কাজ করছি।
সেনাবাহিনী দক্ষিণ আফ্রিকার জোহান্সবার্গ ও কাওয়াজুলু-নাটাল প্রদেশে আপাতত কাজ করবে বলে এসময় জানান প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
৩০ মার্চ থেকে ফুঁসে ওঠা এ সহিংসতায় শুধুমাত্র কাওয়াজুলু-নাটাল প্রদেশ থেকেই এক হাজারের বেশি অভিবাসী ঘরছাড়া হয়েছেন বলে জানা গেছে। এর পরপরই জোহান্সবার্গসহ বেশ কিছু এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে এ সহিংসতা। চলমান এ সহিংসতায় এখন পর্যন্ত আটজন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির পুলিশ।
এর আগে ১৮ এপ্রিল কাওয়াজুলু-নাটাল প্রদেশের রাজধানী ডারবানে এক অস্থায়ী উদ্বাস্তু শিবির পরিদর্শন শেষে টেলিভিশন বক্তৃতায় যেকোনো মূল্যে সহিংসতা বন্ধের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা।
এ সময় তিনি বলেন, যারা এই সহিংসতার জন্ম দিয়েছে, তারা দক্ষিণ আফ্রিকার জাতীয় মূল্যবোধের বিরুদ্ধে কাজ করছে। যেকোনো মূল্যে আমরা এই সহিংসতা বন্ধ করব। তার এ ঘোষণা আসার পরপরই শতাধিক বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করে দক্ষিণ আফ্রিকার পুলিশ।
তবে সমালোচকরা মনে করছেন, জুমা’র ‘ধীরে চল’ নীতিই সহিংসতাকে এতটা উস্কে দিতে পেরেছে।
১৯৯৪ সালে শ্বেতাঙ্গ শাসনের অবসানের পর বিদেশিরা দক্ষিণ আফ্রিকায় পাড়ি জমাতে শুরু করে। এর মধ্যে আফ্রিকার অন্যান্য দেশ ও এশিয়া মহাদেশ থেকেই সবচেয়ে বেশি মানুষ সেখানে জীবিকার সন্ধানে পাড়ি জমায়।
সরকারি হিসাবে, দেশটিতে প্রায় বিশ লাখ অভিবাসী রয়েছেন, যা এর মোট জনসংখ্যার চার শতাংশ। তবে বেসরকারি কিছু সংস্থার তথ্যে সেখানে পঞ্চাশ লাখ অভিবাসী থাকার কথা দাবি করা হয়।
এদিকে, দক্ষিণ আফ্রিকায় বেকারত্বের হার ২৪ শতাংশ। সেখানকার স্থানীয়দের অনেকেই নিজেদের বেকারত্বের কারণ হিসেবে অভিবাসীদেরকে দায়ী বলে মনে করেন। এরই প্রেক্ষিতে তাদের একটা পক্ষ দেশ থেকে বিদেশিদের বিতাড়নে সহিংস হয়ে ওঠে। এর আগে ২০০৮ সালে অভিবাসী বিরোধী সহিংস ঘটনায় অন্তত ৬২ জনের প্রাণহানি হয় দক্ষিণ আফ্রিকায়।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০১৫
আরএইচ/আরআই