শর্তগুলোর মধ্যে প্রধান তিনটি হলো- কাতারকে তাদের সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা বন্ধ করতে হবে; রিয়াদের আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী তেহরানের সঙ্গে দহরম-মহরম সম্পর্ক কমিয়ে আনতে হবে এবং তুরস্কের সামরিক ঘাঁটি বন্ধ করে দিতে হবে।
** কাতার থেকে সামরিক ঘাঁটি সরাবে না তুরস্ক
এছাড়াও আরব দেশগুলোতে নিষিদ্ধ মুসলিম ব্রাদারহুডের সঙ্গে সবরকমের সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে; চার আরব দেশের ‘অপরাধী’ নাগরিকদের আশ্রয় দেওয়া বন্ধ করতে হবে, একইসঙ্গে এখন অবস্থানরতদের বহিষ্কার করতে হবে, যাতে কাতার এই দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে না পারে; সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে গ্রেফতারি পরোয়ানার আওতায় থাকা চার আরব দেশের নাগরিকদের হস্তান্তর করতে হবে; যুক্তরাষ্ট্রের চোখে সন্ত্রাসীঘোষিত সব উগ্রপন্থি সংগঠনকে অর্থ সহায়তা দেওয়া বন্ধ করতে হবে; আরব দেশগুলোর বিরোধী নেতাদের অর্থায়নের তথ্য সরবরাহ দিতে হবে; উপসাগরীয় সহযোগিতা সংস্থার (জিসিসি) সঙ্গে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিকসহ সবরকমে মতমিলিয়ে চলতে হবে; আল-জাজিরা ছাড়াও আরবি২১ ও মিডলইস্টআই এর মতো সমালোচক সংবাদমাধ্যমগুলোকে অর্থায়ন বন্ধ করতে হবে এবং চার আরব দেশ এরমধ্যে যে ক্ষতির শিকার হয়েছে তা আর্থিকভাবে শোধ করতে হবে।
কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত কুয়েতের আমির জাবের আল আহমেদ আল সাবাহ’র মাধ্যমে এই ১৩ শর্ত দাবি দোহার কাছে দেওয়া হয়েছে।
এই শর্তের বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো জবাব না দিলেও অবরোধ আরোপের পর থেকে কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুলরহমান আল-থানি বলে আসছেন, অবরোধের পদক্ষেপগুলো প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত তারা কোনো সমঝোতায় যাবেন না।
সন্ত্রাসবাদে মদদ, আঞ্চলিক অস্থিরতা বৃদ্ধি, অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ ও ইরানের সঙ্গে যোগাযোগ রাখাসহ বেশ কিছু অভিযোগে গত ৫ জুন কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দেয় সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিশর, বাহরাইন, পশ্চিমাপন্থি ইয়েমেন ও লিবিয়া সরকার। যদিও অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে আসছে কাতার।
কাতারের সঙ্গে একমাত্র সীমান্তবর্তী দেশ সৌদি আরব এবং পার্শ্ববর্তী আরব আমিরাত সবরকমের নৌ, আকাশ ও স্থল যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়ায় সেখানে ঢুকতে পারছে না কোনো খাদ্যপণ্যও।
এই অবস্থায় পারস্য উপসাগরের ওপারের দেশ ইরান ও দূরের তুরস্ক এগিয়ে আসে দোহার পাশে। ইরান প্রথম থেকেই বলে আসছিল, কাতারের সংকট মোকাবেলায় তারা পাশে থাকবে। এরমধ্যে দফায় দফায় খাদ্যপণ্য পাঠিয়েছেও তারা। সংকটের আশু সমাধান আহ্বান করে কাতারকে সহায়তা পাঠাচ্ছে তুরস্কও।
এ সংকট সমাধানে সবপক্ষকে সহযোগিতার কথা বললেও দোহার বিপক্ষেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শক্ত অবস্থান দেখা যাচ্ছে। যদিও কাতারে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটি ও অন্যান্য স্বার্থ জড়িত বলে সরাসরি কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছে না ওয়াশিংটন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৫ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৭
জিওয়াই/এইচএ/