ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

সাইবার হামলার ভাইরাস ইউক্রেন থেকে ছড়িয়ে পড়ে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১৯ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০১৭
সাইবার হামলার ভাইরাস ইউক্রেন থেকে ছড়িয়ে পড়ে ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: বুধবারের সাইবার হামলা পুরো বিশ্বকে নাড়া দিয়েছে। থমকে গিয়েছিল মুম্বাই থেকে লসঅ্যাঞ্জেলস বন্দরের কার্যক্রম, অস্ট্রেলিয়ার চকলেট কারখানার উৎপাদন কাজও সাময়িক বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আর অচল হয়ে পড়েছিল হাজারো কম্পিউটার।

এ সাইবার হামলার প্রথম সূচনা হয়েছিল ২৭ জুন (মঙ্গলবার) ইউক্রেন থেকে। সাইবার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইউক্রেনের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা যখন জনপ্রিয় একটি ট্যাক্স প্যাকেজ ডাউনলোড করছিলো বা একটি স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম পরিদর্শন করছিলো ঠিক তখনি কম্পিউটারগুলো সাইবার হামলায় আক্রান্ত হয়।

হামলার পরপরই ভাইরাস কোড কম্পিউটারকে অচল করে দেয় এবং আক্রান্ত কম্পিউটার ব্যবহারকারীর কাছে ৩শ’ ডলার বিট কয়েন মুক্তিপণ দাবি করে। এর একমাস আগে মে মাসে একই কায়দায় ওয়ান্নাক্রাই ভাইরাস হামলায় একই কায়দায় বিশ্বব্যাপি মুক্তিপণ দাবি করেছিল।

৩০ জনের বেশি ভুক্তভোগী মুক্তিপণ দিয়েছেন। তবে এভাবে ছোট পণ আদায় করাই হ্যাকারদের মূল লক্ষ্য কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা। নাকি তারা আর্থিক লাভের চাইতে ধ্বংসাত্মক কোনো পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে সে প্রশ্নও করেছেন তারা।

হ্যাকাররা মুক্তিপণ পরিশোধের পর তা ই-মেইলের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে বলেছে ভুক্তভোগীদের। জার্মান সাইবার নিরাপত্তার এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এ ধরনের আহ্বানের পরপরই নিজেদের সাইট বন্ধ করে দিয়েছে জার্মানির ই-মেইল প্রোভাইডার পোস্তেও।

সাইবার হামলার সূচনা স্থান ইউক্রেন বরাবরই সাইবার হামলার জন্য পাশের ক্ষমতাধর প্রতিবেশী রাশিয়াকে দায়ী করে আসছে। ক্রেমলিন বরাবরই এ অভিযোগ নাকচ করে আসছে।

রাশিয়া বলেছে, বুধবারের (২৮ জুন) বিশ্বব্যাপি সাইবার হামলার উৎস সংক্রান্ত কোনো তথ্য রাশিয়ার কাছে নেই। এ হামলায় রাশিয়ার কোম্পানিগুলোও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, কেউই এককভাবে সাইবার হুমকি মোকাবেলা করতে পারবে না। আর দুর্ভাগ্যজনকভাবে প্রমাণহীন কথিত অভিযোগ দিয়ে এ সমস্যার সমাধান করা যাবে না।

কম্পিউটারকে ভাইরাস মুক্ত রাখার পণ্য বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান স্লোভাকিয়ার ইএসইটি জানিয়েছে, তাদের পণ্য বিক্রয়কারী ক্রেতাদের মধ্যে সাইবার হামলায় আক্রান্তদের ৮০ শতাংশ হচ্ছে ইউক্রেনের আর দশভাগ হচ্ছে ইতালির।

বৃটেনের গোয়েন্দা সংস্থা ও সাইবার কার্যক্রমের সাবেক সহকারী পরিচালক ব্রায়ান লর্ড বলেছেন, মুক্তিপণ পাওয়ার চাইতে সর্বশেষ সাইবার হামলার লক্ষ্য হচ্ছে বিশৃঙ্খলা তৈরি করা।

তিনি বলেন, আমার ধারণা বলে যে, সাইবার হামলাটা হয়েছে ছদ্মভাবে দেশ পরিচালনার মতো করে। বিষয়টা এরকম যে, পরীক্ষা করে দেখি কি হয়!

সাইবার হামলায় ইউক্রেনে অনেকগুলো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। দেশটির কম্পিউটার আক্রান্ত হবার পর তা বিশ্বের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে। আর তাতে তৈরি হয়েছে বাণিজ্যিক বিশৃঙ্খলা।

বাংলাদেশ সময়: ০৪১৯ ঘণ্টা, জুন ২৯, ২০১৭
জিওয়াই/জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।