ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে যেভাবে এক হচ্ছে রাশিয়া-চীন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪২ ঘণ্টা, জুলাই ৬, ২০১৭
যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে যেভাবে এক হচ্ছে রাশিয়া-চীন ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: একের পর এক ভারী অস্ত্রের মহড়া যুদ্ধের উত্তাপ ছড়াচ্ছে কোরীয় সীমানায়। কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলছে না। উত্তর কোরিয়ার দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পরপরই জবাব হিসেবে পাল্টা পরীক্ষা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া। 

কোরিয়ায় সংকট যখন দিন দিন ঘণীভূত হচ্ছে ঠিক তখনই অতীতের সমীকরণ উল্টে দিয়ে এক সুরে সুর মিলিয়ে কথা বলছে পুরানো দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ রাশিয়া ও চীন।  

মস্কোতে সদ্য এক সম্মেলনে মুখোমুখি হয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।

 উত্তর কোরিয়ার চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষিতে সেখান থেকে এক যৌথ বিবৃতিও দিয়েছেন এই দুই নেতা।  

বিবৃতিতে তারা একটি শান্তি পরিকল্পনার ঘোষণা দিয়েছেন। একই সঙ্গে কোরীয় এলাকায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক শক্তি বাড়ানোর কড়া সমালোচনাও করেছেন।  

প্রকৃতপক্ষে এলাকাটিতে রাশিয়া আর চীনের স্বার্থও জড়িয়ে আছে। উত্তর কোরীয় সীমান্তের সঙ্গে দুই দেশেরই যোগসূত্র রয়েছে। এছাড়া পিয়ংইয়ং এর সঙ্গে রয়েছে কূটনৈতিক সম্পর্ক। নিজেদের এলাকার মধ্যে এসে যুক্তরাষ্ট্র প্রভাব খাটাক এটাও এই দুই দেশ চায় না। দুই দেশের এ ঘনিষ্টতা শঙ্কায় ফেলে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা মিত্র দেশগুলোকে। মস্কো ও বেইজিং একে অপরকে আপন করে নেবার পেছনে এটাও অন্যতম একটা কারণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকর‍া।  

জাতিসংঘের ভেটো ক্ষমতা সম্পন্ন সদস্য রাশিয়া ও চীন নিরাপত্তা কাউন্সিলেও ভোট দেওয়ার সময় একপক্ষ আরেকপক্ষকে সমর্থন করে যাচ্ছে। ইরান আর সিরিয়া ইস্যুতেও একই পথে হাঁটছে মস্কো আর বেইজিং।  

বিষয়টি নিয়ে প্রায়ই এ দু’পক্ষ পশ্চিমা বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। উত্তর কোরিয়ার ব্যাপারেও তাদের একই নীতি রয়েছে। বর্তমানে 

এক সময়ের বৈরী প্রতিপক্ষ কমিউনিস্ট এই দুই দেশ এখন ঘনিষ্ট কূটনৈতিক বন্ধনে আবদ্ধ। ১৯৬৯ সালে সীমান্ত বিরোধ নিয়ে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে পারমাণবিক সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছিল চীন। এ পারস্পরিক বৈরিতা চলেছে কয়েক দশক।  

কিন্তু অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি দু’দেশের এ সম্পর্কে পরবর্তীতে পরিবর্তন নিয়ে আসে। চীন বিশ্বের সবচাইতে বড় বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সম্ভবনাময় এক দেশে পরিণত হয়েছে।  

এদিকে ক্রিমিয়াকে নিজেদের বর্ধিত ভূমি দাবি করায় ২০১৪ সালে পশ্চিমাদেশগুলো রাশিয়ার ওপর অবরোধ আরোপ করে। চীনের অর্থনৈতিক শক্তি তখন আরও গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে প্রতিষ্ঠা পায় এবং তা পূর্ব দিকের ভূ-রাজনীতিতে দ্রুত গতির সঞ্চার করে। উভয়পক্ষের সম্মতিতে রাশিয়া আর চীন বিদ্যুৎ আর অবকাঠামোগত খাতে শতাধিক বিলিয়ন ডলারের চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।  

তবে ঘনিষ্টতা থাকলেও রাশিয়া আর চীনের সম্পর্কে কিছু সমস্যা রয়েই গেছে। পরিস্থিতি আঁচড় কাটলে দেখা যাবে এশিয়ার শক্তিশালী এ দেশটি সম্পর্কে অনেক রাশিয়ানদের এখনও গভীর সন্দেহ রয়ে গেছে! 

বাংলাদেশ সময়: ১৮২০ ঘণ্টা, জুলাই ০৬, ২০১৭
জিওয়াই/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।