দক্ষিণ চীন সাগরের সেই এলাকাকে ভিয়েতনামের জলসীমা হিসেবে স্বীকার করেনা চীন। ‘নাইন ড্যাশ লাইন’ নীতি অনুসারে ওই অঞ্চলকে নিজেদের এলাকা বলে বেইজিং দাবি করে আসছে।
সিকিম সীমান্তে টানাপড়েনের মধ্যে দক্ষিণ চীন সাগরে গিয়ে ঠেকলো দুই দেশের উত্তেজনা। আর্ন্তজাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমের দেওয়া সংবাদ অনুযায়ী, বিতর্কিত জলসীমায় ভারতকে খনিজ তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানের অনুমতি দিয়ে আগুনে ঘি ঢেলে দিয়েছে ভিয়েতনাম। এতে দুই দেশের বিরোধে তাদেরও জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি দেখছেন বিশ্লেষকরা।
গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, খনিজ তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য ভারত-ভিয়েতনাম চুক্তির মেয়াদও বাড়ানো হয়েছে দুই বছর। এর আগে ভিয়েতনামের দক্ষিণ প্রান্তে ভারত বন্দর তৈরি করায় দুই দেশকেই বেইজিং বার বার হুঁশিয়ারি দেয়।
দক্ষিণ চীন সাগরে ভারত-ভিয়েতনামের যৌথ তেল-গ্যাস অনুসন্ধান শুরু থেকেই মেনে নেয়নি চীন।
২০০৬ সালে ভারত ও ভিয়েতনামের মধ্যে এ চুক্তি হয়েছিলো। তখন চীন বলেছিল, ভারত ও ভিয়েতনাম যে এলাকায় তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানের চেষ্টা করছে, সেই সব এলাকা ভিয়েতনামের নয়। তাই তেল অনুসন্ধান বন্ধ করার জন্যও নয়াদিল্লি এবং হ্যানয়কে একাধিক বার হুঁশিয়ারি দেয় বেইজিং।
ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান কোম্পানি ওএনজিসি ইন্টারন্যাশনাল দক্ষিণ চীন সাগরে তেল অনুসন্ধানের কাজ করছে। ওএনজিসি গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহের শুরুতেই ভিয়েতনাম থেকে চিঠি এসে পৌঁছায়। দক্ষিণ চীন সাগরের ব্লক ১২৮ এলাকায় তেল অনুসন্ধানের যে বরাদ্দ ভারতকে আগেই দেওয়া হয়েছিলো, তা আরও দু’বছরের জন্য বাড়ানো হলো বলে ভিয়েতনাম ওই চিঠিতে জানায়। এই ১২৮ নম্বর ব্লকটিরের একাংশ চীনের ‘নাইন ড্যাশ লাইন’-এর মধ্যে পড়ে।
দক্ষিণ চীন সাগরের প্রায় ৯০ শতাংশ এলাকাকেই চীন নিজেদের জলসীমা বলে দাবি করে। চীন ওই সাগরের যে ম্যাপ প্রকাশ করে তাতে নয়টি ড্যাশ দিয়ে চিহ্নিত একটি ‘ইউ’ আকারের অঞ্চলকে দেখানো হয়। ওই ‘ইউ’-এর ভেতরে থাকা জলভীগ চিনের জলসীমা বলে বেইজিং-এর দাবি। যদিও দক্ষিণ চীন সাগরকে ঘিরে থাকা ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, ব্রুনাই, ফিলিপাইন, তাইওয়ানের মতো দেশগুলো চিনের এই ‘নাইন ড্যাশ লাইন’-কে স্বীকৃতি দেয় না এবং ‘ইউ’-এর মধ্যে থাকা অনেকটা অঞ্চলকেই এই দেশগুলি নিজেদের জলসীমা বলে দাবি করে।
বাংলাদেশ সময়: ০৫৪১ ঘণ্টা, জুলাই ০৭, ২০১৭
আরএম/এএটি/