প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার (৭ জুলাই) পুলিশের গুলিতে আন্দোলনরত জোটের এক কর্মী মারা গেলে শনিবার তার মরদেহ নিয়ে মিছিল বের করে জিজেএমসহ তাদের সমমনা দলগুলো। এসময় ফের পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় আন্দোলনকারীদের।
এরপরই জেলা শহরে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হলে সেনাবাহিনী ডাকে জেলা প্রশাসন। রাস্তায় নামা সেনাবাহিনীর দুই কলামে রয়েছেন ৮০ জন করে ১৬০ জন কর্মকর্তা।
সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের তরফ থেকে বলা হয়েছে, এই সেনাসদস্যরা দার্জিলিং শহর, কুরসিয়ং ও সোনাদা শহরে দায়িত্ব পালন করবেন। সারা জেলায় আন্দোলন চললেও মূলত এই তিন এলাকায় সহিংসতা ছড়িয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে শনিবার রাতে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে আন্দোলনের প্রধান নেতা জিজেএম’র চিফ বিমল গুরুংয়ের। তার সিদ্ধান্ত পরিস্থিতি পাল্টাতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
‘গোর্খাল্যান্ড’ নামে আলাদা রাজ্যের দাবিতে বামফ্রন্টের আমলে বারবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল পাহাড়ি জেলা দার্জিলিং। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর কিছুদিন পরিস্থিতি শান্ত থাকলেও বিভিন্ন সময়ে নানা ইস্যুতে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নামে জিজেএম।
যদিও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে আলাদা রাজ্যের দাবি কোনোভাবেই মানা হবে না বলে জানানো হয়েছে। তবু এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সময়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে জিজেএম। গত জুন মাসের শুরুর দিকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দার্জিলিং সফরকালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে জিজেএম সমর্থকরা।
এই প্রেক্ষিতে ১০ জুন হরতালের ডাক দেয় জিজেএম। তারপর থেকেই কার্যত অচল হয়ে পড়ে বাংলাদেশিসহ সারাবিশ্বের পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় জেলাটি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৬ জুন সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। তার আগে সরিয়ে নেওয়া হয় বাংলাদেশিসহ সব পর্যটকদের। যারা আটকা পড়েন তাদেরও সরে যেতে বলা হয়।
এরপর রাজনৈতিক উত্তেজনা ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর জোরদার নিরাপত্তার মুখে দার্জিলিংয়ের পর্যটন ব্যবস্থা কার্যত ভেঙে পড়ে। শুক্র ও শনিবার নতুন করে সহিংসতা ছড়ানোয় পরিস্থিতির আরও অবনতি হলো। অর্থনৈতিকভাবে অনেকাংশে পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল দার্জিলিংয়ের জীবনযাত্রাও স্থবির হয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১১১ ঘণ্টা, জুলাই ০৮, ২০১৭
এইচএ/