ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ট্রাম্প-ক্যাম্পেইন প্রধানের বাড়িতে এফবিআই’র হানা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৭ ঘণ্টা, আগস্ট ৯, ২০১৭
ট্রাম্প-ক্যাম্পেইন প্রধানের বাড়িতে এফবিআই’র হানা পল মানাফোর্ট

যুক্তরাষ্ট্রের বিগত নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচারণা শিবিরের (ট্রাম্প-ক্যাম্পেইন) চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করা পল মানাফোর্টের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্ত অধিদফতর (এফবিআই)। নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগ তদন্তের অংশ হিসেবে এ অভিযান চালানো হয়।

গত ২৬ জুলাই ভোরে মানাফোর্টের ভার্জিনিয়ার বাড়িতে চালানো এই অভিযানে বেশ কিছু নথিপত্র ও ফোনালাপের রেকর্ড জব্দ করে নিয়েছেন এফবিআই কর্মকর্তারা। অভিযানের আগের দিনই তদন্তের বিষয়ে সিনেট ইন্টিলিজেন্স কমিটির সঙ্গে স্বেচ্ছায় দেখা করেছিলেন ট্রাম্প-ক্যাম্পেইনের সাবেক এ চেয়ারম্যান।

অভিযানে ছিলেন রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগ তদন্তে দায়িত্বপ্রাপ্ত এফবিআই টিমের প্রধান ও বিশেষ কাউন্সেল রবার্ট মুলার।

অভিযানের বিষয়টি এতোদিন গোপন থাকলেও বুধবার (৯ আগস্ট) মানাফোর্টের মুখপাত্র জ্যাসন ম্যালোনির বরাত দিয়ে প্রতিবেদন করেছে মার্কিন প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট।  

নির্বাচনের বছর ২০১৬ সালের জুন থেকে আগস্টের মাঝামাঝি পর্যন্ত ট্রাম্প-ক্যাম্পেইনের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন মানাফোর্ট। কিন্তু মস্কোপন্থি একটি ইউক্রেনিয়ান রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করা এ কর্মকর্তার সঙ্গে রুশ আইনজীবীর যোগাযোগের অভিযোগ উঠলে তিনি নির্বাচনের প্রায় আড়াই মাস আগে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হন।

ওয়াশিংটন পোস্ট বলছে, ২০১৬ সালের জুনে প্রেসিডেন্ট-পুত্র ট্রাম্প জুনিয়র ও কন্যা ইভাঙ্কার জামাতা জেয়ার্ড কুশনারের সঙ্গে নিউইয়র্কে ক্রেমলিন-ঘনিষ্ঠ এক আইনজীবীর যে গোপন বৈঠক হয়েছিল, তাতে ছিলেন মানাফোর্ট। সরকারি কৌঁসুলিরা তার কাছে জানতে চেয়েছেন যে, সে বৈঠকে ট্রাম্পের উপদেষ্টা অন্য কেউ ছিলেন কিনা, বা এরপর আরও কোনো বৈঠক হয়েছিল কিনা।

নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগ তদন্তে এফবিআই ছাড়াও সিনেট জুডিশিয়ারি কমিটি, সিনেট ও হাউজ ইন্টিলিজেন্স কমিটিসহ আরও বেশ কিছু সংস্থা বা দফতর কাজ করছে। এরমধ্যে এফবিআই’র তদন্তেই সবচেয়ে বেশি কেঁপেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এর জেরে সাবেক এফবিআই প্রধান জেমস কোমিকে বরখাস্ত পর্যন্ত করে ফেলেন নয়া প্রেসিডেন্ট।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানাফোর্ট সিনেট ইন্টিলিজেন্স কমিটির কাছে স্বেচ্ছায় দেখা করে সব নথি হস্তান্তর করলেও তদন্তকারীরা চাইছেন, তার কাছে থাকা সব নথিই যেন সংশ্লিষ্টদের হাতে যায়।

কী কী নথিপত্র অভিযানে জব্দ করা হয়, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া না গেলেও ওয়াশিংটন পোস্ট কিছু সূত্রের বরাত দিয়ে বলছে, ট্রাম্পের পুত্র-জামাতার সঙ্গে ক্রেমলিন-ঘনিষ্ঠ রুশ আইনজীবীর সেই বৈঠকে অংশ নিয়ে মানাফোর্ট যে নোট নিয়েছিলন, তা এফবিআই টিম হস্তগত করেছে।

তদন্তকারীদের হাতে আসা প্রেসিডেন্ট-পুত্রের ইমেইল নথি অনুযায়ী, ট্রাম্প জুনিয়রকে সেসময় তার বাবার প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের নির্বাচনী প্রচারণায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, এমন কিছু তথ্য দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে তিনি সে বৈঠকে অংশ নিতে সিদ্ধান্ত নেন এবং মানাফোর্টকে আমন্ত্রণ জানান। যদিও সে বৈঠকে ‘বিশেষ কিছু’ আলাপ হয়নি বলে দাবি করে আসছেন ট্রাম্প জুনিয়র ও জেয়ার্ড কুশনার।

সংবাদমাধ্যম বলছে, প্রচারণা শিবিরের প্রধানদের মধ্যে মানাফোর্টের প্রতিই বেশি অনুরক্ত ছিলেন ট্রাম্প। সেই মানাফোর্টের বাড়িতে অভিযান ও সেখান থেকে নথি জব্দ করার ব্যাপারটি তদন্তের গতিশীলতারই দৃষ্টান্ত বলে মনে করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৬ ঘণ্টা, আগস্ট ০৯, ২০১৭
এইচএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।