ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

‘গুয়ামে কিছু হলে উ. কোরিয়াকে সত্যিই পস্তাতে হবে’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪২ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১৭
‘গুয়ামে কিছু হলে উ. কোরিয়াকে সত্যিই পস্তাতে হবে’ ট্রাম্পের হুমকির জবাবে কিম জং-উন কিছু বলবেন?

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উত্তর কোরিয়াকে ফের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল গুয়ামে যদি কিছু হয়, তবে পিয়ংইয়ংকে ‘মহাঝামেলায়’ পড়তে হবে। সত্যিই এবং তাৎক্ষণিকই তাদের পস্তাতে হবে।

মার্কিন সামরিক বাহিনী উত্তর কোরিয়াকে জবাব দিতে রণসাজে পুরোপুরি প্রস্তুত (লকড অ্যান্ড লোডেড) বলে টুইটার-বার্তায় হুংকার ছাড়ার কয়েক ঘণ্টা পর স্থানীয় সময় শুক্রবার (১১ আগস্ট) বিকেলে সাংবাদিকদের ডেকে ট্রাম্প এই কথা বলেন। নিউজার্সির বেডমিনস্টারের একটি গলফ রিসোর্টে ১৭ দিনের ছুটিতে আছেন প্রেসিডেন্ট।

এরমধ্যেই উত্তর কোরিয়া-ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে হুংকার ছাড়ছেন তিনি।

গুয়ামসহ যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের উদ্দেশ্য করে ট্রাম্প বলেন, ‘এই অঞ্চল অত্যন্ত সুরক্ষিত থাকবে, আমায় বিশ্বাস করতে পারেন। ’ তিনি পিয়ংইয়ংকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র তাদের ওপর সর্বোচ্চ সীমা পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে, যতটা আরোপ করা যায়। ’

এর আগে ট্রাম্প কড়া ভাষায় পিয়ংইয়ংকে হুঁশিয়ারি দিয়ে টুইট-বার্তায় বলেন, ‘উত্তর কোরিয়া নির্বোধের মতো আচরণ করে দেখুক, এখন সামনে কেবল সামরিক সমাধান। পুরোপুরি রণসাজে প্রস্তুত (সামরিক বাহিনী)। ’

যে কিম জং-উনকে ক্ষমতার গদি থেকে সরাতে যুক্তরাষ্ট্রের জড়িত থাকার আভাস পেলে তাদের ‘মোক্ষম জবাব’ দেওয়ার হুমকি দিয়েছিল উত্তর কোরিয়া, সেই জং-উনকেই হুঁশিয়ারি দিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘আশা করছি কিম জং-উন নতুন পথ পেয়ে যাবেন। ’

‘লকড অ্যান্ড লোডেড’ ব্যাপারটি খোলাসা করতে বলা হলে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি আশা করি উত্তর কোরিয়া আমার বক্তব্য এবং আমি কী বোঝাতে চাইছি, সেই মূল ব্যাপারটি খুব ভালোভাবেই বুঝছে...এই শব্দগুলো বোঝাটা একেবারেই খুব সহজ। ’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘তিনি (কিম জং-উন) যদি পাল্টা হুমকির আদলে নতুন করে আরেকটি হুঁশিয়ারিও উচ্চারণ করেন...গুয়াম অথবা যুক্তরাষ্ট্রের অন্য কোনো অঞ্চল বা মিত্রের বিষয়ে, তবে তাকে সত্যিই পস্তাতে হবে এবং সেটা তাৎক্ষণিকভাবেই। ’

উত্তর কোরিয়ার দুই দফায় আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) পরীক্ষার প্রেক্ষিতে সম্প্রতি দেশটির ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জাতিসংঘ। এর পেছনে কলকাঠি নাড়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে অভিযুক্ত করে পিয়ংইয়ংয়ের তরফ থেকে বলা হয়, এজন্য ওয়াশিংটনকে চরম মূল্য দিতে হবে।  
জবাবে যুক্তরাষ্ট্র বাক-লড়াই চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি কোরীয় উপদ্বীপে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যৌথ যুদ্ধবিমানের মহড়া দেয়। এর প্রতিক্রিয়ায় উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট কোরীয় উপদ্বীপকে পরমাণু যুদ্ধের কিনারায় ঠেলে দিচ্ছেন। একইসঙ্গে তারা জানায়, নিজেদের প্রতিরক্ষা নিশ্চিতে পিয়ংইয়ং যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিমানগুলোর অবস্থানস্থল গুয়ামের সামরিক ঘাঁটিতে হামলার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করছে উত্তর কোরিয়া।

এই উত্তেজনা জনমনেও ছড়িয়ে পড়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জের জন্য একটি সতর্কতামূলক তথ্যপত্র জারি করা হলে।

এরমধ্যেই আবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিস বলতে থাকেন, ওয়াশিংটন এখনও পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে উত্তেজনার কূটনৈতিক সমাধানের আশা করছে। তিনি আবার হুঁশিয়ার করে বলতে থাকেন, যদি যুদ্ধ লেগেই যায় তবে এর পরিণতি হবে বিপর্যয়কর।

সামরিক বাহিনীর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রধানের এই ‘বিপর্যয়’ শঙ্কার মধ্যেই উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে সমর-সজ্জার হুংকার ছাড়েন ট্রাম্প। এরপর সাংবাদিক ডেকে উত্তর কোরিয়াকে দেন ‘মহাঝামেলার’ হুমকি। এখন এই হুংকারের পাল্টা জবাব উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন কী দেন, সেদিকেই নজর থাকছে বিশ্ব সংবাদমাধ্যমের।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৭
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।