বিভিন্ন দেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) বাড়ার হারের হিসেব কষে সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এই ভবিষ্যদ্বাণী করে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। তাতে উঠে এসেছে, আমেরিকা, চীন, জাপান, ব্রিটেন ও জার্মানিকে পেছনে ফেলে এই মুহূর্তে বিশ্বে সবচেয়ে দ্রুত গতিতে বাড়ছে দক্ষিণ এশীয় এই দেশটির অর্থনীতি।
এমন একটি দেশের শীর্ষ ধনীদের তালিকা কী? জানেন? ২০১৭ সালের ফোর্বস ইন্ডিয়ার তালিকায় ভারতের ধনীতম শিল্পপতি রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের কর্ণধার মুকেশ আম্বানি (৬০)। গত বছরও তিনি ছিলেন প্রথম স্থানে।
অতি সম্প্রতি ফোর্বস ইন্ডিয়া সম্পত্তির নিরিখে দেশটির বড়লোকদের তালিকা প্রকাশ করেছে। ১০০ জনের এই লিস্টি হয়েছে। যারা শীর্ষ ১০-এ আছেন লেখায় তাদের নাম তুলে ধরা হচ্ছে।
২০১৭ আর্থিক বছরে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ কর্ণধারের সম্পত্তির পরিমাণ ৩৮ বিলিয়ন ডলার (তিন হাজার ৮শ কোটি ডলার)। বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠানের মালিকানায় রয়েছে রিলায়েন্স। এর মধ্যে খুব বেশি দিন হয়নি যাত্রা শুরু করেছে রিলায়েন্স জিয়ো। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে চালু হওয়া এ প্রতিষ্ঠান এখন ভারতের সবচেয়ে বড় টেলিকম অপারেটর কম্পানিতে পরিণত হয়েছে। মাত্র ১৭০ দিনে সাবস্ক্রাইবারের ভিত্তিতে ১০০ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায় এর আয়।
এছাড়া দেশটির জামনগর ওয়েল রিফাইনারির মালিক রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। ১৯৯৯ সালের এক হিসেবে বলা হয়, এই রিফাইনারিতে প্রতিদিন ৬৬৮০০০ ব্যারেল তেল রিফাইন করা হয়।
দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন উইপ্রোর আজিম প্রেমজি (৭২)। তার সম্পদের পরিমাণ ১৯ বিলিয়ন ডলার (এক হাজার ৯শ কোটি ডলার)।
সফটওয়্যার ব্যবসায় সফল এক ব্যক্তিত্ব তিনি। ফোর্বস ম্যাগাজিনের তালিকায় ১৯৯৯ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত একটানা ভারতের সেরা ধনী ব্যক্তি ছিলেন তিনি। বিশ্বের মধ্যেও তিনি শীর্ষ ১০০-তে রয়েছেন। আজিম প্রেমজি ভারতীয় সফটওয়্যার কোম্পানি উইপ্রোর চেয়ারম্যান।
তৃতীয় স্থানে অশোক লেল্যান্ডের হিন্দুজা ব্রাদার্স। সম্পদের পরিমাণ ১৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন (এক হাজার ৮শ ৪০ কোটি)। শ্রীচাঁদ ও গোপীচাঁদ ভ্রাতৃদ্বয় হিন্দুজা গ্রুপের কো-চেয়ারম্যান। বহুজাতিক এই কোম্পানিটির ব্যবসা ছড়িয়ে আছে পৃথিবীর ৩৭টি দেশে। ট্রাক, লুব্রিকেন্টস থেকে শুরু করে ব্যাংকিং এবং স্বাস্থ্যসেবা খাতেও ব্যবসা সম্প্রসারণ করেছে হিন্দুজা গ্রুপ।
চতুর্থ স্থানে লক্ষ্মী মিত্তল (৬৭)। সম্পদের পরিমাণ ১৬ দশমিক ৫ বিলিয়ন (এক হাজার ৬শ ৫০ কোটি)। আরসিলর মিত্তল গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তিনি। এটি বহুজাতিক ইস্পাত উৎপাদন করপোরেশন, যা বিশ্বের সব থেকে বড়। এর অন্তত ৩৮ শতাংশের মালিকানা লক্ষ্মীর রয়েছে।
পঞ্চম স্থানে শাপুর্জি পালানজি গ্রুপের পালনজি মিস্ত্রি (৮৮)। ১৬ বিলিয়ন (এক হাজার ৬শ কোটি)। নির্মাণ ও আবাসন খাতের পাশাপাশি তাদের ব্যবসা রয়েছে ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য, গৃহ নির্মাণ পণ্য, পরিবহন, প্রকাশনা, বিদ্যুৎ খাত এবং জৈবপ্রযুক্তিতে।
ষষ্ঠ স্থানে গোদরেজ পরিবার। ১৪ দশমিক ২ বিলিয়ন (এক হাজার ৪শ ২০ কোটি)। পরিবারের বেশ কয়েকজন মালিক এই প্রতিষ্ঠানের। তারা মূলত রিয়েল এস্টেট কোম্পানি হলেও নানামাত্রিক পণ্য উৎপাদনও করছে। রূপ চর্চায় তাদের বেশ কয়েকটি পণ্য অত্যন্ত জনপ্রিয়।
সপ্তমে শিব নাদার (৭২)। ১৩ দশমিক ৬ বিলিয়ন (এক হাজার ৩শ ৬০ কোটি)। এইচসিএল ও শিব নাদার ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা তিনি। এইচসিএল প্রযুক্তি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান। উত্তর প্রদেশে তাদের প্রধান কার্যালয়।
অষ্টমে কুমার মঙ্গলম বিড়লা (৫০)। ১২ দশমিক ৬ বিলিয়ন (এক হাজার ২শ ৬০ কোটি)। আদিত্য বিড়লা গ্রুপের মালিকানা তার। টেলিকম থেকে শুরু করে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ খাতে বিনিয়োগ বিড়লার।
নবমে দিলীপ সাংভভি (৬২)। ১২ দশমিক ১ বিলিয়ন (এক হাজার ২শ ১০ কোটি)। সান ফার্মাসিউটিক্যালসের মালিকানা তাদের।
দশমে গৌতম আদানি। ১১ বিলিয়ন (এক হাজার একশ কোটি)। নানামাত্রিক ব্যবসায় জড়িত আদানি গ্রুপ। দেশের বাইরেও তাদের বিনিয়োগ। কৃষি, জ্বালানি খাত অন্যতম ব্যবসা তাদের।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৫, ২০১৭
আইএ