রোহিঙ্গাদের ওপর হামলা, হত্যাকাণ্ড ও অত্যাচার করে দেশ ত্যাগে বাধ্য করা মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন হচ্ছে। শনিবার এক যৌথ বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেছেন কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিয়ানো ফ্রিল্যান্ড ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন এবং লা ফ্রাঙ্কোফনির বিষয়ক মন্ত্রী মেরি ক্লদ বিবেউ।
লিখিত বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এটি মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ-এই অপরাধের জন্য মিয়ানমারের সামরিক সরকার ও সে দেশের নেতৃত্বই দায়ী।
রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতা ও অত্যাচার বন্ধ করে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া শরণার্থীদের নিরাপদে সম্মানের সঙ্গে দেশে ফিরিয়ে আনারও দাবি জানান দুই মন্ত্রী। রোহিঙ্গারাও ফিরে এলে যেন নিপীড়ন থেকে মুক্ত থাকে এবং আইনে থাকা সব ধরনের অধিকার ভোগ করতে পারেন, এটি নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানান তারা।
গত দুই অক্টোবর, জাতিসংঘের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কানাডার রাষ্ট্রদূতও মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের উত্তরাঞ্চলে রোহিঙ্গাদের বসবাস করা গ্রামগুলো সফর করেন।
প্রতিনিধিদল এসময় অবিলম্বে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকারকে চাপ প্রয়োগ করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় একত্রে কাজ করবে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
মন্ত্রী বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও সহিংসতার অবসান ঘটাতে মিয়ানমারের কমান্ডার-ইন-চিফ, সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং -এর প্রতি কানাডার উদ্বেগের বিষয়ে সরাসরি কথা বলেছেন।
এদিকে রোহিঙ্গা নারী ও যুবকদের জন্য মানবিক সহায়তার হিসেবে প্রথম দফায় ১২.২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার(১০০ কোটির বেশি বাংলাদেশি টাকা) অনুমোদন করেছেন মন্ত্রী বিবেউ।
রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে বাংলাদেশের পাশে থেকে সব ধরনের সহায়তা করার কথাও উল্লেখ রয়েছে বিবৃতিতে।
ঘটনার শুরু গত ২৪ আগস্ট দিনগত রাতে রাখাইনে যখন পুলিশ ক্যাম্প ও একটি সেনা আবাসে বিচ্ছিন্ন সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। এর জেরে ‘অভিযানের’ নামে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী নিরস্ত্র রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশুদের ওপর নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে। ফলে লাখ লাখ মানুষ সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য চলে আসছেন।
আইওএম বলছে, এখন পর্যন্ত পালিয়ে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা সোয়া পাঁচ লাখ। তবে বেসরকারি হিসেবে এই সংখ্যা সাড়ে ছয় লাখ ছাড়িয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩১৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৭, ২০১৭
এসআইএস