ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট উ থিন কিয়াও’র পদত্যাগ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫১৯ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১৮
মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট উ থিন কিয়াও’র পদত্যাগ মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট থিন কিয়াও

মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট উ থিন কিয়াও পদত্যাগ করেছেন। প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের তরফে দেয়া একটি ফেসবুক পোস্টের অস্বাক্ষরিত নোটিশে একথা জানানো হয়।

নোটিশে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট উ থিন কিয়াও ২১ মার্চ পদত্যাগ করেছেন। কারণ তিনি ‘‘ বিশ্রাম নিতে চান।

’’

ফ্রন্টিয়ার মিয়ানমার নামের একটি পত্রিকায় বুধবার এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন ছাপানো হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ফেসবুকে দেয়া নোটিশে সরকার জানিয়েছে আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে ভাইস প্রেসিডেন্ট উ মিইন্ত সোয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার স্থলাভিষিক্ত হবেন। মিয়ানমারের পার্লামেন্ট ‘পিদাউংসু’ তার বিকল্প কাউকে মনোনীত করার আগ পর্যন্ত উ মিইন্ত সোয়ে কাজ চালিয়ে যাবেন।

দু’বছরেরও কম সময়ের মধ্যে প্রেসিডেন্ট উ থিন কিয়াও পদত্যাগ করে ক্ষমতা থেকে সরে গেলেন। উ থিন কিয়াও পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন, গত প্রায় এক বছর ধরে এমন একটি জল্পনা চলছিল। তবে সরকার ও অং সান সুচির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির নেতারা এই জল্পনাকে স্রেফ গুজব বলে দাবি করে আসছিলেন।

সম্প্রতি সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়, উ থিন কিয়াও বেশ কিছুদিন ধরে শারীরিকভাবে অসুস্থ। চিকিসার জন্য তাকে বেশ কয়েকবার বিদেশে যেতে হয়েছে। সর্বশেষ গত জানুয়ারিতেও তিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিয়েছেন।

উ থিন কিয়াও হচ্ছেন অর্ধ শতাব্দীকালেরও বেশি সময়ে মিয়ানমারের প্রথম বেসামরিক এবং গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট। মিয়ানমারের বর্তমান স্টেট কাউন্সেলর বা রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সুচির দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত সহযোগী ও অনুগত বলে পরিচিত উ থিন কিয়াও সুচির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ২০১৫ সালের নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

উ থিন কিয়াও হয়ে ওঠেন নির্বাচনে সুচির বিকল্প। দেশটির সেনাবাহিনী কর্তৃক প্রণীত খসড়া সংবিধানে সুচির নির্বাচনে দাঁড়ানোর সুযোগ কেড়ে নেয়া হয়। অগত্যা উ থিন কিয়াওকেই সুচির বিকল্প হিসেবে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী করে এনএলডি।

প্রেসিডেন্ট পদে দাঁড়াতে ব্যর্থ হয়ে সুচি পরে স্টেট কাউন্সেলর পদে নির্বাচিত হন। কাগজে কলমে প্রেসিডেন্টের কাছে স্টেট কাউন্সেলর সুচির কাজের জন্য জবাবদিহি করার কথা থাকলেও বাস্তবে প্রেসিডেন্টর চেয়ে সুচিই বেশি ক্ষমতা ভোগ করে চলেছেন।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির ওপর সেনাবাহিনী ও উগ্রপন্থি বৌদ্ধদের পরিচালিত ধারাবাহিক জাতিগত নির্মূল অভিযান, হত্যাযজ্ঞ, ধর্ষণ ও ব্যাপক নিপীড়নের বিষয়ে প্রেসিডেন্ট উ থিন কিয়াও এ পর্যন্ত কোনো ধরনের বিবৃতি দেননি বা এ জাতীয় ঘটনা স্বীকার বা অস্বীকারও করেননি। অং সান সুচি রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞকে আড়াল করার জন্য যেভাবে নানা মিথ্যা বিবৃতি ও ছলচাতুরির আশ্রয় নিয়েছেন, তেমন কিছু করতে দেখা যায়নি বিদায়ী প্রেসিডেন্ট উ থিন কিয়াওকে। এ ব্যাপারে বরাবরই তিনি নীরব থেকেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১১১৫ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১৮/ সর্বশেষ আপডেট ১২৩৫ ঘণ্টা
এসএইচ/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।