ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ভারতে প্রধান বিচারপতির অভিশংসনে ৭ দলের ৭১ এমপির চিঠি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১৮
ভারতে প্রধান বিচারপতির অভিশংসনে ৭ দলের ৭১ এমপির চিঠি ভারতের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র

ভারতের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের অভিশংসন দাবি করে উপ-রাষ্ট্রপতি ভেঙ্কাইয়া নাইডুর কাছে চিঠি দিয়েছেন সাতটি রাজনৈতিক দলের ৭১ জন সংসদ সদস্য (এমপি)।

কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই’র বিশেষ আদালতের বিচারক ব্রিজগোপাল হরিকিষাণ লয়ার (বিএইচ লয়া) রহস্যজনক মৃত্যুর স্বাধীন তদন্তের আবেদন সুপ্রিম কোর্ট খারিজ করে দেওয়ায় শুক্রবার (২০ এপ্রিল) ওই ৭১ এমপি নিজেদের স্বাক্ষর সম্বলিত চিঠি উপ-রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দেন।

২০১৪ সালের ডিসেম্বরে বিএইচ লয়া ‘হৃদরোগে আক্রান্ত’ হয়ে মারা গেলেও সম্প্রতি বিষয়টি ফের আলোচনায় আসে।

এ নিয়ে স্বাধীন তদন্তের আবেদন করা হলে বৃহস্পতিবার (১৯ এপ্রিল) তা খারিজ করে দেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে হাইকোর্ট বেঞ্চ।

দীপক মিশ্রের অভিশংসন চেয়ে জমা দেওয়া চিঠির স্বাক্ষরকারী এমপিদের মধ্যে রয়েছেন রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস, শারদ পাওয়ারের নেতৃত্বে ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি), সীতারাম ইয়েচুরির কমিউনিস্ট পার্টি-মার্ক্সিস্ট (সিপিএম), মায়াবতীর নেতৃত্বে বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি)। আছেন কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া ও মুসলিম লিগের এমপিরাও।

উপ-রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি দেওয়ার পর সংবাদ সম্মেলন করে কংগ্রেসের জ্যেষ্ঠ নেতা কপিল শৈবাল বলেন, প্রধান বিচারপতি পদে দীপক মিশ্র দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই তার কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তার বিরুদ্ধে জানুয়ারিতে চার বিচারপতির সংবাদ সম্মেলন তেমনই একটি নজির। চার বিচারপতির উদ্বেগের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল বিচারপতি নিয়োগের কার্যপ্রণালী না মানা। …তাই এই পদে তার অভিশংসন সবার দাবি।

১২ জানুয়ারি চার জ্যেষ্ঠ বিচারপতির ওই সংবাদ সম্মেলনের পরই অবশ্য প্রধান বিচারপতি পদ থেকে দীপক মিশ্রকে অভিশংসনের দাবি উঠেছিল। এরপর বিচারক লয়ার মৃত্যু তদন্তে ফেব্রুয়ারিতে বিরোধীরা মিলে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে আবেদন জমা দেন। সবশেষ উপ-রাষ্ট্রপতির কাছে দীপক মিশ্রের অভিশংসন দাবির চিঠি জমা দেওয়ার আগে সেই বিরোধী দলগুলো আবার বৈঠকে বসে। এ বৈঠকে নেতৃত্বে ছিলেন কংগ্রেসের জ্যেষ্ঠ নেতা ও লোকসভার বিরোধী দলীয় প্রধান গোলাম নবী আজাদ।

গুজরাটে পুলিশের হাতে আটক হওয়ার পর ২০০৫ সালের নভেম্বরে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ প্রাণ হারান সোহরাবুদ্দিন শেখ নামে এক ব্যক্তি। বিজেপিশাসিত রাজ্যে আলোচিত এই মামলার বিচারকাজ চলছিল সিবিআই’র বিশেষ আদালতে। এই আদালতের বিচারক ছিলেন বিএইচ লয়া।

২০১৪ সালের এপ্রিল-মে মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে কেন্দ্রের সরকার গঠন করে বিজেপি। এর কয়েক মাস পর ১ ডিসেম্বর মহারাষ্ট্রের নাগপুরে সহকর্মীর মেয়ের বিয়েতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান রয়া। সরকার মৃত্যুটি ‘স্বাভাবিক’ বললেও তদন্তকারীদের চোখে এটি ‘রহস্যজনক’। সোহরাব হত্যা মামলার আসামি ছিলেন বিজেপির বর্তমান সভাপতি অমিত শাহ, বিজেপি নেতা ও রাজস্থান রাজ্যের বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গুলাবচাঁদ কাটারিয়া, ব্যবসায়ী ভিমল পাটনি, বিজেপিশাসিত গুজরাট সরকারের সাবেক পুলিশ প্রধান পি সি পান্ডেসহ কয়েকজন।

ভারতের ইতিহাসে কোনো প্রধান বিচারপতির অভিশংসন চেয়ে এমপিদের এভাবে আন্দোলনের ঘটনা নজিরবিহীন। যদিও সংসদের উভয়কক্ষে বিজেপির নিয়ন্ত্রণ থাকায় এমপিদের দাবিটি পূরণের সম্ভাবনা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১৮
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।