ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

কিম-মুনের বৈঠকের বিশেষ ১৩ পয়েন্ট

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১৮
কিম-মুনের বৈঠকের বিশেষ ১৩ পয়েন্ট দুই কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন ও মুন জে-ইনের এই কোলাকুলিই যেন দিচ্ছে ঐক্যের বার্তা

উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার দুই প্রেসিডেন্ট কিম জং-উন ও মুন জে-ইন বৈঠক করেছেন দু’দেশের সীমান্তগ্রাম ‘পানমুনজমে’। সাড়ে পাঁচ দশক আগে শেষ হওয়া কোরিয়া যুদ্ধের পর উত্তরের প্রথম কোনো নেতা হিসেবে দক্ষিণে গিয়ে শুক্রবার (২৭ এপ্রিল) এ বৈঠক করেন কিম। বৈঠকের পর শান্তির বার্তায় দেওয়া হয়েছে এক যৌথ ঘোষণা। গোটা বিশ্ব এখন এই ঘোষণার প্রশংসায় পঞ্চমুখ। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক বৈঠকের প্রধান ১৩টি পয়েন্ট।

>> ১. প্রথমে দুই দেশের সীমারেখায় পৌঁছান কিম জং-উন, তাকে সেখানে স্বাগত জানান মুন জে-ইন। তখন অভাবনীয়ভাবে কিম আমন্ত্রণ জানান মুনকে, জবাবে দক্ষিণের নেতা সীমারেখা টপকে উত্তরের মাটিতে পা রাখেন।

দু’জনে করমর্দন করেন, এরপর হাত ধরেই কিমকে সীমারেখা পার করে দক্ষিণে নিয়ে আসেন মুন, কিমকে দেওয়া হয় গার্ড অব অনার। তারপর বসেন বৈঠকে, বৈঠক শেষে হয় যৌথ ঘোষণা।
>> ২. পরমাণুমুক্ত কোরীয় উপদ্বীপ গড়ে তোলার অভিন্ন লক্ষ্য অর্জনে পুরোপুরি পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে সম্মত দুই দেশ।
>> ৩. প্রায় ৬৫ বছর আগে শেষ হওয়া কোরীয় যুদ্ধের আনুষ্ঠানিক অবসানে এবং সংঘাত বন্ধে শান্তি চুক্তি করবে দু’পক্ষ। যেখানে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনসহ আঞ্চলিক শক্তিগুলোর সহযোগিতা থাকবে।
>> ৪. উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার সীমান্তবর্তী যৌথ শিল্পাঞ্চল ‘কায়েসংয়ে’ দু’পক্ষের ‘লিয়াজোঁ’ অফিস গঠিত হবে। এই শিল্পাঞ্চলে কার্যক্রম রয়েছে দুই কোরিয়ারই। সংঘাতময় পরিস্থিতিতে আগে এই শিল্পাঞ্চল বন্ধ করে দেওয়া হতো।
>> ৫. জাতীয় পুনর্মিলন ও ঐক্যের স্বার্থকে সর্বাগ্রে বিবেচনার জন্য দু’পক্ষ সর্বস্তরে সহযোগিতা, বিনিময়, সফর ও যোগাযোগকে আরও বেশি উৎসাহিত করবে।
>> ৬. দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইন চলতি বছরের শেষ দিকেই পিয়ংইয়ং সফর করবেন। তার আগে মে অথবা জুনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করবেন উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং-উন।
>> ৭. দু’পক্ষ আগামী ১৫ জুন একটি বিশেষ সভায় বসবে।
>> ৮. উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া এশিয়ান গেমসের মতো আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আসরে যৌথভাবে অংশ নেবে। এবার ১৮ আগস্ট থেকে ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইন্দোনেশিয়ায় বসবে এশিয়ান গেমসের আসর।
>> ৯. কোরীয় উপদ্বীপের বিভাজনে আলাদা হয়ে যাওয়া দুই দেশের নাগরিকদের পরিবারের স্বজনদের সঙ্গে পুনর্মিলনে প্রতিবছরের ১৫ আগস্ট জাতীয় অনুষ্ঠান হবে সীমান্তে।
>> ১০. সীমান্তে হামলা বা সামরিক কর্মকাণ্ড বন্ধ এবং উত্তেজক যে কোনো ধরনের প্রচার-প্রচারণা বন্ধ করবে দু’পক্ষ।
>> ১১. দু’দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পর্যায়ে নিয়মিত বৈঠক হবে।
>> ১২. বৈঠকের প্রাপ্তি নিয়ে কিমের বক্তব্য, ‘আমরা সবাই এই মুহূর্তের জন্য দীর্ঘ-প্রতীক্ষায় ছিলাম। আমি আশা করি দুই কোরিয়া আবার ‘পুনর্মিলিত’ হবে। শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য যে ঐতিহাসিক আলোচনা হয়েছে, তার বাস্তবায়ন আর দীর্ঘায়িত হতে পারে না। ’ আর মুনের বক্তব্য, ‘কোরীয় উপদ্বীপে আর কখনও যুদ্ধ হবে না। এখান থেকেই শান্তির নবযুগের সূচনা হলো। ’
>> ১৩. এই শান্তির অগ্রবার্তাকে স্বাগত জানিয়ে পৃথক বিবৃতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া ও জাপান।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১৮
এইচএ/

আরও পড়ুন
** পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে একমত দুই কোরিয়া
** কোরিয়া যুদ্ধের আনুষ্ঠানিক অবসানে এ বছরই চুক্তি
** দক্ষিণ কোরিয়ায় গেলেন উত্তরের নেতা কিম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।