ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

থাই গুহা থেকে কোচসহ খুদে ফুটবলার সবাইকে উদ্ধার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০২ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০১৮
থাই গুহা থেকে কোচসহ খুদে ফুটবলার সবাইকে উদ্ধার উদ্ধারের পর ফিল্ড হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে আটকে পড়া কিশোরদের। ছবি: সংগৃহীত

দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে থাইল্যান্ডের থাম লুয়াং গুহায় আটকে পড়া ১২ জন কিশোর ফুটবলার ও তাদের কোচকে উদ্ধার করেছেন ডুবুরীরা। তিন দিন ধরে চলা এ উদ্ধার অভিযানে মঙ্গলবার (১০ জুলাই) পাঁচজনকে উদ্ধার করা হয়। অত্যন্ত কঠিন ও বিপদজনক অভিযানের মাধ্যমে গুহা থেকে তাদের নিরাপদে বের করে আনেন ব্রিটিশ ও থাই ডুবুরীরা।

থাই নেভি সিলের ফেসবুক পেজে বলা হয়, ১৮ দিনের কঠোর পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যাওয়া ১২ জন কিশোর ও তাদের কোচকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং তারা নিরাপদে রয়েছেন।  

তৃতীয় দিনের অভিযান শুরু হয় মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে।

উদ্ধার অভিযানের প্রথম দুই দিন ৮ জনকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হওয়া আটজনকে গুহার পাশেই চিয়াং রাই মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা জানান, তারা মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থ আছে।

গত ২৩ জুন বার্ষিক ভ্রমণে থাইল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলে পাহাড়ি এলাকায় গিয়ে হারিয়ে যায় ১১-১৬ বছর বয়সী ১২ ফুটবলার ও তাদের কোচ। পরে ২ জুলাই উত্তরাঞ্চলের চিয়াং রাই প্রদেশের থাম লুয়াং গুহায় তাদের সন্ধান পায় উদ্ধারকারী দল।  

গুহায় বৃষ্টির পানি প্রবেশ করলে বের হওয়ার রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। বৃষ্টির পানি আরও বৃদ্ধি পেতে থাকলে গুহার ভেতরের দিকে অবস্থান নেয় তারা। অতঃপর ব্রিটিশ ডুবুরীরা বিপদসংকুল এ গুহার কয়েক কিলোমিটার ভেতরে কর্দমাক্ত চেম্বারে এই ১৩ জনের সন্ধান পান।  

কিন্তু সাপের মতো আঁকাবাঁকা এ গুহায় তখনই ঝুকিপূর্ণ উদ্ধার অভিযান চালানো সম্ভব হয় না। অন্ধকার এ গুহার একেক জায়গা একেক রকম। কোনো জায়গা পানিতে টইটম্বুর, আবার কোনো জায়গা অনেক উঁচু। কোনো কোনো জায়গা একদম সরু। সেখান থেকে বেরিয়ে আসার জন্য দক্ষ সাঁতারু হওয়া দরকার। কৃত্রিম উপায়ে সেখান থেকে পানি সরাতে গেলেও সফল কিছু হওয়ার ছিল না।

আটকে পড়াদের জীবনের ঝুঁকিও দিন দিন বাড়তে থাকে। গুহার অক্সিজেন কমে আসতে থাকে। শনিবার (৭ জুলাই) গুহার অক্সিজেনের পরিমাণ ১৫ শতাংশে নেমে আসে, স্বাভাবিকভাবে যা ২১ শতাংশ প্রয়োজন। উদ্ধার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে, গুহায় অক্সিজেন ও খাবার সরবরাহ করা হয়।

এদিকে আটকে পড়াদের অক্সিজেন সরবরাহ করতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেন এক থাই ডুবুরী। থাই নৌবাহিনী থেকে অবসর নেওয়া ৩৮ বছর বয়সী ওই ডুবুরীর নাম সামান গুনাম। খুদে ফুটবলারদের অক্সিজেন দিয়ে ফেরার সময় তার ট্যাংকে অক্সিজেন ফুরিয়ে যায় এবং অচেতন হয়ে পড়েন। অন্য ডুবুরীরা তাকে উদ্ধার করেন। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৫ জুলাই) দিনগত রাত ২টায় তার মৃত্যু হয়।

উদ্ধার অভিযানের আগে, আটকে পড়া কিশোরদের ডুব সাঁতার শিখতে হয়। ডুবুরীরা তাদের ডুব সাঁতার শেখান। কারণ স্বাভাবিক নিয়মে পানির স্তর কমে আসতে আরও চার মাস সময় লাগবে। এই চার মাস সেখানে অবস্থান হয়ে উঠত আরও কষ্টকর।

রোববার (৮ জুলাই) স্থানীয় সময় সকাল ১০টা থেকে শুরু হয় উদ্ধার অভিযান। চারজনকে উদ্ধার করে রাত ৯টায় তা স্থগিত ঘোষণা করা হয়। ভেতরে রয়ে যায় আরও নয়জন।  

এরপর সোমবার (৯ জুলাই) সকাল ১১টা থেকে আবারও অভিযানে নামে যৌথ ডুবুরীরা। পরে চারজন উদ্ধার করে সেদিনের মতো অভিযান স্থগিত রাখা হয়। মঙ্গলবার অভিযানে নেমে বাকি পাঁচজনের মধ্যে প্রথমে তিনজন পরে বাকি দুইজনকে উদ্ধার করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৭ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০১৮
এনএইচটি
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।