ইসলামাবাদ: পরমাণু অস্ত্রের প্রকৃত সংখ্যা গোপন করার লক্ষ্যে সাধারণ ট্রাকে করে সেগুলো অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে পাকিস্তান।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি সাময়িকী এই দাবি করে গত শুক্রবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের আশঙ্কা, পরমাণু অস্ত্র নিরোধের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র তাদের সঙ্গে বৈষম্য করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র গত ২ মে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে অভিযান চালিয়ে আল কায়েদা প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে হত্যার পর এই সন্দেহ আরও প্রবল হয়েছে।
অনেক শক্তিশালী মারণাস্ত্র সাধারণ ট্রাকে করে খুব দূর্বল নিরাপত্তা ব্যবস্থা বা কোনো ধরনের নিরাপত্তা ছাড়াই অন্যত্র বহন করা হচ্ছে। অস্ত্রগুলো যতোটা সম্ভব মার্কিন গোয়েন্দাদের দৃষ্টির আড়ালে নেওয়ার চেষ্টা করছে পাকিস্তান।
এই স্থানান্তরের পথে অস্ত্রগুলো খুব সহজেই সন্ত্রাসীদের কবলে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিদেশি গোয়েন্দাদের ধারণা, পাকিস্তানের অস্ত্রাগারে বর্তমানে ১১০টি পরমাণু অস্ত্র রয়েছে।
পাকিস্তানের স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যান ডিভিশনের (এসপিডি) সাবেক প্রধান খালিদ কিদোয়াই বলেছেন, ‘অস্ত্রগুলো বিভিন্ন জায়গায় স্থানান্তর করতে এবং খুব স্পর্শকাতর অস্ত্র ও সামরিক উপাদাগুলো আলাদা সংরক্ষণাগারে নেওয়ার জন্য তার সংস্থার দক্ষতা বাড়ানো হচ্ছে।
পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্রের সংরক্ষণ, ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে এসপিডি।
তবে পরমাণু অস্ত্রগুলো এমনভাবে স্থানান্তর করা হচ্ছে যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। যেসব রাস্তা দিয়ে এগুলো বহন করা হচ্ছে তা খুবই বিপজ্জনক।
এগুলোর মধ্যে এমন শক্তিশালী কিছু অস্ত্র রয়েছে যা পুরো শহরকে নিমেষে ধ্বংস করে দিতে পারে।
অস্ত্র স্থানান্তর যে হারে হচ্ছে তাতে করে পেন্টাগনের উদ্বেগ দিন দিন বাড়ছে।
এই প্রতিবেদন বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি পেন্টাগন। তবে একজন জ্যেষ্ঠ মাকির্ন সামরিক কর্মকর্তা শুক্রবার ওয়াশিংটনে সাংবাদিকদের বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনও বিশ্বাস করে, পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্র নিরাপদে রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেছেন, ‘আমার বিশ্বাস, পাকিস্তানের অস্ত্রাগার এখন নিরাপদ, প্রহরি বেষ্টিত এবং খুব ভালভাবে রক্ষিত রয়েছে। ’
সাময়িকীর এই প্রতিবেদনটি পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ডজনখানেক সামরিক ও গোয়েন্দা কর্মকর্তার সাক্ষাৎকার নিয়ে তৈরি করা হয়েছে।
সাক্ষাৎকারে অনেকে বলেছেন, পাকিস্তানে সম্ভাব্য সামরিক অভ্যুত্থান বা এর চেয়ে কোনো খারাপ পরিস্থিতে দেশটির পরমাণু অস্ত্র অকেজো করে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের।
এদিকে চীনের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক দিন দিন ঘনিষ্ঠ হচ্ছে। দেশটি ক্রমেই ওয়াশিংটনের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। তবে সাক্ষাৎকারে একজন বলেছেন, এ বিষয়টি নিয়ে এক গোপন বৈঠকে সমঝোতায় পৌঁছেছে চীন-মার্কিন।
যুক্তরাষ্টের একটি সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র যদি পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্রের নিরাপত্তা দিতে চায় তাহলে, বেইজিং আপত্তি করবে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৩ ঘণ্টা, নভ্ম্বের ০৫, ২০১১