মাইকেল জ্যাকসনকে হত্যাই করা হয়েছে। আর সেটা এখন প্রমাণিত।
১২ সদস্যের জুড়ি বোর্ড সর্বসম্মতিক্রমে মাইকেল জ্যাকসনের মৃত্যুকে হত্যা বলে মত দেন। চ’ড়ান্ত রায় দিতে তারা সময় নেন ৯ ঘণ্টা। এর আগে ছয় সপ্তাহ ধরে চলে বিচার কাজ। তাতে তারা নিশ্চিত হন এন্সথেটিক প্রোপোফল-এর অতিরিক্ত ডোজ দিয়েই মাইকেল জ্যাকসনকে হত্যা করা হয়।
জুড়িদের এই রায়ে খুশি মাইকেল জ্যাকসনের পরিবার। লস এঞ্জেলসের আদালত কক্ষে স্থানীয় সময় রাত ৯টা ১৭ মিনিটে যখন রায় পড়ে শোনানো হয় তখনই সেখানে উপস্থিত পপ তারকার বোন লা টোয়া ‘ইয়েস’ বলে চিৎকার করে ওঠেন।
আদালতের বাইরেও তখন জ্যাকসনের হাজারো ভক্ত। তারাও খবর শুনে আনন্দে চিৎকার করছিলো আর মাইকেল জ্যাকসনের ছবি সম্বলিত ব্যনার দোলাচ্ছিলো।
উচ্চ আদালতের বিচারক মাইকেল প্যাসটর কনরাড মারে’র জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেন। তিন সপ্তাহের মধ্যে তার সাজা কি হতে যাচ্ছে তা জানাবে আদালত। ধারনা করা হচ্ছে মারের চার বছরের জেল হতে পারে।
বিচারক এসময় কনরাড মারের উদ্দেশ্যে বলেন: ‘মানুষকে রক্ষা করতে হবে। আপনার অপরাধ একটি মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে। ’ এই উচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গে তিনজন পোশাকধারী নিরাপত্তা কর্মী চিকিৎসককে ঘিরে ফেলে এবং তার হাত দুটি পিঠমোড়া করে দ্রুত হাতকড়া পরিয়ে দেয়।
এসময় তার আইনজীবী এড চেরনফকে মুষড়ে পড়তে দেখা গেলো।
মাইকেল জ্যকসনের বাবা জো, মা ক্যাথরিন ও ভাইবোনদের মধ্যে র্যানডি, জারমেইন, রেবি ও লা টোয়া আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
জারমেইন বলছিলেন, বিচারের বানী শুনিয়ে দেওয়া হয়েছে। মাইকেল আমাদের সাথেই আছে।
লা টোয়াকে খুব উচ্ছ্বসিত লাগছিলো। তিনি বলছিলেন, ‘থ্যাঙ্ক ইউ আমেরিকা। থ্যাঙ্ক অল দ্য ফ্যানস। ’
বিচারকদেরও ধন্যবাদ জানান লা টোয়া। তিনি বলেন, ‘মাইকেল সবাইকে ভালোবাসতো, আমরাও তাকে ভালোবাসি। আদালত কক্ষেও মাইকেল আমাদের সাথে ছিলো আর তাই তার পক্ষেই বিজয় এসেছে। ’
জানা গেছে জ্যাকসনের সন্তান প্রিন্স, ১৪, প্যারিস ১৩ ও ব্ল্যাককেট ৯ তিনজনকেই তাদের দাদী ক্যাথরিন টেলিভিশনে মামলার রায় দেখতে বারণ করেছিলেন, যাতে তিনি নিজেই তাদের কাছে রায়ের কথা জানাতে পারেন।
২০০৯ সালের ২৫ জুন হাসপাতাল কক্ষে চিকিৎসক কনরাড মারে শরীর অবশ করে দেওয়ার ওই ভয়ঙ্কর ওষুধটি মাইকেল জ্যাকসনের শরীরে পুশ করে কিভাবে তাকে ফেলে রেখে চলে গিয়েছিলেন তার বর্ননা তুলে ধরা হয় আদালতের সামনে। অবশ্য মুরের ভাষ্য জ্যাকসন নিজেই নিজের শরিরে তা পুশ করেছিলেন।
রায়ের পর মারে কে আদালতের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়।
ডক্টর ডেথ
কনরাড মারে মাইকেল জ্যাকসনের চিকিৎসার জন্য মাসে ৯৬ হাজার পাউন্ড নিতেন। আর সেই চিকিসা সেবার পরিণতি আসে মাইকেলের মৃত্যু দিয়ে। অথচ লজ্জাজনকভাবে তিনি দাবি করেন, বিশ্বসেরা এই থ্রিলার স্টার নিজেই নিজের শরীরে এনেসথেটিক পুশ করেন। কিন্তু তার কথা যে পুরোটাই মিথ্যা তা জানতে আর বাকি নেই। মারে নিজের হাতেই মাইকেলের দেহে শরীর অবশ করার ওই ওষুধ পুশ করে দেন যা তার মৃত্যুই নিশ্চিত করে।
তিন প্রেমিকার ভালবাসার জালে ব্যক্তিগত জীবনে বিপর্যস্ত হয়েই মারে বিশ্বখ্যাত সঙ্গীত তারকার চিকিৎসাকেও তুচ্ছজ্ঞান করে তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। মারে সেদিন ভোরে ১০০ মিলিগ্রাম এনেসথেটিক প্রোপোফল পুশ করেছিলেন মাইকেলের শরীরে। বড় ধরনের কোনো সার্জারির আগেই কেবল মানব শরীরে এতটা ডোজ দেওয়া সম্ভব।
বাংলাদেশ সময় ১২৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৮, ২০১১