ওয়াশিংটন: বিশ্ববাসীকে আরও ভয়াবহ এবং অচিন্ত্যনীয় প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য প্রস্তুত হওয়ার জন্য বলেছেন বিজ্ঞানীরা। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় জলবায়ু বিজ্ঞানীরা আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত এক আলোচনা অনুষ্ঠান থেকে এই ঘোষণা দিয়েছেন।
দাবদাহ, খরা, বন্যা, জলোচ্ছাস, ঘূর্ণিঘড়ের মতো প্রলয়ংকরী সব প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সম্মুখীণ হতে পারে পৃথিবী সামনের দিনগুলোতে। আর তাই বিজ্ঞানীরা জীবন এবং অর্থ বাঁচানোর জন্য সর্বাত্বক ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য বলেছেন।
বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে ঘটতে পারে প্রাকৃতিক বিপর্যয়। এমনকি বিশাল সংখ্যক মানুষ হতে পারে গৃহহীন। তবে একই সঙ্গে মানবসম্পদ হানিরও সম্ভাবনা রয়েছে অনেক।
নোবেল পুরস্কার বিজয়ী সংগঠন ইন্টারগর্ভমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ গত শুক্রবার উগান্ডায় আলোচনা পরবর্তীতে এই নতুন রিপোর্ট প্রকাশ করেছে।
এবারই প্রথম বিশ্বের শীর্ষ স্থানীয় পরিবেশ বিজ্ঞানীরা একসঙ্গে পরিবেশ বিপর্যয় নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করলেন।
দ্য ওয়াশিংটন পোস্টে ওই রিপোর্টের বরাত দিয়ে বলা হয়, ‘পরিবেশ পরিবর্তনের ফলে প্রাকৃতিক ভারসম্যহীনতা এবং দুর্যোগ হওয়ার সম্ভাবনা ৬৬ শতাংশ বেড়ে গেছে। কারণ ফসিল ফুয়েল এবং মানবসৃষ্ট অন্যান্য কারণে কার্বণ নি:সরনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় ঝুঁকির পরিমান বেড়েছে। ’
ওই রিপোর্টের বরাত দিয়ে পোস্টে আরও বলা হয়, ‘আবহাওয়ার কারণে অর্থনৈতিক ক্ষতি এবং দুর্যোগ সম্ভাবনা দিন দিন বাড়ছেই। ’
ন্যাশনাল সেন্টার ফর অ্যাটমোসফেয়ার রিসার্চের জেষ্ঠ্য বিজ্ঞানী জেরাল্ড মিল এক সাক্ষাতকারে বলেন, ‘আসলে তাপমাত্রার ছোটো একটা পরিবর্তন পুরো আবহাওয়ার ওপর বিশাল প্রভাব ফেলতে পারে। যার ফল হতে পারে ভয়ানক। তবে রুঢ় হলেও সত্য, গড় তাপমাত্রা দিন দিন বাড়ছেই। আর এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে উষ্ণতা বেড়ে যাবে বহুগুন এবং ঠান্ডা অনেক কম পড়বে। ’
গত আগস্ট মাসে যুক্তরাষ্ট্র সরকার জানায়, জলবায়ুজনিত বিপর্যয়ের কারণে প্রতি বছর এক কোটি ডলারেরও বেশি অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে তাদের। (সূত্র: ফল অ্যারাইভস লেট ইন সাম সাউথওয়েস্ট্রার্ন পকেটস)
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ জেফ মাস্টার্স বলেন, ‘আবহাওয়াবিদ হিসেবে আমি গত ত্রিশ বছর ধরে কাজ করছি। কিন্তু ২০১১ সালের মতো আবহাওয়ার বিপর্যয় আমি কখনও দেখিনি। ’
ফ্রেইডবার্গ নামের আরেক পরিবেশবিদ বলেন, হারিকেন সম্পর্কে আমাদের যে অভিজ্ঞতা তার চেয়েও ভয়াবহ কিছু অপেক্ষা করছে সামনের দিনগুলোতে। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে হারিকেন ক্যাটরিনা বা আইলার চেয়েও ভয়ংকর হবে এগুলো। প্রায় প্রতিটি অঞ্চলেই পৃথক পৃথকভাবে হতে পারে ঝড় ঝঞ্জাসহ নানান বিপর্যয়। এছাড়াও বন্যা পরিস্থিতি চরম আকার ধারন করবে। আর এই বিপর্যয়ের শিকার হবে তৃতীয় বিশ্বের গরীব দেশগুলো।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১১