ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

‘পাইলটকে ফেরত দাও, টিভি উপস্থাপকদের নিয়ে যাও’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৯
‘পাইলটকে ফেরত দাও, টিভি উপস্থাপকদের নিয়ে যাও’

ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনার দমকা হাওয়া বইছে দু’দেশের মিডিয়া পাড়ায়। উভয়পক্ষই স্বদেশি বাহিনীর সামরিক দক্ষতা তুলে ধরার পাশাপাশি প্রতিপক্ষের দুর্বলতা ও অপপ্রচারের কথা জানাচ্ছে দর্শক-শ্রোতাদের। তবে এক্ষেত্রে মিডিয়ার ভূমিকা বাড়াবাড়ি বলে মনে হচ্ছে অনেকের কাছে। তারা মনে করছেন, ‘সীমান্তের উত্তেজনাকে’ যুদ্ধে গড়ানোর জন্য সংবাদ প্রচারে ‘সেনসেশন’ তৈরি করতে চাইছেন সংবাদের প্রচারকরা। বিশেষ করে টেলিভিশনগুলোর উপস্থাপক-উপস্থাপিকাদের ‘অতি-উৎসাহ’ অনেকের কাছেই বিরক্তিকর ঠেকছে।

সেই বিরক্তি চেপে রাখতে পারলেন না মুম্বাইয়ের লেখক ও সংবাদ-বিশ্লেষক বৈভব বিশাল। বুধবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) পাকিস্তানে বিমান হামলা চালাতে গিয়ে ভারতের বৈমানিক উইং কমান্ডার অভি নন্দন আটক হওয়ার পর তার মুক্তি চাইতে গিয়ে এ বিরক্তি প্রকাশ করেন বৈভব।

নিজের ভেরিফায়েড টুইটার অ্যাকাউন্টে এই গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব বলেন, ‘প্রিয় পাকিস্তান... উইং কমান্ডার অভি নন্দন ভারত্মকে আমাদের কাছে ফেরত দাও। এর বদলে আমাদের সংবাদ উপস্থাপকদের নিয়ে যাও। এদের সবাইকে নিয়ে যাও। তোমাদের কাছেই রেখে দাও। এরপর এদের সঙ্গে যা করার করো। আর এদের কখনোই আমাদের কাছে ফেরত পাঠিয়ো না, কখনো না। দয়া করো, সদয় হও!’

তার এ টুইটার পোস্টটি রিটুইট হয়েছে সাড়ে ৭ হাজারেরও বেশি বার। এতে লাভ রিঅ্যাক্ট পড়েছে ২৪ হাজার। আর মন্তব্য পড়েছে ৩ হাজারেরও বেশি। লেখক ও সংবাদ-বিশ্লেষক বৈভব বিশালের টুইটএতে পাকিস্তানের সংবাদ উপস্থাপক জাবেরিয়া সিদ্দিক মন্তব্য করেন, ‘আমরা ওদের চাই না, কারণ তারা জেনোফোবিয়ায় (বিদেশ-বিদ্বেষ) ভুগছে। ’

পাকিস্তানের সেরাজ আহমেদ নামে আরেকজন তার দেশেও এমন ‘অতি-উৎসাহী’ উপস্থাপক থাকার কথা উল্লেখ করেন। তিনি তার মন্তব্যে বলেন, ‘দু’দেশের জন্যই ব্যাপারটা সহজ হয়ে যাক, এদের সবাইকে ভারত মহাসাগরে নিক্ষেপ করা হোক... কী বলেন?’

এর জবাবে বৈভব বলেন, ‘আমি এরইমধ্যে ভারত মহাসাগরের সবচেয়ে গভীর জায়গাটি গুগলে খুঁজতে শুরু করেছি, সেরাজ’।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকেলে কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলায় ভারতের বিশেষায়িত নিরাপত্তা বাহিনী সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের (সিআরপিএফ) গাড়িবহরে ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় ৪৪ জওয়ান নিহত হন।

জঙ্গিদের মদত দেওয়ার জন্য ইসলামাবাদকে অভিযুক্ত করে এর মোক্ষম জবাব দিতে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ভোরের দিকে পাকিস্তানের বালাকোট শহরে জঙ্গি গোষ্ঠী জইশ-ই-মোহাম্মদের আস্তানায় হামলা চালায় ভারতীয় বিমান বাহিনী। হামলায় প্রায় ৩০০ জঙ্গি নিহত হয় বলে দাবি করে ভারত। এর একদিন পরই ভারতের দু’টি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত ও পাইলট অভি নন্দনকে আটক করার দাবি করে পাকিস্তান।

অবশ্য বুধবার বিকেলে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ভারতকে সতর্ক করে বলেন, ‘যে অস্ত্র আপনাদের আছে, সে অস্ত্র আমাদেরও আছে। যুদ্ধ বেঁধে গেলে কিন্তু পরিস্থিতি কারোরই নিয়ন্ত্রণে থাকবে না। ’ পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে ভারতকে শান্তির স্বার্থে সংলাপে বসার আহ্বানও জানান তিনি।  

এদিকে বুধবার পাকিস্তানের সোশ্যাল মিডিয়ায় যুদ্ধবিরোধী প্রচারণা শুরু হয়েছে। ‘#সে নো টু ওয়ার’ হ্যাশট্যাগে শুরু হওয়া এ প্রচারণা এখন দেশটিতে এক নম্বর ট্রেন্ড হিসেবে জায়গা পেয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৯
এইচএ/

আরও পড়ুন
** মোদীর ছবিতে চুমু খাওয়ার ভিডিও ভাইরাল

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।