বৃহস্পতিবার (৩০ মে) এক টুইট বার্তায় ডেনাল্ড ট্রাম্প বলেন, আগামী ১০ জুন মেক্সিকো থেকে আসা সব পণ্যে ৫% শুল্ক আরোপ করবে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি থেকে অবৈধ অভিবাসী আসা পুরোপুরি বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে শুল্ক বাড়ানো হবে।
সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্তে অভিবাসী সমস্যা নিয়ন্ত্রণে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এতে সীমান্তরক্ষীরা খুশি হলেও, সমালোচকদের দাবি, অভিবাসীদের সঙ্গে ভুল ও রূঢ় আচরণ করা হচ্ছে।
উত্তর আমেরিকায় নিযুক্ত মেক্সিকোর শীর্ষ কূটনীতিক জিসাস সিয়াদ নতুন এ শুল্ক ব্যবস্থাকে ‘ধ্বংসাত্মক’ বলে মন্তব্য করেছেন।
তিনি বলেন, যদি সত্যিই এটা (শুল্ক) আরোপ করা হয়, তাহলে সেটা কঠোরভাবে প্রতিরোধ করতে হবে।
নির্বাচনী প্রচারণা থেকে শুরু করে ক্ষমতায় বসার পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রায়ই যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে উঁচু দেয়াল নির্মাণে তহবিল সংগহের কথা বলেছেন। গত ফেব্রুয়ারিতে এ তহবিল সংগ্রহের সুযোগ তৈরিতে তিনি সীমান্তে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন। তবে, মে মাসে তার এ প্রচেষ্টা আটকে দেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মেক্সিকোর ওপর নতুন শুল্ক আরোপ করতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আন্তর্জাতিক জরুরি অর্থনৈতিক ক্ষমতা আইনের প্রয়োগ করবেন।
মেক্সিকো ও কানাডার সঙ্গে নতুন বাণিজ্য চুক্তির পরিকল্পনা হচ্ছে, হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে কংগ্রেসে এমনটা জানানোর দিনই নতুন করে শুল্ক আরোপের ঘোষণা আসলো।
এক বিবৃতিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, অক্টোবরের ১ তারিখে শুল্ক বেড়ে ২৫% না হওয়া পর্যন্ত প্রতি মাসে ৫% হারে বাড়তে থাকবে।
বিবৃতিতে অবৈধ অভিবাসীদের ‘এলিয়েন’ আখ্যা দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে মানুষের অনুপ্রবেশ বন্ধ না করা পর্যন্ত শুল্ক বৃদ্ধির এ ধারা অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, বহু বছর ধরে মেক্সিকো আমাদের সঙ্গে ন্যায্য আচরণ করছে না। কিন্তু এখন, সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আমরা আমাদের অধিকার আদায় করে ছাড়বো।
এ সময় বিরোধী ডেমোক্রেটিক নেতাদের বিরুদ্ধে সীমান্তের নিরাপত্তা বিষয়ে অবজ্ঞার অভিযোগ তুলে তাদের জন্যও বিশেষ পরিকল্পনার কথা জানান ট্রাম্প।
এদিকে, ডেমোক্রেট নিয়ন্ত্রিত হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে সীমান্তে দেয়াল নির্মাণচেষ্টা বন্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে। তাদের দাবি, এতে শুধু অর্থের অপচয় হবে, অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধ হবে না।
সমালোচকদের দাবি, ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে সীমান্তরক্ষীরা অতিরিক্ত কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে তারা গত সেপ্টেম্বর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের হেফাজতে ছয় অভিবাসীর মৃত্যুর ঘটনা উল্লেখ করেছেন।
মেক্সিকো মূলত কৃষিপণ্যে উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত হলেও, সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের অসংখ্য প্রতিষ্ঠানের শাখা ও উৎপাদন কেন্দ্র রয়েছে। দেশটিতে প্রতি মাসে হাজার হাজার গাড়ি তৈরি হয়। এছাড়া বিভিন্ন প্রযুক্তি ও মহাকাশ বিষয়ক প্রতিষ্ঠানের অবস্থানও সেখানে। ফোর্ড, জেনারেল মোটরস, জন ডিয়ার, আইবিএম, কোকাকোলাসহ হাজারো বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান আছে মেক্সিকোতে।
ট্রাম্প তার বৈদেশিক নীতি বাস্তবায়নে বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্ক আরোপ পদ্ধতি ব্যবহার শুরু করেছেন। সম্প্রতি, বাণিজ্য ঘাটতির অভিযোগ তুলে চীনের ওপরও নতুন করে শুল্ক আরোপ করেছেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০১৯
একে