শনিবার (২৬ অক্টোবর) নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। এই ‘বিপর্যয়ের’ জন্য জ্বরাক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসায় সিরিঞ্জ পুনর্বার ব্যবহারকারী এক চিকিৎসককে দায়ী করা হচ্ছে।
সংবাদমাধ্যম জানায়, এখন পর্যন্ত ওই শহরের ১১শ’ মানুষের এইচআইভি টেস্ট পজিটিভ এসেছে। এদের মধ্যে প্রায় ৯শ’ শিশু রয়েছে, যাদের সবার বয়স ১২ বছরের কম।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা মুজাফফার ঘাংরো নামে এক শিশুরোগ বিশেষজ্ঞকে দায়ী করে বলছেন, জ্বরাক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসায় ওই চিকিৎসক সিরিঞ্জ পুনর্ব্যবহার করছিলেন বলে আক্রান্তদের এইচআইভি পজিটিভ এসেছে।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা আরও বলছেন, এইচআইভি আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা এর চেয়ে অনেক বেশি। কারণ শহরের বেশিরভাগ বাসিন্দারই এখনো এইচআইভি পরীক্ষা করা হয়নি।
বিষয়টি অনুসন্ধান করার সময় কর্মকর্তারা লক্ষ্য করেন, মুজাফফর শহরের সবচেয়ে দরিদ্র পরিবারগুলোতে শিশুদের চিকিৎসা করেছেন। সেই এলাকা থেকেই এইডসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা শাঈখ জানান, তার দু’বছরের মেয়ের চিকিৎসক ছিলেন মুজাফফর। পরে পরীক্ষা করে দেখা যায় তার মেয়েও এইচআইভি আক্রান্ত।
রাতোদেরো শহরে প্রায় দু’লাখ লোক বাস করেন। তারা পাকিস্তানের সবচেয়ে দরিদ্র ও নিরক্ষর মানুষদেরই অংশ। আর এদের কাছ থেকে চিকিৎসাবাবদ মাত্র ২০ সেন্ট (বাংলাদেশি ১৭ টাকা) নিতেন মুজাফফর।
ইমতিয়াজ জালবানির ছয় শিশুরই চিকিৎসা করেছেন মুজাফফর। তাদের মধ্যে চারজনই এইচআইভি আক্রান্ত। ১৪ মাস বয়সী রিদা ও তিন বছর বয়সী সামিনা মারাও গেছেন।
ইমতিয়াজ বলেন, ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া সিরিঞ্জ উঠিয়ে এনে তার ছয় বছর বয়সী শিশুকে ইনজেকশন দিয়েছেন মুজাফফর। প্রতিবাদ করলে তাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেন ওই চিকিৎসক। বলেন, ‘আপনার নতুন সিরিঞ্জ ব্যবহার করার টাকা নেই বলেই আমি পুরনোটা ব্যবহার করছি। ’ আপত্তি থাকলে অন্য ডাক্তারের কাছেও যেতে বলেন তিনি।
এদিকে চিকিৎসায় অবহেলা ও হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে মুজাফফরকে। যদিও অভিযুক্ত এই চিকিৎসক তার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি একই সিরিঞ্জ একাধিকবার ব্যবহার করিনি’।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৯
এফএম/এইচএ/