ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনায় অনুমোদন দিয়েছেন আগ্রাসনবাদী ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত এই পরিকল্পনাকে একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি’ বলে অভিহিত করে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন নেতানিয়াহু।
যুদ্ধবিরতি ও হামাসের কাছে থাকা জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার পাশাপাশি এই চুক্তির আওতায় প্রথম ধাপে ইসরায়েলও শত শত ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেবে। গাজার কিছু অংশ থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার করা শুরু করবে এবং গাজায় প্রতিদিন ত্রাণ সামগ্রীবাহী ট্রাক প্রবেশ করবে বলে কথা রয়েছে।
এদিকে, গাজায় যুদ্ধবিরতির বিষয়ে নজর রাখতে বহুজাতিক সেনা মোতায়েন করা হবে বলে মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তবে তারা গাজায় প্রবেশ করবে না। যুদ্ধবিরতি এবং অন্যান্য লঙ্ঘন হচ্ছে কি না সেই বিষয়ে নজর রাখবে।
অবশ্য ফিলিস্তিনের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরও গাজার ‘অনেক জায়গায়’ দখলদার ইসরায়েলের বিমান হামলা অব্যাহত রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে বিবিসি জানিয়েছে, শুক্রবার সকালে খান ইউনিসে বিমান হামলা হয়েছে। উত্তরে নেটজারিম করিডোরের আশেপাশেও হামলার খবর মিলেছে। এছাড়া আল-সাব্রা এবং তাল আল-হাওয়া এলাকায় গোলাবর্ষণের কথা জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
রয়টার্সের ফুটেজে স্থানীয় সময় আনুমানিক ভোর ৫টা ৫৫ মিনিটের দিকে আলোর ঝলক এবং তারপরে একটি বিস্ফোরণের দৃশ্য ধরা পড়েছে।
যুদ্ধবিরতির তথ্য প্রকাশ্যে আসার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় আনন্দের মুহূর্ত চোখে পড়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেও আনন্দের বার্তা এসেছে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, গাজায় যুদ্ধবিরতি হবে এবং সেখান থেকে ইসরায়েলি সেনাদের ধাপে ধাপে একটি নির্দিষ্ট এলাকা পর্যন্ত প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। গাজায় সহায়তা ও ত্রাণ সামগ্রীবাহী ট্রাক ঢুকতে দেওয়া হবে।
হামাসের হাতে থাকা জিম্মি ও ইসরায়েলের হেফাজতে থাকা ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে। দুপক্ষই মৃতদেহ ফিরিয়ে দেবে।
গাজায় রয়েছেন এমন ৪৮ জন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে, যাদের মধ্যে ২০ জন এখনো জীবিত রয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে । এই পরিকল্পনার হাত ধরেই ইসরায়েল ১ হাজার ৭০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে।
বিবিসি জানিয়েছে, চুক্তি অনুমোদনের ২৪ ঘণ্টা পর শনিবার (১১ অক্টোবর) ভোরে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।
হামাসের নির্বাসিত গাজা প্রধান খলিল আল-হাইয়া বলেছেন, তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং মধ্যস্থতাকারীদের কাছ থেকে এই বিষয়ে নিশ্চয়তা পেয়েছেন যে যুদ্ধ শেষ হয়ে গিয়েছে।
এইচএ/