ঢাকা: বিশ্বজুড়ে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের তাণ্ডব চলছেই। এই ভাইরাসের প্রকোপে ইতোমধ্যে (সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) বিভিন্ন দেশে আক্রান্ত হয়েছে ২২ কোটি ১৫ লাখ ১৮ হাজার ৪৭৮ জন।
প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ বিশ্ব পরাশক্তি আমেরিকা। দেশটিতে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ৪ কোটি ৮ লাখ ৫ হাজার ২৫৯ জন। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৬৬ হাজার ২১৯ জনের।
মাঝে দেশটিতে সংক্রমণ উল্লেখযোগ্য হারে কমে এলেও আবারও দেশটিতে ক্রমেই বাড়ছে সংক্রমণ। বর্তমানে আবারও ভয়ঙ্কর রূপ নিতে শুরু করেছে এই ভাইরাস। কয়েক সপ্তাহ আগের সংবাদপত্রের শিরোনামে আসে: ‘দৈনিক করোনা সংক্রমণ ফের ১ লাখ ছাড়িয়েছে আমেরিকায়’। এ সপ্তাহে পরিস্থিতি আরও জটিল। গত সাত দিনের গড় দৈনিক সংক্রমণ দেড় লাখ! এমনই খবর দিচ্ছে সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)।
বিশেষজ্ঞেরা বারবারই সাবধান করছেন, গত দেড় বছরে মহামারী এক প্রকার অভ্যাসে পরিণত হলেও এ নিয়ে উদাসীন হওয়া চলবে না। তাদের বক্তব্য, ভাইরাস এখন আরও শক্তি বাড়িয়েছে। সেই প্রতিফলনই ধরা পড়ছে চারপাশে।
সিডিসি জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহে গড়ে প্রতিদিন সংক্রমিত হয়েছে ১ লাখ ৫৩ হাজার ২৪৬ জন। এক বছর আগের কথা ধরলে, এখনকার সংক্রমণ ১২৩.৬ গুণ বেশি। এ বছর ১৮ জুন সবচেয়ে কম সংক্রমণ হয়েছিল আমেরিকায়। সেই দিনের সঙ্গে তুলনা করলে ১২১৭ গুণ।
এ পর্যন্ত ৬২ শতাংশ নাগরিকের টিকাকরণ হয়েছে আমেরিকায়। ২০ কোটি ৫৯ লাখ বাসিন্দা অন্তত টিকার একটি ডোজ পেয়েছেন। টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়েছে ৫২.৭ শতাংশ বাসিন্দার (১৭ কোটি ৫০ লাখ)।
তবে বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন, সংক্রমিতদের বেশিরভাগই টিকা না-নেওয়া ব্যক্তি। বিশেষ করে করোনা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হচ্ছে এই অংশকেই। কিন্তু সেই সংখ্যাটাও কম নয়। ২৫ আগস্ট থেকে ৩১ আগস্টের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি তার আগের সপ্তাহের তুলনায় প্রায় ১৭ শতাংশ বেড়েছে। মৃত্যুও বেড়েছে ৩.৭ শতাংশ। গড় দৈনিক মৃত্যু ১০৪৭।
ক্যালিফর্নিয়ার কিছু হাসপাতালের আইসিইউয়ে শয্যা ফাঁকা নেই। চিকিৎসকরা বলছেন, ভাইরাস আরও সংক্রামক হয়ে উঠেছে। বেশ কিছু হাসপাতালকে ইতিমধ্যে রোগী এলে অন্যত্র পাঠিয়ে দিতে হচ্ছে। ফ্রেসনো কাউন্টি ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলোর হাসপাতালে জানানো হয়েছে, এক মাসের আগের পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনা করলে, রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে গেছে। চিকিৎসকরা বারবার বলছেন, পরিস্থিতির আরও অবনিত ঘটলে আইসিইউয়ে ফাঁকা শয্যার সংখ্যা অচিরেই শূন্য হয়ে যাবে। ক্যালিফর্নিয়ার সেন্ট্রাল ভ্যালিতে এখনই শয্যার অভাব দেখা যাচ্ছে। সান জোয়াকিন ভ্যালির অবস্থাও খারাপ। ক্যালিফর্নিয়ার টিকাকরণ হার অবশ্য দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ। গভর্নর গেভিন নিউসম জানিয়েছেন, ১২ বছরের ঊর্ধ্বে বাসিন্দাদের মধ্যে ৮০ শতাংশ অন্তত ১টি ডোজ পেয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও করোনা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তির ঘটনা এই প্রদেশে বাড়ছেই। যদিও নিউসমের দাবি, ‘হাসপাতালে ভর্তি যতই বাড়ুক, এখনকার পরিস্থিতি প্রাথমিকভাবে টিকাবিহীনদের মহামারী। ’
বাংলাদেশ সময়: ০৯০২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৬, ২০২১
এনটি