পূর্ব জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে ইহুদিদের নীরব প্রার্থনার অনুমতি দিয়েছে ইসরায়েলের একটি আদালত। ওই রায়ে বলা হয়েছে—আল-আকসায় ইহুদিদের প্রার্থনা করা অপরাধমূলক কোনো কাজ নয়।
বুধবার (৬ অক্টোবর) জেরুজালেম ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক বিলহা ইয়াহালোম এই রায় দেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে লন্ডন ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম মিডল ইস্ট আই।
রায়ে বিচারক ইয়াহালোম বলেন, আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে ইহুদিদের প্রার্থনা ‘অপরাধমূলক কাজ’ হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না, কারণ এটি নীরব থাকে। সেক্ষেত্রে এটি পুলিশের নির্দেশ লঙ্ঘন করে না।
এর আগে আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রার্থনার চেষ্টা করেন ইহুদি ধর্ম যাজক রাব্বি আরেহ লিপ্পো। সে সময় তাকে ওই স্থানে ইহুদিদের প্রার্থনার ওপর নিষেধাজ্ঞার কথা জানায় পুলিশ। পরে এ নিয়ে তিনি আদালতে আপিল করেন। সেই আপিলের রায়েই এমনটি জানালেন বিচারক।
সম্প্রতি আল-আকসা পরিদর্শনের সময় ইহুদিরা সেখানে নীরব প্রার্থনা শুরু করে। এ ঘটনা আলোচনায় আসার পর প্রথমবারের মতো এমন সিদ্ধান্ত দিলো ইসরায়েলের আদালত।
এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন ডানপন্থী ইসরায়েলি আইনজীবী মোশে পোলস্কি। তবে ফিলিস্তিন ও পার্শ্ববর্তী দেশ জর্ডানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এই রায়ের মাধ্যমে আল-আকসা মসজিদের ঐতিহাসিক ও আইনগত মর্যাদার গুরুতর লঙ্ঘন হয়েছে। এটি ইসরায়েলের প্রকাশ্য আগ্রাসনের আরেকটি নমুনা। ১৯৪৮ সাল থেকে পূর্ব জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদের তত্ত্বাবধানে রয়েছে জর্ডান। জর্ডান সরকার পরিচালিত জেরুজালেম ইসলামিক ওয়াকফ ইসরায়েলি আদালতের এই রায়ের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
আল-আকসা মসজিদ মুসলমানদের জন্য বিশ্বের তৃতীয় পবিত্রতম স্থান। ইহুদিদের কাছে স্থানটি ‘টেম্পল মাউন্ট’ নামে পরিচিত। সাধারণত, ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীরা প্রতিদিন সকালে এবং বিকালে আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণের দক্ষিণ-পশ্চিমে আল-মুগরবি গেট দিয়ে প্রবেশ করে। এরপর সেখানে তারা প্রার্থনা করে। ইসলামিক এনডাউমেন্ট বিভাগের নিন্দা সত্ত্বেও ইসরায়েলি পুলিশ ২০০৩ সালে বসতি স্থাপনকারী ইহুদিদের সেখানে প্রবেশের অনুমতি দিতে শুরু করে।
১৯৬৭ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের সময় পূর্ব জেরুজালেম দখল করে ইসরায়েল। এখানেই অবস্থিত আল-আকসা মসজিদ। ১৯৮০ সালের মধ্যে তারা পুরো শহর দখল করে নেয়। তবে বিশ্ব সম্প্রদায় ইসরায়েলের এই দখলদারিত্বকে স্বীকৃতি দেয়নি।
বাংলাদেশ সময়:১৫৩৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ৭, ২০২১
এনএসআর