ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

সদকাতুল ফিতরের প্রয়োজনীয় মাসয়ালা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪২ ঘণ্টা, জুলাই ৫, ২০১৬
সদকাতুল ফিতরের প্রয়োজনীয় মাসয়ালা

সদকাতুল ফিতর একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত।   যা রমজান মাসের শেষে ঈদুল ফিতরের দিন আদায় করতে হয়।

এখানে সদকাতুল ফিতরের প্রয়োজনীয় মাসয়ালা উল্লেখ করা হলো-

সদকাতুল ফিতরের নেসাব
মাসয়ালা:
সদকাতুল ফিতরের নেসাব জাকাতের নেসাবের সমপরিমাণ, অর্থাৎ ঋণ বাদ দিয়ে সাড়ে সাত ভরি সোনা বা সাড়ে বয়ান্ন ভরি রূপা বা তার সমমূল্যের নগদ অর্থ বা ব্যবহারের অতিরিক্ত জিনিষ-পত্র অথবা খোরপোশের প্রয়োজনাতিরিক্ত জমি ঈদুল ফিতরের দিন তার নিকট থাকলে তার উপর সদকাতুল ফিতর ওয়াজিব হবে। তবে এতে জাকাতের ন্যায় বর্ষ অতিক্রম হওয়া শর্ত নয়। -ফাতহুল কাদির: ২/২৮১, ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া: ১৯১, আদ্দুররুল মুখতার: ১/১৪৩

মাসয়ালা: মৌলিক নিত্যপ্রয়োজনীয় খরচ বাদ দিয়ে প্রত্যেকে নেসাব পরিমাণ অর্থ বা সম্পদের মালিক হওয়া সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব হওয়ার পূর্বশর্ত। যৌথ সম্পদ বা যৌথ উপার্জন ধর্তব্য নয়। -মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: ১০/৪৯৪, মাবসুতে সারাখসি: ২/১৮৫

মাসয়ালা: নাবালেগ বাচ্চাদের বাবা যদি ওই পরিমাণ সম্পদের মালিক হয় তাহলে পিতার ওপর তাদের পক্ষ থেকেও সদকাতুল ফিতর আদায় করা ওয়াজিব। -বাদায়েউস সানায়ে: ২/৭০

ফিতরা যাদের দেওয়া যাবে
মাসয়ালা:
যাদের জাকাত দেওয়া যায় তাদেরকে ফিতরাও দেওয়া যায়। যাদেরকে জাকাত দেওয়া যায় না তাদেরকে ফিতরাও দেওয়া যায় না। নিজের ঊর্ধ্বতন যথা বাবা-মা, দাদা-দাদি, নানা-নানি ও তাদের বরাবর উপরে এবং অধঃস্তন যথা ছেলে-মেয়ে, নাতি-নাতনি ও তাদের বরাবর নীচে কাউকে ফিতরা দেওয়া যাবে না। স্বামী-স্ত্রী একে-অপরকে দিতে পারবে না। -বাদায়েউস সানায়ে: ২/৪৯, ফাতহুল কাদির: ২/২০৮
   
মাসয়ালা: ভাই-বোন, চাচা, মামা, ফুফু, খালা ও তাদের সন্তানদেরকে ফিতরা দিতে পারবে। -ফাতহুল কাদির: ২/২০৯, রদ্দুল মুহতার: ২/৩৪২

মাসয়ালা: যার ওপর সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব নয়- এমন ব্যক্তি ধনী অথবা পিতা-মাতা, ছেলেকে সদকায়ে ফিতরের নামে টাকা দিলে তা শরিয়তের দৃষ্টিতে হাদিয়া বা নফল দান হিসেবে গণ্য হবে, ফিতরা হিসেবে নয়। সুতরাং তাদের জন্য নেওয়া বৈধ হবে। -কিফায়াতুল মুফতি: ৪/৩২২
 
মাসয়ালা: সদকায়ে ফিতর ও জাকাত দ্বারা কারো হক আদায় করা যায় না। বেতন যেহেতু চাকুরিজীবির প্রাপ্য তাই ফিতরা দ্বারা বেতন আদায়ের দায়িত্ব থেকে উদ্ধার পাওয়ার ব্যবস্থা করা বৈধ হয় না। কোনো চাকুরিজীবি ও কর্মচারী জাকাত-ফিতরা খাওয়ার উপযোগী হলে তাকে ফিতরার টাকা দেওয়া যাবে, কিন্তু এ টাকা বেতন হিসেবে ধরা যাবে না। পক্ষান্তরে জাকাত খেতে পারে- এমন না হলে ফিতরার টাকা দেওয়া-নেওয়া কোনো অবস্থাতেই জায়েয হবে না। -আদ্দুররুল মুখতার: ২/৩৬৮

মাসয়ালা: ঈদের নামাজের পূর্বেই ফিতরা আদায় করে দেওয়া উত্তম, তবে পরে দিলেও আদায় হয়ে যাবে। হজরত ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে সদকাতুল ফিতর আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন। -মুসলিম শরিফ, হাদিস: ১৬৩৬, সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ১৬০৯

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪১ ঘণ্টা, জুলাই ০৫, ২০১৬
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।