ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

সূরা ইখলাস পাঠ এক-তৃতীয়াংশ কোরআন তেলাওয়াতের সমতুল্য

মাওলানা আবদুল জাব্বার, অতিথি লেখক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৬
সূরা ইখলাস পাঠ এক-তৃতীয়াংশ কোরআন তেলাওয়াতের সমতুল্য

সূরা ইখলাস মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। আয়াত সংখ্যায় ৪টি, রুকু ১টি।

এটি কোরআন শরিফের ১১২ নম্বর সূরা। ত্রিশ নম্বর পারার শেষের দিকে এই সূরাটি আছে। এই সূরাকে ‘কুলহু আল্লাহু আহাদ...’ সূরাও বলা হয়।

মক্কার মুশরিকরা হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে আল্লাহতায়ালার বংশ পরিচয় সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সূরা ইখলাসের মধ্যে আল্লাহ তার পরিচয় বর্ণনা করেছেন। আল্লাহতায়ালা নিজেই জানিয়েছেন, তার কোনো শরিক নেই। তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন। তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কারো থেকে জন্ম নেননি।

সূরা ইখলাসে আল্লাহর তাওহিদের (একত্ববাদের) পরিচয় রয়েছে। পাশাপাশি আল্লাহর একত্ববাদ ও অসীম ক্ষমতার পরিচয়ও পাওয়া যায়। সূরা ইখলাসের মর্তবা-মর্যাদা অল্প কথায় বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না।

হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে। এক ব্যক্তি হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে বলল, ইয়া রাসূলুল্লাহ (সা.)! আমি সূরা ইখলাসকে ভালোবাসি। হজরত রাসূল (সা.) ওই ব্যক্তিকে বললেন, তোমার এ ভালোবাসা তোমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে। -তিরমিজি

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, একদিন সাহাবাদের লক্ষ্য করে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, তোমরা সবাই একত্রিত হও। আমি তোমাদের কোরআনের এক-তৃতীয়াংশ শুনাব। অতঃপর যাদের পক্ষে সম্ভব হয়েছিল, তারা একত্রিত হয়ে গেলেন। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) সূরা ইখলাস পাঠ করে শুনালেন এবং বললেন, এই সূরা কোরআনের এক-তৃতীয়াংশের সমান। -মুসলিম ও তিরমিজি

হজরত আবু দারদা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, তোমাদের মধ্যে কেউ কি প্রত্যেক রাতে কোরআনে পাকের এক-তৃতীয়াংশ তেলাওয়াত করতে পার না? সাহাবিরা বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! প্রত্যেক রাতে কি করে এক-তৃতীয়াংশ কোরআন তেলাওয়াত করা যায়? তিনি বললেন, সূরা ইখলাস কোরআনে পাকের এক-তৃতীয়াংশ সমতুল্য। -মেশকাত

আমলিয়াতে কোরআন গ্রন্থের ৭৭ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করা হয়েছে, ‘সূরা ইখলাস সর্বদা পাঠকারীর ওপর আল্লাহর রহমত বর্ষিত হতে থাকে। ফলে, ওই ব্যক্তির অন্তরে কখনও শেরকি ও বেদায়াতি ভাব জাগতে পারে না। আর বালা-মুসিবত দেখা দিলে কিছু মানুষ একত্রিত হয়ে সূরা ইখলাস পাঠ করে দোয়া করলে আল্লাহর রহমতে বালা-মুসিবত দূর হয়ে যায়। ’

এ ছাড়া যারা কোরআন পড়তে পারেন না অথচ কোরআন খতমের সওয়াব পেতে আগ্রহী, তারা যদি বিসমিল্লাহসহ ৩ বার সূরা ইখলাস পাঠ করেন তাহলে পুরো কোরআন খতমের সমপরিমাণ সওয়াব পেয়ে যাবেন। কেউ যদি প্রতিদিন ৩০০ বার সূরা ইখলাস পাঠ করেন তাহলে ১০০ কোরআন খতমের সমপরিমাণ নেকি তার আমলনামায় লিখে দেয়া হবে।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে আসছিলাম। তিনি এক ব্যক্তিকে কুলহু আল্লাহু আহাদ পড়তে শুনলেন। হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, অনিবার্য হয়ে গেল। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, কী অনিবার্য হয়ে গেল। তিনি উত্তর দিলেন- জান্নাত। -সুনানে তিরমিজি ও নাসাঈ

বাংলাদেশ সময়: ২০১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৬
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।