আর রমজানের প্রস্তুতির মাস হিসাবে শাবান মাসকে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বিশেষ মর্যাদা দিয়েছেন। এ সময় তার ইবাদত-বন্দেগিতে বিশেষ পরিবর্তন পরিলক্ষিত হতো।
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, রমজান হলো আল্লাহর মাস আর শাবান হলো আমার মাস। যার দৃষ্টান্তস্বরূপ তিনি প্রচুর ইবাদত-বন্দেগি করতেন।
প্রত্যেক আরবি মাসের (রমজান ছাড়া) ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে আইয়ামে বীজের রোজা রাখতেন প্রিয় নবী (সা.)। কিন্তু যখন শাবান মাস আসতো রাসূল (সা.) প্রায় পুরো শাবান মাস রোজা পালন করতেন। আর নফল ইবাদত-বন্দেগি করতেন অধিক পরিমাণ।
তাছাড়া একটি দোয়া বারবার তার মুখে ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত হতো। দোয়াটি হলো- ‘আল্লাহুম্মা বারিকলানা ফি রাজাবা ওয়া শাবান, ওয়া বাল্লিগনা রামাজান। অর্থাৎ হে আল্লাহ! রজব ও শাবানে আমাকে বরকত দিন এবং আমাকে রমজান পর্যন্ত পৌঁছে দিন। ’
হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, যখন শাবান মাস আসতো তখন হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) অন্যান্য মাসের তুলনায় অধিক গুরুত্ব দিতেন ও রোজা রাখতেন। মাঝেমধ্যে একাধারে রোজা পালন করে শাবানের শেষ দিনটি বিরতি দিয়ে আবার রমজানের রোজা পূর্ণাঙ্গভাবে পালন করতেন।
সে কারণে যারা হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সত্যিকারের উম্মত হতে চায় তাদের প্রত্যেকের উচিত হলো রাসূলের (সা.) এই সুন্নতের সম্পূর্ণরূপে পরিপালন করা। কেননা রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘যদি কেউ আমার কোনো হারিয়ে যাওয়া সুন্নতকে উজ্জীবিত করে তাহলে তাকে একশ’ শহীদের মর্যাদা দান করা হবে।
অন্যত্র বলা হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি (ইচ্ছাকৃতভাবে) আমার কোনো সুন্নতকে পরিহার করবে সে আমার উম্মত নয়। ’ আর রাসূলের উম্মত না হলে বেহেশত পাওয়া আদৌ সম্ভব নয়।
কারণ হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমার প্রত্যেক উম্মত বেহেশতে যাবে কেবলমাত্র অসম্মত ছাড়া। সাহাবিরা বললেন, কে অসম্মত হে রাসূল (সা.)? তিনি বললেন, যারা আমার অনুসরণ করবে তারা বেহেশতে যাবে। আর যারা আমার সুন্নতের অবজ্ঞা করবে তারাই অসম্মত। সে কারণে যারা রাসূল (সা.)-এর উম্মত হয়ে জান্নাত হাসিল করতে চায়, তাদের প্রত্যেকের উচিত হলো- রাসূলের প্রতিটি সুন্নতের অনুসরণে দৈনন্দিন জীবন অতিবাহিত করা।
আর সেই লক্ষ্যে এই শাবান মাসেই নিজেকে পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ জামাতে আদায় করা, সুন্নত নামাজ, নফল নামাজ ও ইবাদত-বন্দেগি করা অতীব প্রয়োজন।
বাংলাদেশ সময়: ০৩৩৯ ঘন্টা, ০৫ মে, ২০১৭
এমএইউ/