দেশের কওমি মাদরাসা পরিচালনার ৬ বোর্ডের সম্মিলিত নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘আল হাইআতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কাওমিয়া বাংলাদেশ’র আওতায় অভিন্ন প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
দেশব্যাপী প্রায় ৭৩৭টি কওমি মাদরাসার (শুধু দাওরায়ে হাদিস) ১৯ হাজার ৩৯৩ জন শিক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।
প্রথম দিনে হাদিসশাস্ত্রের সিহাহ সিত্তা তথা সর্বোচ্চ মানের ৬টি কিতাবের প্রথম কিতাব বোখারি শরীফ দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা হয়েছে। ১০টি বিষয়ে মোট এক হাজার নম্বরের পরীক্ষা দিতে হচ্ছে পরীক্ষার্থীদের।
প্রথমবারে মতো ‘আল হাইআতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কাওমিয়া বাংলাদেশ’র আওতায় অনুষ্ঠিত দাওরায়ে হাদিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা মাস্টার্স (ইসলামিক স্টাডিজ এবং আরবী) সমমানের সনদ পাবেন।
আজ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আল্লামা শাহ আহমদ শফীর প্রেসসচিব মাওলানা মুনির আহমদ জানান, দেশব্যাপী ২২৩টি কেন্দ্রের মধ্যে সর্ববৃহৎ কেন্দ্র চট্টগ্রাম হাটহাজারী মাদরাসা কেন্দ্রে ১ হাজার ৬২০ জন ছাত্র পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন।
হাইআতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ ও বেফাক চেয়ারম্যান শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী পরীক্ষার প্রথম দিনের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন।
এ সময় আল্লামা শাহ আহমদ শফী বলেন, বহুল প্রত্যাশিত কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদিসের সনদের মান অর্জিত হয়েছে। এখন শিক্ষার মান বৃদ্ধিসহ আদর্শিক ও নৈতিক বিষয়ে আরও উন্নতি সাধনের জন্য মনোযোগের সঙ্গে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।
তিনি বলেন, দেশের কওমি মাদরাসাসমূহ রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে কোনো টাকা-পয়সা না নিয়ে শুধু জনগণের স্বত:স্ফূর্ত দান-সদকার সহযোগিতার মাধ্যমে প্রতি বছর সর্বোচ্চ নৈতিক ও আদর্শিক চরিত্রের অধিকারী হাজার হাজার আলেম তৈরি করে শান্তিপূর্ণ দেশ, সমাজ ও সুনাগরিক গড়ে ইসলাম ও দেশের মহৎ সেবা করে যাচ্ছে।
আল্লামা আহমদ শফী পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর বেশ কিছু সময় পরীক্ষার হলে অবস্থান করেন। এ সময় হাটহাজারী মাদরাসার মুফতি মাওলানা জসীম উদ্দীন, মাওলানা মুহাম্মদ আনাস মাদানি ও মাসিক মুঈনুল ইসলামের নির্বাহী সম্পাদক মাওলানা মুনির আহমদ পরীক্ষার হল পরিদর্শন করেন এবং পরীক্ষাকেন্দ্রের সুশৃঙ্খল পরিবেশ দেশে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
হাইআতুল উলইয়ার সদস্য মাওলানা আনাস মাদানি বলেন, পরীক্ষার প্রথম দিন সারাদেশের সবকেন্দ্রে অত্যন্ত সুশৃঙ্খল পরিবেশে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরীক্ষার্থীরাও উৎসবমুখর পরিবেশে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।
কওমি সনদের সার্টিফিকেট পরীক্ষা গ্রহণ ও সনদের বিতরণের জন্য ৬ বোর্ডের সমন্বয়ে ‘আল হাইআতুল উলয়া লিল জামিআতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’ নামে স্বতন্ত্র একটি সংস্থা গঠিত হয়েছে।
৬টি বোর্ড হচ্ছে- বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ, গোপালগঞ্জের বেফাকুল মাদারিসিল কওমিয়া গওহরডাঙ্গা, চট্টগ্রামের আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিসিল কওমিয়া, সিলেটের আজাদ দীনি এদারা বোর্ড, উত্তরবঙ্গের তানজিমুল মাদারিসিল কওমিয়া এবং জাতীয় দীনি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড।
উল্লেখ্য, গত ১১ এপ্রিল গণভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে কওমি মাদরাসার সনদের স্বীকৃতির ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর শিক্ষা মন্ত্রণালয় ১৩ এপ্রিল কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদিসের সনদকে মাস্টার্স (ইসলামিক স্টাডিজ এবং আরবি)-এর সমমান ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে।
বাংলাদেশ সময়: ২০২১ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১৭
এমএইউ/