তালাক ছাড়াই অন্যের স্ত্রীকে বিয়ে করার অভিযোগে করা মামলায় নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার চেয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তার স্ত্রী তামিমা সুলতানা তাম্মী।  

সোমবার (১৪ জুলাই) ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালতে হাজির হয়ে এ দাবি করেন তারা।

এদিন আসামিদের ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৪২ ধারায় আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য দিন ধার্য ছিল। এ সময় মামলার বাদী ও তামিমার আগের স্বামী রাকিবও আদালতে উপস্থিত ছিলেন। শুনানিকালে নাসির ও তামিমা আত্মপক্ষ সমর্থন করে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। একইসঙ্গে তারা সাফাই সাক্ষী দেবেন বলেও আদালতকে জানান।   

পরে আসামিপক্ষের আইনজীবী আদালতকে জানান, আগামী ধার্য তারিখে তারা লিখিতভাবে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরবেন এবং সাফাই সাক্ষী দেবেন। আসামিদের বাইরেও সাফাই সাক্ষী রয়েছে। এরপর আদালত সাফাই সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ১১ আগস্ট দিন ধার্য করেন।

এর আগে গত ১৬ এপ্রিল মামলাটিতে বাদীপক্ষের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। মামলাটিতে বাদীপক্ষে ১০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।

এ মামলায় ২০২২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি একই আদালত ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তার স্ত্রী তামিমা সুলতানা তাম্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন। তবে নাসিরের শাশুড়ি সুমি আক্তারকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

এরপর একই বছরের ৬ মার্চ মহানগর দায়রা জজ আদালতে নাসির ও তামিমার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশের বিরুদ্ধে রিভিশন করেন তাদের আইনজীবী কাজী নজিব্যুল্লাহ হিরু। অন্যদিকে সুমি আক্তারকে অব্যাহতির আদেশের বিরুদ্ধে রিভিশন দায়ের করেন বাদীপক্ষের আইনজীবী ইশরাত হাসান। ২০২৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি বাদী ও বিবাদী উভয়পক্ষের রিভিশন অবেদন নামঞ্জুর করে ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মুর্শিদ আহাম্মেদ মামলাটির বিচার চলবে বলে আদেশ দেন। একইসঙ্গে নাসিরের শাশুড়ি সুমি আক্তার মামলার দায় থেকে অব্যাহতি থাকবেন বলে আদেশ দেন।

২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাম্মীর সাবেক স্বামী রাকিব হাসান বাদী হয়ে এই মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি তাম্মী ও রাকিবের বিয়ে হয়। তাদের আট বছরের একটি মেয়েও রয়েছে। তাম্মী পেশায় একজন কেবিন ক্রু। ২০২১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তাম্মী ও ক্রিকেটার নাসির হোসেনের বিয়ের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা রাকিবের নজরে আসে। পরে পত্র-পত্রিকায় তিনি ঘটনার বিষয়ে সম্পূর্ণ জানেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়, রাকিবের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক চলমান অবস্থাতেই তাম্মী নাসিরকে বিয়ে করেছেন, যা ধর্মীয় ও রাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী সম্পূর্ণ অবৈধ। তাম্মীকে প্রলুব্ধ করে নিজের কাছে নিয়ে গেছেন নাসির। তাদের এমন অনৈতিক ও অবৈধ সম্পর্কের কারণে রাকিব ও তার আট বছর বয়সী কন্যা মারাত্মভাবে মানসিক বিপর্যস্ত হয়েছেন। আসামিদের এমন কার্যকলাপে রাকিবের চরমভাবে মানহানি হয়েছে, যা তার জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।

কেআই/আরবি