ঢাকা, শনিবার, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৬ জুলাই ২০২৫, ০০ সফর ১৪৪৭

আইন ও আদালত

‘ভালোবাসা বা ঘৃণা মানুষ সবই কর্মের মাধ্যমে অর্জন করে’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১:৩৬, জুলাই ২৫, ২০২৫
‘ভালোবাসা বা ঘৃণা মানুষ সবই কর্মের মাধ্যমে অর্জন করে’ রাতে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: ‘মানুষের শ্রদ্ধা কর্মের মাধ্যমে অর্জন করতে হয়। ভালোবাসা বা ঘৃণা মানুষ সবই কর্মের মাধ্যমে অর্জন করে।

’ সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের মামলার শুনানিকালে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছানাউল্লাহ এ মন্তব্য করেন।  

একটি হত্যা মামলায় বুধবার (২৪ জুলাই) রাতে খায়রুল হককে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর রাত সোয়া ৮টার দিকে তাকে এজলাসে তোলা হয়।  

এর কিছুক্ষণ পর বিচারক এজলাসে উঠেন। এসময় তাকে কারাগারে আটক রাখতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার পরিদর্শক খালেদ হোসেনের আবেদনের পক্ষে শুনানি করে প্রসিকিউশনের পক্ষ।  

শুনানিকালে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ও ঢাকা আইনজীবী সমিতির নেতারা প্রধান বিচারপতি থাকাকালে তার দেওয়া বিতর্কিত রায়ের সমালোচনা করে বক্তব্য দেন। জাতীয়তাবাদী আইনজীবী সমিতির ঢাকা বার ইউনিটের আহ্বায়ক খোরশেদ আলম, ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি খোরশেদ মিয়া আলম, সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আজিজুল হক দিদার প্রমুখ আইনজীবী শুনানি করেন।  

শুনানিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বাড়ির মামলার রায়, স্বাধীনতার ঘোষক সংক্রান্ত মামলার রায় উঠে আসে। শুনানির সময় খায়রুল হক বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের দিকে তাকিয়ে থাকেন। এ সময় কোনো কথা না বললেও মাঝেমাঝে তাকে মুচকি হাসতে দেখা যায়।  

এরপর ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছানাউল্লাহ তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

আদেশের সময় আদালত বলেন, ‘আপনাদের কথায় অনেক কিছুই উঠে এসেছে। আপনারা বলছেন, আগে আপনারা বিচারকদের সম্মান করতেন, শ্রদ্ধা করতেন। কিন্তু কিছু কারণে আপনারা শ্রদ্ধার জায়গা থেকে সরে এসেছেন। ’

আদালত আরও বলেন, ‘মানুষের শ্রদ্ধা কর্মের মাধ্যমে অর্জন করতে হয়। কর্মের মধ্য দিয়েই ঘৃণা বা ভালোবাসা তৈরি হয়। এ ঘটনার (এবিএম খায়রুল হক) মধ্য দিয়ে অনেক কিছু শেখার আছে। আপনি যদি শ্রদ্ধা করেন সেটাও আমার কর্মের কারণে, আবার ঘৃণা করলে সেটাও কর্মের জন্য। ’ 

এর আগে বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সকাল সাড়ে ৮টায় রাজধানীর ধানমন্ডির বাসা থেকে খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

দেশে ১৯তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে এবিএম খায়রুল হক শপথ নেন ২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর। পরের বছর (২০১১ সাল) ১৭ মে ৬৭ বছরপূর্ণ হওয়ায় তিনি অবসর নেন।

বিচারাঙ্গনে তুমুলভাবে আলোচিত-সমালোচিত এ বিচারপতির তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলসহ বেশ কয়েকটি রায় চরম বিতর্ক সৃষ্টি করেছিল। তিনি নিজে আওয়ামী আমলে নানাভাবে সুবিধাপ্রাপ্ত হয়েছেন। তাকে প্রধান বিচারপতি করা হয়েছিল কয়েকজন জ্যেষ্ঠ বিচারপতিকে ডিঙিয়ে।

কেআই/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।