ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩০ শ্রাবণ ১৪৩২, ১৪ আগস্ট ২০২৫, ১৯ সফর ১৪৪৭

আইন ও আদালত

দুদকের মামলায় পাপিয়া দম্পতির সাড়ে ৩ বছরের কারাদণ্ড

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮:৪৩, আগস্ট ১৪, ২০২৫
দুদকের মামলায় পাপিয়া দম্পতির সাড়ে ৩ বছরের কারাদণ্ড শামীমা নূর পাপিয়া ও মফিজুর রহমান।

জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমানকে সাড়ে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।  

বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত ৩-এর বিচারক আবু তাহের এ রায় দেন।

রায়ে আসামিদের ৫ লাখ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সাজা দেওয়া হয়েছে।  

পাপিয়ার আইনজীবী শাখাওয়াত উল্লা ভুইয়া জানিয়েছেন, আসামিরা ইতোমধ্যে আদালতের দেওয়া সাজা ভোগ করেছেন।

রায় ঘোষণার সময় পাপিয়ার স্বামী মফিজুরকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। আর জামিনে থাকা পাপিয়া আদালতে হাজির হন। তাদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করা হয়।

২০২০ সালের ৪ আগস্ট দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এর উপ-পরিচালক শাহীন আরা মমতাজ বাদী হয়ে পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে দুদক আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় তাদের বিরুদ্ধে ছয় কোটি ২৪ লাখ ১৮ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।  

মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১২ অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ২২ ফ্রেব্রুয়ারি পর্যন্ত ওয়েস্টিন হোটেলের ২৫টি রুমে অবস্থান করে রুম-নাইট, রেস্তোরাঁর খাবার, মদ, স্পা, লন্ড্রি, মিনি বার ফুড, মিনি বার বাবদ মোট তিন কোটি ২৩ লাখ ২৪ হাজার ৭৬১ টাকার বিল ক্যাশে পরিশোধ করেন পাপিয়া। ওয়েস্টিন হোটেলে থাকা অবস্থায় প্রায় ৪০ লাখ টাকার শপিং করেন। যার কোনো বৈধ উৎস দেখাতে পারেননি।

এ ছাড়া ২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত পাঁচ বছরে বাসা ভাড়া বাবদ ৩০ লাখ টাকা, গাড়ির ব্যবসায় বিনিয়োগকৃত এক কোটি টাকা এবং নরসিংদীতে কেএমসি কার ওয়াশ সলিউশনে বিনিয়োগকৃত ২০ লাখ টাকা, বিভিন্ন ব্যাংকে তার ও স্বামীর নামে জমাকৃত ৩০ লাখ ৫২ হাজার ৯৫৮ টাকারও কোনো বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি অনুসন্ধানে।

তদন্ত শেষে দুদক প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক শাহীন আরা মমতাজ প্রতিবেদন জমা দেন।  

এরপর ২০২১ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি পাপিয়া দম্পতির বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন করে দুদক। ওই বছরের ৬ অক্টোবর মামলাটি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত ৩-এ বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়।

২০২১ সালের ৩০ নভেম্বর এ মামলায় অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। বিচার চলাকালে আদালত ১৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জাল টাকা বহন ও অবৈধ টাকা পাচারের অভিযোগে পাপিয়াসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)।  

এ সময় তাদের কাছ থেকে সাতটি পাসপোর্ট, বাংলাদেশি দুই লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ জাল টাকা, ৩১০ ভারতীয় রুপি, ৪২০ শ্রীলঙ্কান মুদ্রা, ১১ হাজার ৯১ মার্কিন ডলার ও সাতটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

একই বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি পাপিয়ার ইন্দিরা রোডের বাসায় অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন, ২০ রাউন্ড গুলি, ৫ বোতল বিদেশি মদ, ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা, ৫টি পাসপোর্ট, ৩টি চেক, বেশকিছু বিদেশি মুদ্রা ও বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি এটিএম কার্ড উদ্ধার করা হয়।  

ওই ঘটনায় পাপিয়া ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে শেরে বাংলা নগর থানার মাদক ও অস্ত্র মামলা, গুলশান থানায় মানি লন্ডারিংয়ের মামলা, বিমানবন্দর থানার বিশেষ ক্ষমতা আইনে (জাল টাকার) মামলা এবং অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুদক।  

কেআই/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আইন ও আদালত এর সর্বশেষ