ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১ কার্তিক ১৪৩২, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ২৩ রবিউস সানি ১৪৪৭

আইন ও আদালত

হাসিনা-কামালের ‘চরম দণ্ড’ চেয়েছি: চিফ প্রসিকিউটর

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:১৫, অক্টোবর ১৬, ২০২৫
হাসিনা-কামালের ‘চরম দণ্ড’ চেয়েছি: চিফ প্রসিকিউটর শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল (ইনসেটে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম)

জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের চরম দণ্ড চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ প্রসিকিউশনের পক্ষে পাঁচ দিনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান চিফ প্রসিকিউটর।

তাজুল ইসলাম বলেন, প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে পাঁচ দিনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন আজ শেষ হয়েছে। প্রধান আসামি ছিলেন শেখ হাসিনা; যিনি ছিলেন অপরাধের নিউক্লিয়াস। তাকে কেন্দ্র করেই সমস্ত অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল। তাকে চরম দণ্ড এ আইনে যেটা আছে সেটাই দেওয়া শ্রেয়।

হাসিনা প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, অন্তত প্রত্যেকটি হত্যার দায়ে যদি একবার করে মৃত্যুদণ্ড হয়, তাহলে ১ হাজার ৪০০ মানুষ হত্যার দায়ে তার অন্তত ১ হাজার ৪০০ বার মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত। যেহেতু মানবিকভাবে এটি সম্ভব নয়, অন্তত তাকে যদি একবারও চরম দণ্ড দেওয়া না হয়, তাহলে সেটি হবে অবিচার। তাই তার ব্যাপারে আমি বলেছি— আইনের আওতায় তাকে চরম শাস্তি দেওয়াটাই ন্যায়সঙ্গত।

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, আর দ্বিতীয় আসামির (আসাদুজ্জামান খান কামাল) ক্ষেত্রেও অনুকম্পা দেখানোর কোনো সুযোগ নেই। তার ব্যাপারেও আমরা চরম দণ্ডের সুপারিশ করেছি। রাজসাক্ষীর বিষয়ে আদালত যে দৃষ্টিভঙ্গি নেবেন, সেটি আদালতের এখতিয়ার।

এর আগে রোববার, সোমবার, মঙ্গলবার ও বুধবারও প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়।

গত ১১ অক্টোবর প্রসিকিউটর গাজী এম. এইচ. তামীম জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে।

আইন অনুযায়ী প্রথমে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে প্রসিকিউশন, এরপর স্টেট ডিফেন্স আইনজীবীরা যুক্তিতর্ক পেশ করেন। এটি ট্রাইব্যুনালের কোনো মামলার শেষ ধাপ। যুক্তিতর্ক শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হবে।

এ মামলায় শেখ হাসিনার পাশাপাশি বাকি দুই আসামি হলেন— সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। এর মধ্যে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন।

মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন তদন্ত সংস্থার উপপরিচালক মো. জানে আলম খান। পরে তদন্তের দায়িত্ব নেন উপপরিচালক মো. আলমগীর। সার্বিক সহযোগিতা করেন বিশেষ তদন্তকারী কর্মকর্তা তানভীর হাসান জোহা।

এ ঘটনায় তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর গত ১২ মে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। পরে ৩১ মে সম্পূরক অভিযোগ এবং ১ জুন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়।

গত ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল মামলাটির আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন।

ইএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আইন ও আদালত এর সর্বশেষ