ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

সাগর-রুনি হত্যার প্রতিবেদন পিছিয়ে ৭ এপ্রিল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৬
সাগর-রুনি হত্যার প্রতিবেদন পিছিয়ে ৭ এপ্রিল ফাইল ফটো

ঢাকা: মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক গোলাম মোস্তফা সারোয়ার ওরফে সাগর সারোয়ার ও এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার মেহেরুন নাহার রুনা ওরফে মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ফের পিছিয়েছে। আগামী ৭ এপ্রিল দিন পুনর্নির্ধারণ করেছেন আদালত।



এ নিয়ে ৪০তম বারের মতো পেছালো তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন। হত্যাকাণ্ডের গত চার বছরেও প্রতিবেদনটি দাখিল করতে পারেননি তদন্ত কর্মকর্তা।

রোববার(২৮ ফেব্রুয়ারি) মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু এদিনও কোনো প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেননি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র‌্যাব সদর দফতরের ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড ফরেনসিক শাখার সহকারী পরিচালক মো. ওয়ারেছ আলী মিয়া। তিনি ফের সময়ের আবেদন জানান।

মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এম ইউনুস খানের আদালত দুপুরে আগামী ৭ এপ্রিল তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন পুনর্নির্ধারণ করেন।

এর আগে আরও ৩৯ বার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পিছিয়েছেন আদালত।

তবে মামলাটির চার্জশিট দাখিল করা হবে জানিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা ওয়ারেছ আলী জানিয়েছেন, তদন্ত এখনও চলছে, শেষ হয়নি। তদন্ত শেষে যথা শিগগির সম্ভব আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হবে।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট না পাওয়ায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলে বিলম্ব হচ্ছে বলে জানানো হয়। কিন্তু আদালতে দাখিল করা অগ্রগতি প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের পরীক্ষাগার থেকে ডিএনএ রিপোর্টগুলো পাওয়ার কথা স্বীকার করা হলেও তা যাচাই-বাছাই চলছে বলে অগ্রগতি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়।

আদালতের নথি পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০১৪ সালের ২০ মার্চ তদন্ত কর্মকর্তা ওয়ারেছ আলী আদালতে একটি অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করেন। তাতে তিনি উল্লেখ করেন, মামলায় জব্দকৃত আলামতের সঙ্গে ম্যাচিং করার জন্য গ্রেফতারকৃত ৮ আসামি ও সন্দেহভাজন ২১ আত্মীয়-স্বজনের ডিএনএ নমুনা যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়।

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে নিজেদের ভাড়া বাসায় খুন হন এ সাংবাদিক দম্পতি।

এরপর তিন তদন্ত কর্মকর্তা শেরেবাংলা থানার এসআই জহুরুল ইসলাম, ডিবি পুলিশের পরিদর্শক রবিউল আলম ও র‌্যাবের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার জাফর উল্লাহ’র হাত ঘুরে বর্তমানে র‌্যাবের সহকারী পুলিশ সুপার ওয়ারেছ আলী মিয়া মামলাটি তদন্ত করছেন।

ঘটনার ৮ মাস পর ২০১২ সালের ১০ অক্টোবর বনানী থানার একটি হত্যা ও ডাকাতি মামলায় গ্রেফতার থাকা ৫ আসামি মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু, বকুল মিয়া, কামরুল হাসান অরুণ, রফিকুল ইসলাম ও আবু সাঈদকে গ্রেফতার দেখিয়ে এ মামলায় রিমান্ড চাওয়া হয়।

এছাড়া ওইদিনই আরও দুই আসামি রুনির কথিত বন্ধু তানভীর রহমান ও বাড়ির দারোয়ান পলাশ রুদ্র পালকে গ্রেফতার এবং পরবর্তী সময়ে অপর দারোয়ান আসামি এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবিরকে গ্রেফতার করা ছাড়া গত চার বছরে মামলার তদন্তে দৃশ্যত কোনো অগ্রগতি নাই।

বাড়ির দুই দারোয়ান পলাশ রুদ্র পাল ও এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবিরকে কয়েক দফায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও তার অগ্রগতি জানায়নি পুলিশ। অন্যদিকে দীর্ঘ ২৬ মাস কারাগারে আটক থাকার পর হাইকোর্টের নির্দেশে জামিনে মুক্ত হয়েছেন তানভীর রহমান।

মামলার নথি পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের পর হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় র‌্যাব।

এরপর সাগর-রুনির মরদেহ কবর থেকে তোলার আবেদন করে র‌্যাব। ২০১২ সালের ২৬ এপ্রিল নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহিদুজ্জামানের উপস্থিতিতে সাগর-রুনির লাশ তোলা হয়। তাতে পরীক্ষা করে দেখা যায়, নিহত সাগর-রুনিকে হত্যার আগে কোনো নেশাজাতীয় খাবার পানীয় দেওয়া হয়নি এবং কোনো বিষও পাওয়া যায়নি।

এরপর ২০১২ সালের ৭ জুন থেকে ১১ অক্টোবর পর্যন্ত জব্দকৃত আলামতের সঙ্গে ম্যাচিং করার জন্য ৮ আসামি ও সন্দেহভাজন ২১ আত্মীয়ের নমুনা যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়। মূলত এরপরই মামলার তদন্তে স্থবিরতা নেমে আসে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৬
এমআই/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।