সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহ’র হাইকোর্ট বেঞ্চ আদেশের এ দিন ধার্য করেন বলে জানিয়েছেন আবেদনকারী আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস বলেন, ওইদিন (২৬ ফেব্রুয়ারি) শুনানিও হবে।
গত বছরের ২২ নভেম্বর এ দুই অনুচ্ছেদ নিয়ে রিটের আদেশ স্ট্যান্ড ওভার (মুলতবি) রাখা হয়েছিলো।
গত বছরের ০৩ নভেম্বর হাইকোর্টে রিটটি করেন আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ।
ওই সময় ইউনুছ আলী বাংলানিউজকে বলেন, ‘আদালতে বলেছি, ১৯৭২ সালের মূল সংবিধানে ১১৬ অনুচ্ছেদে অধস্তন আদালতের পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব ছিলো সুপ্রিম কোর্টের। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ৪র্থ সংশোধনীতে সুপ্রিম কোর্টের পরিবর্তে ওই ক্ষমতা দেওয়া হয় রাষ্ট্রপতির কাছে। এটি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক’।
‘এছাড়াও সংবিধানের ৯৫ (গ) অনুচ্ছেদে আইন তৈরি সাপেক্ষে বিচারপতি নিয়োগের বিধান থাকলেও সংসদে কোনো আইন ছাড়াই দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এটিও সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক’।
রিট আবেদনে বিবাদী করা হয় আইন সচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব, স্পিকার ও সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে।
এদিকে গত বছরের ৩১ অক্টোবর নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ পৃথকের নবম বর্ষপূর্তিতে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বাণীতে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, ‘সংবিধানের ১০৯ অনুচ্ছেদ অনুসারে হাইকোর্ট বিভাগের অধস্তন সব আদালত ও ট্রাইব্যুনালের ওপর সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা রয়েছে’।
‘অন্যদিকে সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ বিচার বিভাগের ধীরগতির অন্যতম কারণ। ১১৬ অনুচ্ছেদের ফলে অধস্তন আদালতের বিচারকদের পদোন্নতি, বদলি এবং শৃঙ্খলামূলক কার্যক্রম সুপ্রিম কোর্টের পক্ষে এককভাবে গ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছে না। ‘দ্বৈত শাসনের’ ফলে বহু জেলায় শূন্যপদে সময়মতো বিচারক নিয়োগ প্রদান সম্ভব হচ্ছে না। এতে বিচারকাজে বিঘ্ন ঘটে। এবং বিচারপ্রার্থী জনগণের ভোগান্তি বেড়ে যায়’।
এরপর গত ১০ ডিসেম্বর এক সভায় প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমাদের ১১৬ এবং ১১৬ (এ) সংবিধানের প্রিন্সিপালসের সঙ্গে কনফ্লিক্ট করে। যার পরিপ্রেক্ষিতে এ দুই বিধান সংবিধানের পরিপন্থী। যা আমাদের পবিত্র বই থেকে শিগগিরই সরিয়ে দেওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। এটা থাকায় আমাদের আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে’।
‘আমি কোনো এক অনুষ্ঠানে বলেছিলাম, এদেশে দ্বৈত শাসন চলছে। সঙ্গে সঙ্গে আমাদের আইনমন্ত্রী বললেন যে, চলে না। প্রধান বিচারপতি আইনের অভিভাবক, সংবিধানের অভিভাবক হয়ে বলছি, এটা যদি না হয় তাহলে আজকে আমরা বিচারকদের ডিসিপ্লিন রুলস কে করবে? সরকার করবে না আমরা বিচারকরা করবো? তাদের কন্ট্রোল, বদলি কোনো কিছুই আমরা করতে পারছি না। তাই এই অসাংবিধানিক প্রভিশনগুলো তাড়াতাড়ি সরিয়ে দেওয়া হবে বলে আমি আশা করি’।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৭
ইএস/জেডএস/এএসআর