দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির বেঞ্চ রোববার (১৯ নভেম্বর) এ আদেশ দেন। এর ফলে আরো ১০ দিন বন্ধ থাকছে লেকহেড গ্রামার স্কুল।
রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ, ব্যারিস্টার আখতার ইমাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আবদুল বাসেত মজুমদার ও আব্দুল মতিন খসরু।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
পরে এ এফ হাসান আরিফ বলেন, আদালত বলছে- এ স্কুলের বিষয়ে ক্লাসিফাইড রিপোর্ট আছে। আমরা বলেছি এখানে ১১শ’ শিক্ষার্থীর ভবিষ্যত জড়িত। যদি স্কুলের কেউ জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত তাদের খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। এরপর আদালত আরও দশদিন স্কুল বন্ধর রাখার আদেশ দিয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে বর্তমান ম্যানেজমেন্টের কেউ বা স্কুলের শিক্ষকদের কেউ জঙ্গিবাদে জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখে আদালতে জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া এর মধ্যে লিভ টু আপিলও করতে বলেছেন। আদালত পরবর্তী শুনানির জন্য ৩০ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন।
এর আগে ১৪ নভেম্বর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ওই স্কুলের ধানমন্ডি ও গুলশানের শাখা খুলে দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
তবে লেকহেড স্কুল কর্তৃপক্ষকে জঙ্গিবাদসহ যেকোনো বিষয়েই সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা করার নির্দেশও দেওয়া হয়।
এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (১৫ নভেম্বর) আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে ১৯ নভেম্বর (রোববার) পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠানোর আদেশ দেন।
৯ নভেম্বর লেকহেড গ্রামার স্কুলের গুলশান ও ধানমন্ডি শাখা বন্ধের সিদ্ধান্ত কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, বন্ধ করে দেওয়া লেকহেড স্কুলের মালিককে স্কুলটি খোলা ও পরিচালনা করতে দেওয়ার জন্য কেন বিবাদীদের নির্দেশ দেওয়া হবে না মর্মে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। স্কুলটির মালিক খালেদ হাসান মতিন ও ১২ শিক্ষার্থীর অভিভাবক এসব রিট করেন।
শিক্ষাসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব, ঢাকার জেলা প্রশাসক এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব সালমা জাহান গত ৬ নভেম্বর বাংলানিউজকে বলেন, ‘স্কুলটির বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গা থেকে অভিযোগ আসছিলো। তদন্তের পর আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। ’
স্কুলটির কার্যক্রম বন্ধের বিষয়ে ঢাকার জেলা প্রশাসককে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলেও তখন জানিয়েছিলেন যুগ্ম সচিব।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘ঢাকা মহানগরীর ধানমন্ডি ও গুলশানে অবস্থিত লেকহেড গ্রামার স্কুলটি মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন না থাকায় এবং ধর্মীয় উগ্রবাদে অনুপ্রেরণা দেওয়া, উগ্রবাদী সংগঠন সৃষ্টি, জঙ্গি কার্যক্রমে পৃষ্ঠপোষকতাসহ জাতীয়/স্বাধীনতার চেতনাবিরোধী কার্যক্রম পরিচালনা করায় প্রতিষ্ঠানটির সব কার্যক্রম বন্ধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো। ’
ঢাকা শিক্ষাবোর্ড স্কুলটির বিষয়ে তদন্ত করে জঙ্গি তৎপরতার অভিযোগ পায় বলে জানায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। স্কুলটির পরিচালনা পর্ষদ এবং কয়েকজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে জঙ্গি তৎপরতার অভিযোগ ছিলো। কয়েকজনকে গ্রেফতারও করে পুলিশ।
বাংলাদেশ সময়: ১২০৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৭
ইএস/জেডএস/এসএইচ