ওই ঘটনা প্রকাশের একদিন পর রোববার (১৯ নভেম্বর) নিজ কার্যালয়ের সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা এ মন্তব্য করেন।
শনিবার (১৮ নভেম্বর) সংবাদমাধ্যমের খবরে বহুল আলোচিত আর্থিক কেলেঙ্কারি প্যারাডাইস পেপার্সে বাংলাদেশের ব্যবসায়ী ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল আউয়াল মিন্টুর পরিবারের নাম এসেছে।
কর ফাঁকি দিতে কিংবা তা এড়ানোর জন্যে দেশের বাইরে বিভিন্ন অফশোর কোম্পানিতে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করেছেন তারা।
এর আগে শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) বারমুডার আইনি সংগঠন ‘অ্যাপলবাই’ বিপুল গোপন নথি ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টসের (আইসিআইজে) ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে।
এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, এটা নিশ্চয়ই সরকার সিদ্ধান্ত দেবেন বলে আমি আশা করি। কারণ এটা কাগজে এসেছে। এখন এ ব্যাপারে কিছু প্রক্রিয়া আছে। এ প্রক্রিয়াগুলো সরকার সিদ্ধান্ত নেবেন, কি করা হবে না করা হবে।
দুদকের খতিয়ে দেখা উচিত কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মাহবুবে আলম বলেন, ‘সেটা তো অবশ্যই , বিদেশে টাকা পাচারের মতো ঘটনা, এটা তো যে কোনো নাগরিক বলবে তদন্ত হওয়া উচিত। ’
বিদেশে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনতে মূল কাজটাই অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,‘ হ্যাঁ, সেটা কিছু প্রক্রিয়া আছে, সরকার নির্দেশ দিলে, প্রাথমিক তদন্ত করা যাবে। তারপর সরকার আদেশ দিলে এ সমস্ত ব্যাপারে হয়তো মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যসিস্ট্যান্সের অনুরোধ করা হবে। ’
তিনি আরো বলেন, যেসমস্ত দেশে প্যারাডাইজ পেপারের কোম্পানিগুলো ফর্ম করা আছে তাদের কাছে অনুরোধ পাঠালে, তারা যদি নামগুলো পাঠায়, যে কাদের কাদের নাম আছে।
গোপন নথি অনুযায়ী, ব্যবসায়ী আউয়াল পরিবার বারমুডায় ১৯৯৯ সাল থেকে অফসোর কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছেন। এনএফএম এনার্জি লিমিটেড নামে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলন কোম্পানিরতে মিন্টুর স্ত্রী নাসরিন ফাতেমা আউয়ালসহ তিন ছেলে তাবিথ আউয়াল, তাফসির মোহাম্মদ আউয়াল এবং তাজওয়ার মোহম্মাদ আউয়ালের শেয়ার রয়েছে।
সম্প্রতি জার্মান দৈনিক জিটডয়েচ সাইটং বিশ্বমোড়লদের হাঁড়ির খবর দেওয়ার পাশাপাশি ফাঁস করেছে বাংলাদেশি ব্যবসায়ী ও রাজনীতিকদের নামও।
সেখান থেকে ১ কোটি ৩৪ লাখ (প্রায় ১৩.৪ মিলিয়ন) গোপন নথির তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ ও খতিয়ে দেখছেন আইসিআইজে’র ৬৭টি দেশের ৩৮০ সাংবাদিক সদস্য। এরমধ্যে বিবিসি, গার্ডিয়ানসহ বিভিন্ন দেশের ১০০টি সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিকও রয়েছেন।
প্যারাডাইস পেপারসে ১৮০টি দেশের নাগরিক কিংবা প্রতিষ্ঠানের নাম উঠে এসেছে। যারা দেশে কর থেকে বাঁচার জন্য বিভিন্ন ট্যাক্স হেভেনে (কর দিতে হয় না কিংবা খুবই নিম্ন হারে কর দেওয়া যায় এমন দেশ) বিনিয়োগ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।
তালিকায় ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, কানাডার প্রেসিডেন্ট জাস্টিন ট্রুডোসহ বিশ্বের প্রভাবশালী রাজনৈতিক ও ব্যবসায়ীর নাম উঠে এসেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৭
ইএস/জেডএম