সাক্ষ্যগ্রহণের ষষ্ঠদিন বৃহস্পতিবার (০৪ জুলাই) মাদ্রাসার নৈশ প্রহরী মো. মোস্তফার সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়েছে। পরে আগামী ৭ জুলাই পরবর্তী সাক্ষ্যের দিন ঠিক করা হয়।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী এম শাহজাহান সাজু বলেন, ষষ্ঠদিনে মাদ্রাসার নৈশ প্রহরী মো. মোস্তফার সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়েছে। মঙ্গলবার নুসরাতের সহপাঠী নাসরিন সুলতানার জেরা শেষে হলে সাক্ষী সোনাগাজী ফাজিল মাদ্রাসার পিয়ন নূরুল আমিনের সাক্ষ্য গ্রহণ হয়।
‘আগামী ৭ জুলাই পরবর্তী দিনে কেরোসিন বিক্রেতা জসিম উদ্দিন, বোরকা বিক্রেতা লিটন ও দোকানের কর্মচারী হেলাল উদ্দিন ফরহাদের সাক্ষ্যগ্রহণের কথা রয়েছে। ’
তিনি বলেন, সকাল ১১টায় কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে মামলার সব আসামিকে ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের আদালতে উপস্থাপন করা হয়। পরে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে শুরু হয় নৈশ প্রহরী মো. মোস্তফার সাক্ষ্য। বেলা ৩টায় সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষে আসামিদের জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
এর আগে গত ২৭ জুন মামলার বাদী ও প্রথম সাক্ষী নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমানের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। যা শেষ হয় ৩০ জুন।
গত ২৭ জুন অভিযোগ গঠনের ছয়দিনের মাথায় ৯২ জন সাক্ষীর মধ্যে বাদীপক্ষের তিনজন সাক্ষীকে আদালতে তাদের সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য উপস্থাপন করা হয়।
এরআগে গত ২০ জুন সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর এই আদেশ দেন আদালত। এ মামলার চার্জশিট জমা দেওয়ার আগে সাতজন সাক্ষী আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
গত ৬ এপ্রিল ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষা কেন্দ্রে গেলে নুসরাতকে ছাদে ডেকে নিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে করা শ্লীলতহানির মামলা তুলে না নেওয়ায় তাকে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে; যা মৃত্যুশয্যায় নুসরাত বলে গেছেন। ১০ এপ্রিল ঢাকার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নুসরাতের মৃত্যু হয়।
পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ফেনীর পরিদর্শক মো. শাহ আলম আদালতে মোট ১৬ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র জমা দেন।
অভিযোগপত্রের ১৬ আসামি হলেন- মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা, নূর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, সোনাগাজীর পৌর কাউন্সিলর মাকসুদ আলম, সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের, জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদ, হাফেজ আব্দুল কাদের, আবছার উদ্দিন, কামরুন নাহার মনি, উম্মে সুলতানা ওরফে পপি ওরফে তুহিন ওরফে শম্পা ওরফে চম্পা, আব্দুর রহিম শরীফ, ইফতেখার উদ্দিন রানা, ইমরান হোসেন ওরফে মামুন, মোহাম্মদ শামীম, মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সহ-সভাপতি রুহুল আমীন ও মহিউদ্দিন শাকিল।
এ মামলায় মোট ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তদন্তে সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় অন্য পাঁচজনকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করে পিবিআই। আদালত তা অনুমোদন করেন।
এছাড়া যৌন হয়রানির মামলার পর নুসরাতের জবানবন্দি গ্রহণের সময় তার ভিডিও ধারণ করে তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে সাইবার আইনে মামলা হওয়ার পর সোনাগাজী থানার তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৪ ঘণ্টা, জুলাই ০৪, ২০১৯
এসএইচডি/এমএ