ঢাকা: ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলনের মুখে চলতি বছর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) ধারা সংশোধন করে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করা হয়েছে। আইন সংশোধনের পরও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রী ধর্ষণ মামলায় আসামি মজনুর সর্বোচ্চ শাস্তি হয়নি।
এর কারণ ব্যাখ্যা করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আফরোজা ফারহানা আহমেদ অরেঞ্জ বলেন, এই মামলায় ২০০০ সালের নারী নির্যাতন দমন আইনে (সংশোধন ২০০৩) অভিযোগ গঠন হয়। এই আইনের ৯(১) ধারায় ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। তাই এই মামলায় আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার সুযোগ ছিল না। বরং আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডই হয়েছে তার।
বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক মোছা. কামরুন্নাহার এই রায় দেন। এছাড়া আসামিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাস কারাদণ্ড দেন আদালত।
গত ১২ নভেম্বর এই মামলায় একমাত্র আসামি মজনুর আত্মপক্ষ সমর্থন এবং রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে একই আদালত রায়ের জন্য এই দিন ধার্য করেন।
গত ৫ নভেম্বর এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। রাষ্ট্রপক্ষে মোট ২৪ সাক্ষীর ২০ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন।
চলতি বছর ১৬ মার্চ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক আবু বকর সিদ্দিক অভিযোগপত্র দাখিল করেন। গত ২৬ আগস্ট এই মামলার একমাত্র আসামি মজনুর বিচার শুরু হয়। এরপর ২০ সেপ্টেম্বর মামলার বাদী ও ধর্ষণের শিকার ছাত্রীর বাবার সাক্ষ্য প্রদানের মাধ্যমে এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। পরদিন ভুক্তভোগী সাক্ষ্যে মজনুকে ধর্ষক হিসেবে শনাক্ত করেন।
গত ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাতটার দিকে কুর্মিটোলা বাসস্টপে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস থেকে নামার পর ওই ছাত্রীকে মুখ চেপে পার্শ্ববর্তী একটি নির্জন স্থানে নিয়ে যায় অজ্ঞাত ব্যক্তি। সেখানে তাকে অজ্ঞান করে ধর্ষণ ও শারীরিক নির্যাতন করা হয়।
রাত ১০টার দিকে তার জ্ঞান ফিরলে নিজেকে নির্জন স্থানে আবিষ্কার করেন। সেখান থেকে সিএনজি চালিত অটোরিকশায় গন্তব্যে পৌঁছালে রাত ১২টার পর তাকে ঢামেক জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে তিনি বাসায় ফেরেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০২০
কেআই/এমজেএফ