ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

আ.লীগ নেতা ফারুক হত্যা: ৬ বছর পর মুক্তির আত্মসমর্পণ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২, ২০২০
আ.লীগ নেতা ফারুক হত্যা: ৬ বছর পর মুক্তির আত্মসমর্পণ ছয় বছর পর আত্মসমর্পণ করেছেন মুক্তি, ছবি: বাংলানিউজ

টাঙ্গাইল: ছয় বছর পলাতক থাকার পর টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি সাবেক পৌর মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন।  

বুধবার (০২ ডিসেম্বর) তিনি আত্মসমর্পণ করেন।

তিনি এ মামলার প্রধান আসামি টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সাবেক এমপি আমানুর রহমান খান রানার ভাই।

সহিদুর রহমান খান মুক্তি তার বাবা টাঙ্গাইল-৩ আসনের বর্তমান এমপি আতাউর রহমান খান ও সাবেক এমপি আমানুর রহমান খান রানার সঙ্গে সকাল পৌনে ১১টার দিকে টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আসেন। সেখানে আত্মসমর্পণ করে তিনি আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন প্রার্থনা করেন।  

রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মনিরুল ইসলাম খান এবং বাদীপক্ষের আইনজীবী রফিকুল ইসলাম তাদের জামিনের বিরোধিতা করেন। এসময় আদালতে উপস্থিত হয়ে নিহত ফারুক আহমেদের স্ত্রী ও মামলার বাদী নাহার আহমেদ ন্যায় বিচারের স্বার্থে মুক্তিকে জামিন না দেওয়ার জন্য আদালতের প্রতি অনুরোধ জানান। শুনানি শেষে বিচারক সিকান্দার জুলকার নাইন দুপুরের পর আদেশ দেবেন বলে জানান।


পরে মুক্তি পুলিশি হেফাজতে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে একটি অস্ত্র মামলায় টাঙ্গাইলের দ্বিতীয় অতিরিক্ত ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। দুপুরের পর এ মামলার শুনানি হচ্ছে বলে টাঙ্গাইলের পিপি এস আকবর খান জানিয়েছেন।

মুক্তি গত সোমবার (২৩ নভেম্বর) আত্মসমর্পণ করতে টাঙ্গাইল আদালতে এসেছিলেন। কিন্তু বিচারক না আসায় তিনি নির্বিঘ্নে চলে যান।

পুলিশ সূত্র জানায়, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ মরদেহ তার কলেজপাড়ার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনার তিনদিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ফারুক আহমেদ হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ২০১৪ সালের আগস্টে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা আনিসুল ইসলাম রাজা নামক একজনকে গ্রেপ্তার করে। পরে রাজা আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিতে এ হত্যাকাণ্ডে তৎকালীন এমপি আমানুর রহমান খান রানা ও তার ছোট ভাই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের তৎকালীন সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পার জড়িত থাকার বিষয়টি বেরিয়ে আসে। এক সপ্তাহ পরে গোয়েন্দা পুলিশ মোহাম্মদ আলী নামে অপর একজনকে গ্রেপ্তার করে। আদালতে মোহাম্মদ আলীর দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ হত্যার পরিকল্পনার সঙ্গে রানার অপর দুই ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি এবং ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাঁকনের নাম বের হয়ে আসে। তারপরই কাঁকন ও সানিয়াত গা ঢাকা দেন। ওই বছরের ১৫ নভেম্বর সেই সময়ের এমপি রানা ও তার ভাই মুক্তি আত্মগোপনে চলে যান। ২২ মাস পলাতক থাকার পর রানা আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরে প্রায় দুই বছর হাজতে থাকার পর রানা জামিনে মুক্ত হন। ২০১৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তদন্ত শেষে সাবেক এমপি রানা ও তার তিন ভাইসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় গোয়েন্দা পুলিশ। বর্তমানে মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।

অপরদিকে, মুক্তি আত্মগোপনে যাওয়ার পর ২০১৫ সালে গোয়েন্দা পুলিশ টাঙ্গাইল সদর উপজেলার পোড়াবাড়ি থেকে দু’টি পিস্তলসহ এক ব্যক্তিকে গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পরে ওই ব্যক্তির স্বীকারোক্তিতে মুক্তি এ পিস্তল তাদের কাছে রাখতে দিয়েছিলেন বলে জানান। এ মামলায় গোয়েন্দা মুক্তিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২, ২০২০
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।