ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

মুক্তিপণ না পেয়ে শিশু হত্যা: ২ জনের আমৃত্যু কারাদণ্ড

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০২২
মুক্তিপণ না পেয়ে শিশু হত্যা: ২ জনের আমৃত্যু কারাদণ্ড আদালতে আসামিরা।

রংপুর: রংপুরের পীরগাছায় শিশু অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করে না পাওয়ায় রিয়া আক্তার (৭) নামে এক শিশুকে হত্যার দায়ে দুই ব্যক্তির আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে-২ এর বিচারক মোহাম্মদ রোকনুজ্জামান এ রায় দেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- পীরগাছা উপজেলার তাম্বুলপুর ইউনিয়নের পরান গ্রামের আবুল কালামের ছেলে রাসেল মিয়া (১৯) এবং ওই গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে সালাউদ্দিন তালুদ (২০)। এর মধ্যে রাসেল আদালতে উপস্থিত থাকলেও সালাউদ্দিন পলাতক। এছাড়া এ মামলায় চার আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

মামলা ও আদালত সূত্রে জানা যায়, পরান গ্রামের আব্দুর রহিমের শিশুকন্যা স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্রী ঘটনার দিন ২০১৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর বিকেলে বাড়ির সামনে রাস্তায় প্রতিবশী শিশুদের সঙ্গে খেলছিল। এ সময় সেখান থেকে তাকে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখা হয়। এরপর রিয়ার বাবার কাছে ফোনকলে চার লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে দুর্বৃত্তরা।

এদিকে, মেয়েকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন রিয়ার বাবা আব্দুর রহিম। পরে ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বর ৬ জনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় ৩/৪ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন রিয়ার বাবা।

মামলার সূত্র ধরে ২০১৪ সালের ১৯ জানুয়ারি রাসেলকে গ্রেফতারসহ তার কাছ থেকে একটি মোবাইলফোন উদ্ধার করে পুলিশ। পরে রাসেলের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সালাউদ্দিনকে গ্রেফতারসহ মুক্তিপণ চাওয়ার জন্য ব্যবহৃত মোবাইলফোন ও জুসের বোতল উদ্ধার করা হয় এবং রাসেল তালুকদারের বাড়ি সংলগ্ন আব্দুল হক মিস্ত্রীর টয়লেট থেকে রিয়ার বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।  

গ্রেফতারদের মধ্যে সালাউদ্দিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন, অর্থের লোভে রিয়াকে অপহরণ করে জুসের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানো হয়। এরপর শ্বাসরোধে হত্যার করে তার মরদেহ টয়লেটে গুম করা হয়। তবে, মামলার এজাহারে রাসেল মিয়া ও সালাউদ্দিনের নাম না থাকায় তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ২২ জুন ওই দুইজনসহ ছয়জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সাইদুর রহমান। সাত বছরের বেশি সময় ধরে মামলার বিচারকাজ চলাকালে ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে মঙ্গলবার এর রায় ঘোষণা করেন বিচারক।

রায়ে এজাহারনামীয় আসামিদের সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় তাদের অব্যাহতি দিয়ে মিথ্যা মামলা দায়েরের জন্য বাদীকে ভর্ৎসনা করেন বিচারক।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) জাহাঙ্গীর হোসেন তুহিন রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করলেও বাদীর সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে খালাসপ্রাপ্তদের বিষয়ে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা জানান।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০২২
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।