ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পিকে হালদারের ঘনিষ্ঠ প্রিতিশের নামে দুদকের মামলা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৪৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১, ২০২২
পিকে হালদারের ঘনিষ্ঠ প্রিতিশের নামে দুদকের মামলা

ঢাকা: প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ভারতের কারাগারে আটক প্রশান্ত কুমার হালদারের (পিকে হালদার) আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠ সহযোগী আনান কেমিক্যালের পরিচালক প্রিতিশ কুমার হালদারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) বিকেলে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ মামলাটি দায়ের করেন কমিশনের উপ পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান।

বাংলানিউজকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন দুদকের তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

মামলার এজাহারে বলা হয়, জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ চার কোটি ৮৪ লাখ ১৭ হাজার টাকার সম্পদ অর্জন করেন এবং অবৈধ সম্পদ নিজ ভোগ দখলে রাখেন। এছাড়া  নির্ধারিত সময়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে তার নামে জারি করা সম্পদ বিবরণী দাখিল করেননি।

এজাহারে আরও বলা হয়, অসৎ উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হওয়ার পরেও নির্দিষ্ট ছকে সম্পদ বিবরণী দুর্নীতি দমন কমিশনে জমা না দেওয়ায় তিনি দুদক আইনের ২০০৪ এর ২৬ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। এছাড়া তার অর্জিত সম্পদ যা জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসামঞ্জস্য যা রেকর্ডপত্রে প্রমাণিত হয়েছে।  

গত ১৪ মে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার অশোক নগরের একটি বাড়ি থেকে পি কে হালদার ও তার পাঁচ সহযোগীকে গ্রেফতার করে ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) ইতোমধ্যে পিকে হালদার ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে মোট ৪৪টি মামলা দায়ের করেছে। এছাড়া পিকে হালদার সংশ্লিষ্ট অন্তত ১৫ জনকে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বিভিন্ন হিসাবে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের কথা বলা হলেও দুদকের কাছে দেওয়া বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের তথ্য থেকে জানা যায়, চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশান্ত কুমার হালদার সরিয়েছেন ১০ হাজার ২০০ কোটি টাকা।  

বিএফইইউর তথ্যমতে, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড থেকে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড থেকে ৩ হাজার কোটি টাকা, ফাস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড (এফএএস) থেকে ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা এবং রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেড থেকে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা সরান পি কে হালদার চক্র।

পি কে হালদারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ১৫ জনকে এখন পর্যন্ত দুদকের হাতে গ্রেফতার হয়েছে। চলতি বছরে ৪ জানুয়ারি দুদকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পি কে হালদারের অন্যতম সহযোগী শংখ বেপারিকে গ্রেফতার করে দুদক। দুদকের অভিযোগে বলা হয়, পি কে হালদারের সম্পদ বিভিন্নভাবে বিভিন্ন দিকে গেছে, সেখানে তিনি সহায়তা করেছেন।
এছাড়া তার দখলে ফ্ল্যাট পাওয়া গেছে। এটা পি কে হালদারের অর্থে কেনা হয়েছে বলে প্রমাণ পেয়েছে দুদক।

দুদকের পক্ষ থেকে কয়েক দফায় মোট ১২২ জনের বিদেশ যাত্রায় যে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়, সেই তালিকায় নাম ছিল ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সাবেক এমডি রাশেদুল হক ও পিপলস লিজিংয়ের সাবেক চেয়ারম্যান উজ্জ্বল কুমার নন্দীরও। দুদকের ডাকে জিজ্ঞাসাবাদে হাজির হলে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের এ বছরে ২১ জানুয়ারি গ্রেফতার  করে দুদক।

বাংলাদেশ সময়: ২২৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০২২
এসআর/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।