রাজশাহী: মহাসড়কে থ্রি-হুইলার বন্ধসহ ১০ দফা দাবিতে রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে পরিবহন ধর্মঘট। বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) ভোর ৬টা থেকে রাজশাহী থেকে দূরপাল্লা বা আন্তঃজেলা রুটের কোনো বাস ছাড়েনি।
আর এতে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। দুদিন থেকে গন্তব্যে যেতে নানান ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। বিকল্প যানবাহনে করে গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দিলেও এর জন্য গুণতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া।
রাজশাহী মহানগরীর শিরোইল বাসস্ট্যান্ড, ভদ্রা বাসস্ট্যান্ড, গোরহাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড, বিন্দুর মোড় বাসস্টপেজ ও বিলশিমলা বাসস্টপেজে গিয়ে দেখা যায়, পরিবহন ধর্মঘটের কারণে সাধারণ যাত্রীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে বিকল্প যানবাহনের জন্য অপেক্ষা করছেন। ক্লান্ত হয়ে অনেকে রাস্তার পাশেই শুয়ে পড়ছেন। কেউ কেউ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা করেই দূর গন্তব্যের উদ্দেশে পাড়ি দিচ্ছেন। তবে এর জন্য যাত্রীদের নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে দুই থেকে তিনগুণ ভাড়া গুণতে হচ্ছে। তারা অবিলম্বে এ পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহারের দাবি জানান।
তবে পরিবহন নেতাদের দাবি, মহাসড়কে থ্রি-হুইলার ও পুলিশ হয়রানি বন্ধে বারবার বলা হলেও সরকার পক্ষ থেকে কোনো সাড়া মেলেনি। তাই সেবামূলক পেশা হলেও দাবি আদায়ে তারা ধর্মঘটে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
রাজশাহী বিভাগীয় পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি সাফকাত মঞ্জুর বাংলানিউজকে বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কে থ্রি-হুইলার চলাচল করছে। এগুলো বন্ধসহ ১০ দাবি রয়েছে। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
তবে বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, আগামী শনিবারের গণসমাবেশে বাধা দিতেই এ পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। আর কেবল তাই নয়, বিকল্প পরিবহনে বিভিন্ন জেলা থেকে নেতাকর্মীরা এলেও পথে পথে গাড়িতে তল্লাশি করছে পুলিশ। রাস্তায় গাড়ি আটকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।
রাজশাহী বিভাগীয় গণসমাবেশের সমন্বয়ক বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু বাংলানিউজকে বলেন, আগামী ৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় গণসমাবেশ বাধাগ্রস্ত করতেই এ পরিবহন ধর্মঘট।
তিনি আরও বলেন, এরপরও রাজশাহী বিভাগের আট জেলা থেকেই তাদের নেতাকর্মীরা বিকল্প পরিবহনে রাজশাহী আসছেন। সরকার যতভাবেই চেষ্টা করুক তাদের গণসমাবেশে জনস্রোত নামবেই। শত বাধা উপেক্ষা করে বিএনপি নেতাকর্মীরা গত বুধবার রাত থেকেই রাজশাহীতে আসছেন। তারা গণসমাবেশস্থলের পাশে ঈদগাহ মাঠে এ শীতের মধ্যেও খোলা আকাশের নিচে রাত্রী যাপন করছেন।
তবে বৃহস্পতিবার রাত থেকে পুলিশ রাজশাহীর প্রবেশ পথে ঢুকতে বেশি বাধা দিচ্ছে পুলিশ। যানবাহন থেকে নামিয়ে দিয়ে নেতাকর্মীদের নিদারুণ কষ্ট দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন- এ বিএনপি নেতা।
রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় ১০ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট চলছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে এ ধর্মঘট শুরু হয়। এতে রাজশাহী থেকে আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এর আগে বুধবার (৩০ নভেম্বর) অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘট ডাক দেয় পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।
বাংলাদেশ সময়: ১১০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০২, ২০২২
এসএস/আরবি